খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১২ আগস্ট ২০১৬ : আমাদের শরীরকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে ব্রেন বা মস্তিস্ক। আমাদের শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই মস্তিষ্কের ওপর নির্ভরশীল। ব্রেন কার্যক্ষম বা সতেজ থাকলে শরীর সুস্থ থাকবে।
একটু বয়স হলেই আমাদের মধ্যে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। এটি কারো অল্প বয়সেই শুরু হয়ে যায়। কারো আবার বৃদ্ধ বয়সেও স্মৃতিশক্তি প্রখর থাকে। মস্তিষ্কের কোষগুলো বুড়িয়ে যাওয়া শুরু করলেই কমতে থাকে স্মৃতিশক্তি।
এছাড়া আমাদের সামান্য কিছু ভুলে মস্তিষ্ক অসুস্থ হতে পারে। দেহের সুস্থতার জন্য আমাদের ব্রেনকে সতেজ ও সজীব রাখা জরুরি। কিভাবে মস্তিষ্কের কোষ সজিব রাখবেন তার উপায় আজ বিডিলাইভ পাঠকদের জন্য দেয়া হলো।
খাদ্য তালিকায় রাখুন জাম :
আজ থেকেই খাবারের তালিকায় জায়গা দিন জাম ও স্ট্রবেরিকে। জামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা ফ্ল্যাভানওয়েডস মস্তিষ্কের কোষগুলোকে রক্ষা করে। ফলে ভুলে যাওয়ার সমস্যা থেকে রেহাই মেলে।
ঘরের কাজ করুন :
সারাদিন শুয়ে, বসে কাটাবেন না। এতে মস্তিষ্কের সতেজতা চলে যায়। তাই ঘরের ছোটখাটো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। যেমন- ঘর গোছানো, রান্নাবান্না করা, বাসন ধোয়া ইত্যাদি। তাস খেলেও কাটাতে পারেন অবসর সময়। মস্তিষ্ক সতেজ থাকলে অ্যালজ়াইমারের আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়।
নতুন বিষয়ে মনোযোগ দিন :
নতুন কিছু করতে এবং শিখতে পারেন। যেমন ধরুন মাতৃভাষার সঙ্গে শিখে ফেললেন নতুন কোনো ভাষা। এতে অনেকটা সময়ও কেটে যাবে। মস্তিষ্কের কোষগুলো সতেজ থাকবে। সোজা কথায় মস্তিষ্ককে কাজে লাগান। নতুন গাড়িও দীর্ঘদিন ফেলে রাখলে তার কর্মক্ষমতা কমে যায়। তেমনি লোহার তৈরি হাতিয়ার দীর্ঘদিন ব্যবহার না করলে তাতে মরিচা ধরে যায়। এছাড়া করে ফেলতে পারেন সুন্দর একটি বাগান। যেখানে আপনি খানিকটা সময় ব্যয় করতে পারেন।
রাগ নিয়ন্ত্রনে রাখুন :
রাগ মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যতটা সম্ভব রাগ, পারিবারিক কলহ এড়িয়ে চলুন। এমন পরিস্থিতি দেখলে ওই স্থান থেকে প্রয়োজনে কিছু সময়ের জন্য বাইরে চলে যান।
ধর্মীয় আচার পালন :
ধর্মীয় বিভিন্ন রীতিনীতি পালনেও মস্তিষ্ক শীতল হয়। কর্মক্ষমতা বাড়ে। মুসলমানরা নামাজের সময় যখন সিজদায় যায় তখন মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। এতে স্মৃতিশক্তি ভালো থাকাসহ ব্রেইন স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। এছাড়া সকল ধর্মে মানুষ যখন সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করে একনিষ্ঠভাবে প্রার্থনা-পূজা-অর্চনা করে, তখন তা মেডিটেশনের কাজ করে। এতে মস্তিষ্ক শীতল হয় ও স্মৃতিশক্তি বাড়ে।
অবসর নিয়ে ভেবে নিন :
প্রতিদিন দিনশেষে সারাদিনে কী কী করেছেন তা ধারাবাহিকভাবে মনে করার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে এজন্য আঁধাঘণ্টার জন্য নিরিবিলি কোথাও চলে যান। এরপর ভাবুন। এটা প্রতিদিন করুন। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়বে।
নিয়মিত ব্যায়াম :
নিয়মিত ব্যায়াম দেহের পাশাপাশি মস্তিষ্ককেও সুস্থ রাখতে সক্ষম। মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের কোষ তৈরি কম হয় এবং মস্তিষ্কের আকার ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। নিয়মিত ব্যায়াম আমাদের দেহের রক্ত সঞ্চালণ বৃদ্ধি করে এবং একই সঙ্গে মস্তিষ্কে নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। এতে মস্তিষ্ক সুস্থ থাকে। তাই নিয়মিত শরীরচর্চা খুবই জরুরি। শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে ব্রেনকে সুস্থ রাখা প্রয়োজন।
সব অনিয়ম ত্যাগ করে নিয়মমাফিক জীবন যাপন করি। নিয়মতান্ত্রিক জীবন আচরণ আমাদের শরীর ও মনকে সতেজ রাখবে। তাই আর দেরি না করে আজ থেকেই ছোটখাটো বিষয়গুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন। সুন্দর জীবন গড়ে তুলুন।