খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১৪ আগস্ট ২০১৬: লুৎফর রহমান নরসিংদী : হিন্দু পুরোহিতের ছদ্মবেশ ধারনোপযোগী কাপড়-চোপড়, পরচুলা, গোঁফের চুল, জপমালাসহ মাহবুবুল আলম ও মোঃ মিজানুর রহমান নামে দুই যুবককে জঙ্গী সম্পৃক্ততা সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত শনিবার মধ্য রাতে নরসিংদী শহরের ভেলানগর মানিক রোড থেকে একটি ব্যাগসহ নরসিংদী মডেল থানা পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত মাহবুবুল আলম রাজনৈতিকভাবে ইসলামী ছাত্র শিবির, শিবপুর থানা শাখার সভাপতি এবং মোঃ মিজানুর রহমান ছাত্র শিবিরের সাথী। গতকাল রবিবার বেলা দুই টায় নরসিংদী পুলিশ অফিসে আয়োজিত এক সংক্ষিপ্ত সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার আমেনা বেগম এ তথ্য প্রদান করেছেন।
সম্মেলনে পুলিশ সুপার আমেনা বেগম জানিয়েছেন, শনিবার রাত সোয়া ১২ টায় নরসিংদী মডেল থানা পুলিশের একটি পেট্রল ট্রিম ভেলানর মানিক রোডে মাথায় পৌছে ব্যাগ হাতে দুই যুবককে দেখতে পায়। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাগের ভিতর তল্লাশী চালিয়ে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত, শিবিরের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের মোবাইল নম্বর, মাহবুবুল আলমের কারাবাশকালীন জিহাদী কথা বার্তা লিখা ২৮২ পৃষ্ঠা বিশিষ্ট এ্কটি ডায়েরী, একগোছা লম্বা পরচুলা, ৩টি চশমা, একটি চাপাতি, একটি সাদা রঙের ধুতি, একটি হালকা ঘিয়ে রঙের লুঙ্গী, একটি বড় সাড়ে পাঁচহাত লম্বা জপমালা। মুছ আকৃতির এক গোছা চুল খোজে যায়। এ অবস্থায় তাদেরকে গ্রেফতার করে আলামতগুলো জব্দ করে পুলিশ। পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামীদৃয় জানায় মাহবুবুল আলম শিবপুর থানা ছাত্র শিবিরের সভপতি, সে শিবপুর থানার খড়িয়া গ্রামের মোঃ হেলিমের পুত্র এবং মিজানুর রহমান ছাত্র শিবিরের সাথী, সে মনোহরদী উপজেলার শুকুন্দী গ্রামের বাদল মিয়ার পুত্র।
পুলিশ ধারনা করছে যে, উত্তরবঙ্গের চাপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, রংপুর, ঝিনাইদহ, পাবনা, পঞ্চগড়ের পুরোহিতদের হত্যাকান্ডের ঘটনায় জঙ্গী ও জামায়াত শিবিরের সম্পৃক্ত পাওয়া গেছে। মাহবুব আলম ও মিজানুর রহমান দুজনেই শিবির কর্মী হিসেবে তাদের সাথে সেসব জঙ্গীদের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। এর প্রকৃষ্ট প্রমান হচ্ছে পুরোহিতের ছদ্মবেশ ধারনোপযোগী বিভিন্ন উপকরণ। এছাড়া মাহবুবুর রহমান ২০১০ সালে একবার গ্রেফতার হয়েছিল। তারা ছদ্মবেশ ধারণ করে হিন্দু স¤প্রদায়ের মন্দির ও স্থাপনালয়ে নাশকতার চেষ্টাসহ পুরোহিত হত্যাকান্ড ঘটনার ঘটানোর চেষ্টা বা পরিকল্পনা ছিল বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে প্রমান পেয়েছে। তাদের সাথে আর কার কার সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং অন্যান্য জঙ্গীদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে কি না তা জানার জন্য পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এব্যাপারে ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধিন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে আসামীরা সাংবাদিকদেরকে বলেছে, তাদের সাথে চাপাতি ছিল না। পুরাহিতের পোশাক, পরচুলা, জপমালা, ইত্যাদি তারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ব্যবহার করে থাকে।