খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৬: জান্নাতুল তোমার ভয় নেই।আর কেউ তোমাকে মারতে পারবেনা। এখন আমরা তোমার পাশে আছি।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নির্যাতিত গৃহকর্মী জান্নাতুলকে দেখতে গিয়ে এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার দুপুর ৩.৪৫ মিনিটে জান্নাতুলের কক্ষে প্রবেশ করেন তিনি। সেখানে ১৫ মিনিট অবস্থান করে জান্নাতের খোঁজ খবর নেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বার্ন ইউনিটের প্রধান সামন্তলাল সেনসহ অন্য ডাক্তাররা।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের সামনে জান্নাতুলের মা ফিরোজা বেগম বলেন, ‘স্যার আমি আর কিছু চাইনা, আপনাদের কাছে বিচার চাই। প্রয়োজনে আমি আমার মেয়েকে নিয়ে রাস্তায় থাকব। আর কোনোদিন কারো বাসায় কাজে দিব না।’
ঔধহহধঃঁষ-ঃড়ৎঃঁৎব নফহবংি২৪ঁং.পড়স নধহমষধ
কমিশনের চেয়ারম্যান ফিরোজা বেগমকে আশ্বস্ত করে বলেন, ওকে যারা মেরেছে তাদের বিচার হবে। আমরা এ মামলাটি ফলো করব, চোখে চোখে রাখব। পুলিশকে বলে দেব যেন জান্নাতের পরিবারকে গ্রামে গেলে কেউ হুমকি ধামকি দিতে না পারে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
তিনি বলেন, আমি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই। আদালতও যেন এ ঘটনার বিচার দ্রুততার সাথে করে দৃষ্টান্ত রাখেন।
কাজী রিয়াজুল হক আরো বলেন, রাষ্ট্র যদি চার লাখের মতো শিশু গৃহকর্মীকে সাহায্য করে তাহলে এদের আর কারো বাসায় কাজ করত হয় না।
পরে জান্নাতের কক্ষ থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন কমিশন চেয়ারম্যান। এ সময় তিনি বলেন, মানুষ কতোটা অমানুষ হলে এরকম কাজ করতে পারে তা জান্নাতুলকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না। মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে, উন্নত হচ্ছে। তাই আমরা মনে করতাম এর মাধ্যমে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু আসলে সেটা হচ্ছে না।
জান্নাতুল গাজীপুরের জয়দেবপুরে ওমর ফারুক- মণি দম্পত্তির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত। সেখানে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয় সে। গুরুতর আহত হয়ে গেলে জান্নাতুলকে ওই বাসায় কাজের জন্য যোগাযোগ করে দেওয়া মোস্তফা সরদার চাঁদপুরের হাইমচরে বাড়ির কাছে জান্নাতুলকে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয় লোকজন মোস্তফা সরদারকে আটক করে। ঘটনার দিন ১৫ সেপ্টেম্বর জান্নাতুলকে প্রথমে হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেকে আনা হয়।