Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

62খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১০ আগস্ট ২০১৬: আলিফ হোসেন তানোর : রাজশাহীর অঞ্চলে রাজনীতির মাঠে দীর্ঘদিন পর ফের আলোচনায় উঠে এসেছে সাবেক মন্ত্রী ও সাংসদ ব্যারিস্টার আমিনুল হকের নাম। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ব্যারিস্টার আমিনুল হককে ভাইস-চেয়ারম্যান করায় এই আলোচনার সুত্রপাত। জানা গেছে, দলমত নির্বিশেষে সারাদেশের মানুষ যখন জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন, ঠিক সেই মুহুর্তে জঙ্গিবাদের মদদদাতা হিসেবে পরিচিত ব্যারিস্টার আমিনুল হককে বিএনপির কেন্দ্রিীয় কমিটিতে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদ’ ভাইস-চেয়ারম্যান করা হয়েছে। বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে তিনি একাধিকবার এমপি ও মন্ত্রী হয়েছেন, অথচ প্রায় কুড়ি বছর যে মানুষটি তানোর-গোদাগাড়ীর বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন, রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ভাবে বিএনপিতে যার তেমন কোনো দৃশ্যমান অবদান নেই,যার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচারসহ একাধিক মামলা রয়েছে, যিনি আগামিতে সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে, যিনি দলের দূর্দীনে নেতাকর্মীদের বিপদের মূখে রেখে বিদেশে গিয়ে আতœগোপণে ছিলেন সেই ব্যক্তিকে ভাইসচেয়ারম্যান করা হয়েছে। অপরদিকে রাজশাহী অঞ্চলে বিএনপির দীর্ঘদিনের কান্ডারি রাজশাহী জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক এমপি’ ও কেন্দ্রের বিশেষ সম্পাদক এ্যাডঃ নাদিম মোস্তফা, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনু এবং বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক সাজেদুর রহমান মার্কনীর মতো ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের ছুড়ে ফেলা হয়েছে। ফলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা নিয়ে রাজশাহী অঞ্চলে বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মনে নানা প্রশ্ন উঠেছে, বিরাজ করছে হতাশা ও দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। রাজশাহী ছাড়াও দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ পরিচিত একটি নাম ব্যারিষ্টার আমিনুল হক। কারণ আমিনুল হক ছিলেন, চারদলীয় জোট সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী। রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁর ইতিবাচক দিক থাকলেও নেতিবাচক প্রভাবও কম নয়। দেশে ওয়ান ইলেভেনের পর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বিএনপির এই রাজনৈতিক নেতার নামে জঙ্গী মদদদানসহ একাধিক মামলা দায়ের হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে তিনি দীর্ঘদিন এলাকায় ছিলেন অনুপস্থিত। বিগত দিনে আন্দোলন-সংগ্রাম ও দুর্দীনে দলের তেমন কাজে না আসলেও স¤প্রতি ব্যারিস্টার আমিনুল হককে কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভাইসচেয়ারম্যান করা হয়েছে। প্রঙ্গগত, বিগত ১৯৯১ সালে রাজশাহী-১ আসনে ব্যারিস্টার আমিনুল হক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বিএনপি সরকারের সংস্থাপন প্রতিমন্ত্রী হন। ১৯৯৬ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের ডাক ও টেলিযোগযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। কিšত্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে জঙ্গীবাদে মদদদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে ব্যারিস্টার আমিনুল হকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হলে তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে গিয়ে আতœগোপনে থাকেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত ২০০৪ সালের দিকে রাজশাহী অঞ্চলের বিএনপির প্রভাবশালী এক নেতার সঙ্গে চরমপন্থী বা সর্বহারাদের দ্বন্দ্ব দেখা দিলে ওই নেতার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় সর্বহারারা। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের তত্তাবধায়নে সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক, সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী রহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও সাবেক গৃহায়ন-গনপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবির সর্বহারা দমনের নামে শায়েখ আব্দুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই নেতৃত্বে জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ ‘জেএমবি’ এর আবির্ভাব ঘটায়। এ সময় জেএমবি ক্যাডারা প্রকাশ্য পুলিশ পাহারায় অস্ত্র উচিয়ে রাজশাহী শহরে মহড়া দিয়ে এলাকা দাপিয়ে বেড়ায়। এদিকে ব্যারিস্টার আমিনুল হককে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভাইসচেয়ারম্যান করায় রাজশাহী অঞ্চলের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যারিস্টার আমিনুল হককে নিয়ে ফের আলোচনার ঝড় উঠেছে। এব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও মুঠোফোন বন্ধ থাকায় ব্যারিস্টার আমিনুল হকের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে রাজশাহী জেলা বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক সাজেদুর রহমান মার্কনী বলেন,ব্যারিস্টার আমিনুল হকের মতো বির্তকিত ব্যক্তিকে দলের এমন গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়ায় দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, এসব কারণে তৃণমূলে নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।