Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

aleagueখোলা বাজার২৪ মঙ্গলবার, ১৮অক্টোবর, ২০১৬: দেশি-বিদেশি বিভিন্ন রাজনীতিবিদ ও দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনের মিলনমেলা বসবে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনস্থল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এ লক্ষ্যে দলটির ২০তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত অভ্যর্থনা উপকমিটির সদস্যরা প্রায় একমাস ধরে নিরলস শ্রম দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবরটি জানা গেছে।

অভ্যর্থনা উপকমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অসাম্প্রদায়িক মননে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের প্রথম দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। একমাত্র জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ দুই নেতা; সভাপতি/চেয়ারম্যান এবং সাধারণ সম্পাদক/মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি চেয়াপারসন খালেদা জিয়া এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সম্মেলনের সম্মানিত অতিথি হিসেবে দাওয়াতপত্র পাঠানো হয়েছে। একইভাবে জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাদস) হাসানুল হক ইনু এবং শরিফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন দুই অংশ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল, জাতীয় পার্টি (জেপি), গণতান্ত্রিক দল, গণআজাদী লীগ, ত্বরিকত ফেডারেশন, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিসহ (ন্যাপ) নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত প্রায় সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাই আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সম্মানিত অতিথি হিসেবে দাওয়াত পেয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভ্যর্থনা উপকমিটির আহ্বায়ক আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দলের জাতীয় সম্মেলনে ১৪ দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। বিএনপিকেও দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই, তারা আসুক। এসে আমাদের বিজয়ের কথা এবং তাদের চক্রান্তের কথা নিজেরাই শুনুক।

দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, বাংলাদেশের বাইরের প্রায় ১৫টি দেশের একাধিক রাজনৈতিক দলকে আওয়াম লীগের জাতীয় সম্মেলনে দাওয়াত করা হয়েছে। এর মধ্যে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, বেলজিয়াম, জাপান, রাশিয়া, চিন, ক্রোয়েশিয়া, মালয়েশিয়া, জার্মানি উল্লেখযোগ্য। ভারতের শুধু কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক দলগুলোকেই নয় প্রাদেশিক শক্তিশালী দলগুলোকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রায় প্রতিটি দেশের একের অধিক রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কোনো কারণে দলগুলোর শীর্ষ নেতারা আসতে না পারলে তাদের প্রতিনিধি পাঠানোর বিষয়েও উল্লেখ করা হয়েছে আমন্ত্রণপত্রে।

সংশ্লিষ্ট উপকমিটির সূত্রে আরও জানা গেছে, আমন্ত্রিণ বিদেশি অতিথিদের দেখাশোনার জন্য তাদের সঙ্গ দেওয়ার জন্যও সম্মেলন উপলক্ষে ‘হোস্ট অফিসার’ নিয়োগ করবে অভ্যর্থনা উপকমিটি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক এবং সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগের নেতাদের মধ্যে যারা একাধিক ভাষায় পারদর্শী তাদের এই পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। বিদেশি অতিথিরা বিমান থেকে নামার পরপরই সদস্য সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে তাদের সঙ্গে যুক্ত হবেন এক বা একাধিক হোস্ট অফিসার। সম্মেলন উপলক্ষে বিদেশি রাজনীতিকরা যে কয়দিন বাংলাদেশে থাকবেন তাদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসেবে থাকবেন হোস্ট অফিসাররা। এ ছাড়া দেশের মধ্যকার আমন্ত্রিত অতিথিদের সম্মেলনের দিনে মঞ্চে দেখভাল। করবেন অভ্যর্থনা উপকমিটির সদস্যরা।

গত রোববার অভ্যর্থনা উপকমিটির সদস্য সচিব এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. দীপু মনির জাতীয় সংসদ ভবনের কার্যালয়ে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ব্যাপক ব্যস্ত সময় পার করছেন উপকমিটির সদস্যরা। মুক্তিযোদ্ধা, কবি-সাহিত্যিক, শিক্ষক-চিকিৎসক-প্রকৌশলী, রাজনীতিবিদি-জনপ্রতিনিধি, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, ক্রীড়া ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের তালিকা বারবার যাচাই-বাছাই করে তাদের ঠিকানায় আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হচ্ছে। দেশের ভেতরের অতিথিদের সঙ্গেই শুধু নয়, দেশের বাইরের অতিথিদের সঙ্গেও নিরবচ্ছিন্নভাবে মুঠোফোনে-ইমেইলে যোগাযোগ করতে দেখা গেছে দীপু মনি ও তার সহযোগীদের। বেশ কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতার দেখাও মেলে দীপু মনির অফিসে, যারা সম্মেলনের দাওয়াতপত্র পাঠানোর কাজে সার্বিক সহযোগিতা করছেন অভ্যর্থনা উপকমিটিকে।

ডা. দীপু মনি আমাদের সময়কে বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার স্বনামধন্য প্রায় দেড় হাজার বিশিষ্ট নাগরিককে আমরা সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। বিদেশি অতিথিদের অনেকেই ইতোমধ্যে আসবেন বলে নিশ্চিত করেছেন। বাকিরা সম্মেলনের আগে নিশ্চিত করবেন বলে আমরা আশা করছি।

দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও পেয়েছেন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে যোগদানের দাওয়াত। বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, হুইপগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলররাও আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের দাওয়াত পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি আমলাসহ নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে দাওয়াতের আওতায় রাখা হয়নি।