খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৭ আগস্ট ২০১৬: পারফরমেন্সের ঝলক না দেখিয়েও কিভাবে অলিম্পিকের মত বড় আসরের ফাইনালে উঠতে হয়, তা করে দেখালো সুইডেন নারী ফুটবল দল। অলিম্পিকের সেমিফাইনালে পেনাল্টি শ্যুট আউটে ব্রাজিলকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠে তারা। নির্ধারিত ৯০ এবং অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও গোল করতে পারেনি ব্রাজিল বা সুইডেন। এই ১২০ মিনিটে পারফরমেন্সের দিক দিয়ে সুইডেনের চেয়ে অনেকগুন এগিয়ে ছিলো ব্রাজিল। তারপরও গোলের স্বাদ নিতে পারেনি স্বাগতিকরা। ফলে ম্যাচটি গড়ায় পেনাল্টি শ্যুট আউটে। আর সেখানে জয়ের শেষ হাসি হাসে সুইডেন।
গ্রুপ পর্বেও মুখোমুখি হয়েছিলো ব্রাজিল ও সুইডেন। কারন ‘ই’ গ্রুপে ছিলো দু’দল। ঐ ম্যাচের ফলাফলের দিকে তাকালে দেখা যায়, ম্যাচে ৫-১ গোলে জিতেছিলো ব্রাজিল। তাই সেমিফাইনালে বাজি ধরেই বলা হয়েছিলো, এ ম্যাচে ফেভারিট ব্রাজিল। কিন্তু স্বাগতিক দশর্কদের বাজি ধরাকে ভুল প্রমানের সিদ্বান্ত নেয় সুইডেন।
ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে প্রায় ৭৮ হাজার দর্শকদের সামনে নিজেদের মেলে ধরে সুইডেন। তবে গোল করে নয়, ব্রাজিলের মুহুর্মুহু আক্রমন সামলে। কিন্তু তারপরও সুইডেন সীমানায় প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের পরীক্ষা নিয়েই গেছে ব্রাজিলের মেয়েরা। আক্রমনে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে সুইডেন ডিফেন্স ও গোলরক্ষককে। তারপরও কোন সাফল্য পায়নি ব্রাজিল। তাই প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশুন্যভাবে। অবশ্য ব্রাজিল যেভাবে আক্রমন করেছে, তাতে স্কোরলাইন ১০ বা ১৫-০ হলে অবাক হবার কিছুই থাকতো না।
প্রথমার্ধে গোল না পেয়েও হতাশ হয়নি ব্রাজিল। দ্বিতীয়ার্ধে সুইডেনকে আরও চেপে ধরে স্বাগতিকরা। তাতে এক মিনিটের জন্যও ভড়কে যায়নি সুইডিশ ডিফেন্স। দক্ষতার সাথে চাপ সামলিয়েছে তারা। তাতে এবারও সফল সুইডেন। এই অর্ধেও ব্রাজিলকে গোল বঞ্চিত রাখতে পেরেছে তারা। যে কারনে ৯০ মিনিট শেষে স্কোরলাইন ০-০।
ফলে ম্যাচটি গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে যেন আরও ভংকর রুপ ধারন করে ব্রাজিল। মধ্যমাঠ থেকে বল নিয়ে ডান-বাম-মাঝ দিয়ে গোলের জন্য আক্রমন শানায় ব্রাজিল। এরমধ্যে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে ফ্রি-কিক পায় ব্রাজিল। ঐ ফ্রি-কিকটি নেন স্বাগতিক অধিনায়ক মার্তা। কিন্তু ঐ ফ্রি-কিক থেকে কোন সাফল্য পায়নি ব্রাজিল। কারন দক্ষতার সাথেই ফ্রি-কিকটি রুখে দেন সুইডেনের গোলরক্ষক হেডবিগ।
এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি সময়েও ব্রাজিলের অধিনায়ক মার্তার বা-পায়ের শট দুর্দান্ত দক্ষতায় রুখে রুখে দেন হেডবিগ। ফলে সেমিফাইনালটি গড়ায় পেনাল্টিতে।
ম্যাচের ১২০ মিনিটে প্রায় অর্ধশতক আক্রমন করে গোল না পেলেও, পেনাল্টি শ্যুট আউটের প্রথমটিতে গোল পেয়ে যায় ব্রাজিল। গোলটি করেন মার্তা। ফলে ম্যাচে প্রথম এগিয়ে যায় ব্রাজিল। নিজেদের প্রথম শুটে গোল করে সুইডেনও। তবে দ্বিতীয় শটে দু’দলই গোল করতে ব্যর্থ হয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শটে গোল পায় দুদলই। পঞ্চম শটে মিডফিল্ডার আন্দ্রেসা গোল করতে ব্যর্থ হন। ফলে পঞ্চম শটে গোল পেলেই ফাইনালের টিকিট পেয়ে যাবে সুইডেন, এমন সমীকরনে গোল করে সুইডেনকে জয়ের আনন্দে ভাসান লিসা। ফলে ৪-৩ গোলে ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠে সুইডেন।