
বাড়ির নামজারি করার জন্য হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে দেওয়া রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন জানাবেন বলে রায় প্রকাশের পরই জানিয়েছেন মওদুদ আহমদ। সেক্ষেত্রে ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন জানাতে হবে তাকে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন, রায়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজউকের আপিল মঞ্জুর করায় বাড়িটি মওদুদ আহমদের ভাইয়ের নামে নামজারি করতে হবে না। ফলে ভাইয়ের নামে দখল করা বাড়িটি মওদুদকে ছাড়তে হবে। এছাড়া দুর্নীতি মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়া বৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মওদুদ ও তার ভাই মনজুরের করা আপিল নিষ্পত্তি করে দেওয়ায় বিচারিক আদালতে মামলাটি চলবে না।
এদিকে মঙ্গলবার রায় দেওয়ার সময় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সাহা জানিয়েছিলেন, এখন থেকে অপেক্ষমান থাকা (সিএভি) মামলার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিও রায়ের দিনই প্রকাশিত হবে। সে অনুসারে এটিও রায়ের দিন রাতেই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
নামজারি
এক আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১০ সালের ১২ আগস্ট ওই বাড়িটি মনজুর আহমদের নামে মিউটেশন করার জন্য হাইকোর্ট রায় দেন।
রাজউক এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করে ২০১১ সালের ০৩ ফেব্রুয়ারি। ২০১৪ সালের ০৯ মার্চ আপিল বিভাগ রাজউককে আপিলের অনুমতি দেন। এরপর চলতি বছর এ মামলার শুনানি শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন।
দুদকের মামলা
২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাড়িটি নিয়ে দুদকের উপ-পরিচালক হারুনুর রশীদ রাজধানীর গুলশান থানায় মওদুদ আহমদ ও তার ভাই মনজুর আহমদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
২০১৪ সালের ১৪ জুন এ মামলায় অভিযোগ আমলে নেন বিচারিক আদালত। এর বিরুদ্ধে তাদের আবেদন গত বছরের ২৩ জুন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন মওদুদ আহমদ। এ আবেদনের শুনানি শেষ হওয়ার পর রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন আপিল বিভাগ।
দুদকের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘বাড়িটির প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির (রাজউক) কাছ থেকে এক বিঘা ১৩ কাঠার এ বাড়ির মালিকানা পান এহসান। ১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্রে এহসানের পাশাপাশি তার স্ত্রী অস্ট্রিয় নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামও অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন এহসান। তারা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়।
এরপর ১৯৭৩ সালের ০২ আগস্ট মওদুদ তার ইংল্যান্ড প্রবাসী ভাই মনজুরের নামে একটি ভুয়া আমমোক্তারনামা তৈরি করে বাড়িটি সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ নেন বলে মামলায় অভিযোগ করে দুদক।
আদালতে মওদুদ ও তার ভাই মনজুর আহমদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল প্রয়াত মাহমুদুল ইসলাম, আজমালুল হোসেন কিউসি, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও এ জে মোহাম্মদ আলী।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।