দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ সবচেয়ে বড় জলাভূমি বিশ্বের অন্যতম রামসার সাইট টাঙ্গুয়ার হাওরকে পর্যটক এলাকা হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের আয়োজনে টাঙ্গুয়ার হাওরের গোলাভারি পার্শ্ববতী রূপাবই বিলে ২ দিনব্যাপী জোৎস্না উৎসব শুরু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় এ উৎসবের উদ্বোধন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। ২ দিনব্যাপী উৎসবের প্রথম দিন হচ্ছে হাওরের রূপা ভুই বিলে। আজ শনিবার সকালে এই উৎসব স্থানান্তরিত হবে পাশের লাউড়েরগড়ের বারেকের টিলায়। উৎসবকে ঘিরে টাঙ্গুয়ার হাওরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছেন হাজারো উৎসুক দর্শক ও পর্যটকেরা। সুনামগঞ্জ জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলায় টাঙ্গুয়ার হাওড়ের অবস্থান। ছয়কুড়ি বিল, নয়কুড়ি কান্দার সমন্বয়ের এ হাওড়ের দৈর্ঘ্য ১১ এবং প্রস্থ ৭ কিলোমিটার। এই হাওড় এবং পার্শ্ববর্তী এলকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য পর্যটকদের পরিচয় করিয়ে দেবার লক্ষ্যে শুক্রবার ও শনিবার ২ দিনব্যাপী ব্যতিক্রমী জোৎস্না উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। হাওরের গোলাভারী এলাকা পার্শ্ববর্তী রূপাবই বিলের বিশাল জলরাশির মাঝখানে বাল্কহেডের উপর করা হয়েছে অনুষ্ঠান মঞ্চ। হাওড় পাড়ের দর্শকরা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন হাজরো উৎসুক দর্শক ও পর্যটকেরা। দর্শক ও পর্যটকরা নিজ নিজ ট্রলার-বাল্কহেড থেকেই অনুষ্ঠান উপভোগ করেছেন। দর্শকদের অনেকেই বলেছেন আমরা ঈদের ছুটি আনন্দে কাটাতে এসেছি। এখানকার প্রাকৃতিক রূপ সৌন্দর্যের পাশাপাশি বাড়তি আনন্দ পেয়েছি জোৎস্না উৎসব হওয়ায়। এ উপলক্ষে পুরো হাওর জুড়ে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এ ব্যাপারে দর্শক এবং পর্যটকদের কেউ কেউ টাঙ্গুয়ার হাওড়ে এমন আয়োজনে পরিবেশ-প্রতিবেশের ক্ষতির আশংকাও করেছেন।
আয়োজক কমিটি, পুলিশ সুপার এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য অবশ্য বলেছেন,‘আমাদের উদ্দেশ্য মহৎ, পরিবেশ ও প্রতিবেশের সুরক্ষা রেখেই এই আয়োজন হয়েছে’।
এ ব্যাপারে উৎসবের উদ্যেক্তা ও তাহিরপুর উপজেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান আমাদেও তাহিরপুর ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যেখানে অবস্থিত বিশ্বের দ্বিতীয় রামসার সাইট হিসেবে খ্যাত এই টাঙ্গুয়ার হাওর কে দেশে বিদেশে জানান দেয়ার জন্য মূলত জ্যোৎস্না উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন এখানকার জীববৈচিত্র রক্ষা করার জন্য টাঙ্গুয়ার হাওরকে রক্ষার মাধ্যমে দেশী বিদেশী পর্যটকদেও আগমন বাড়ানোর জন্য এই উদ্যোগ।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মোঃ হারুন অর রশিদ বলেন টাঙ্গুয়ার হাওরকে কেন্দ্র কওে যাতে পর্যটকদের আগমন দিন দিন বাড়াতে পারে সেজন্য এই আয়োজন। তিনি বলেন এখানে যাতে করে পরিবেশের কোন প্রকার ক্ষতি না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে সকলের প্রতি আহবান জানান পাশাপাশি এখানে ভ্রমণ পিপাসুদের নিশ্চিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য হাওর এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ-১আসনের সংসদ সদস্য ইজ্ঞিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এইটাঙ্গুয়ার হাওর নিয়ে বৃহত্তম পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন। কারণ এই হাওর এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বৃহত্তম একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর একটি পর্যটন কে্েন্দ্রর অপার সম্ভাবনাময় হাওর। তাই ইে হাওরের জীববৈচিত্র সংরক্ষণ সহ পর্যটকদেও আগমন ঘটাতে আজকের আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এমন উৎসব প্রতিবছরেই হোক এমনটিই চান এলাকাবাসী, তবে এটি যেন হাওরের জীব-বৈচিত্রের উপর নেতিবাচক কোন প্রভাব না পড়ে সেই দাবি জানিয়েছেন টাঙ্গুয়ার হাওড় পাড়ের বাসিন্দাসহ সুনামগঞ্জ জেলাবাসী ।