খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ : সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার শহীদগঞ্জ দাক্ষিনপাড়া মহল্লায় মেয়েকে হত্যা করে বাবা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহতরা হলেন, মুদি দোকানদার সেলিম রেজা(৩৮) ও মেয়ে স্থানীয় একটি কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিশু শ্রেণির ছাত্রী সোহা মনি(০৭)। বৃহস্পতিবার রাতের কোন এক সময় এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার দুপুরের দিকে পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ।
জানা যায়, ওই মহল্লার মৃত আব্দুল মজিদ সেখের ছেলে সেলিম রেজার(৩৮)সাথে গত ৯বছর পূর্বে শাহজাদপুরের হাজী আলী আজমের মেয়ে আনোয়ারা পারভীন রুমীর সাথে পারিবারিক প্রস্তাবের মাধ্যমে বিয়ে হয়। দু’বছর পরে তাদের কোল জুড়ে আসে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান সোহা মনি । ৪০দিন বয়সে ওই শিশু কন্যা সোহাকে রেখে পরকিয়ার টানে বাবার বাড়ি চলে যান রুমী। এনিয়ে সেলিম তার স্ত্রীকে ফিরে পেতে মামলাও করেন। যা এখনো চলমান রয়েছে। গত ২৮জুলাই রুমী স্বামীকে ডিভোর্স দিলে স্বামী সেলিম রেজা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
মৃত সেলিমের মা সেতারা বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সেলিম আমাকে ব্যথার ওষুধের কথা বলে কোকাকোলা পানিয়তে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান। পরে তার শিশু সন্তান সোহা মনিকেও ওই পানিয় খাওয়ান। কিছুক্ষণ পরে তিনি ঘুমিয়ে পড়লে সেলিম তার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করলে জেগে ওঠেন। এসময় মা সেতারা বেগম ছেলে সেলিমকে বালিশ হাতে দেখতে পান। পরে তিনি ঘুমের ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় আবারো ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল ৯টার দিকে ঘুম থেকে জেগে ওই ঘরের ধর্ণার সাথে ছেলেকে গলায় দঁড়ি পেচানো অবস্থায় ঝুলে থাকতে দেখে চিৎকার করেন। এসময় নিহতের ছোট ভাই মাহমুদুল আলম স¤্রাট পাশের ঘর থেকে এসে দঁড়ি কেটে লাশ নিচে নামান এবং মেয়ে সোহা মনিকে পাশের ঘর থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। এ ঘটনার পূর্বে সেলিম তার ব্যক্তিগত ডায়েরীতে লিখে যান ‘জীবনের কাছে হেরে গেলাম মা। তোমাকে তো আর নিয়ে যেতে পারলাম না, তাই সোহা মনিকে নিয়ে গেলাম।’ এঘটনায় ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- স্ত্রীর সাথে ডিভোর্স হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত ছিলেন সেলিম রেজা। এ কারণে তিনি মেয়েকে কোমল পানিয়ের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করেন এবং মা সেতারা বেগমকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তিনি আতœহত্যা করেন । শুক্রবার দুপুরে পুলিশ বাবা মেয়ের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
