খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৬:
পাকিস্তানের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কোয়েটায় একটি পুলিশ প্রশিক্ষণ কলেজে সন্ত্রাসী হামলায় ৫৯ জন নিহতের ঘটনার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
হামলায় নিহতদের অধিকাংশই নতুন নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্য ও নিরাপত্তা কর্মী।
সোমবার রাত ১১টা ১০ মিনিটের দিকে কোয়েটা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে বেলুচিস্তান পুলিশ কলেজে এই হামলার ঘটনায় আরও অন্তত ১২০ জন গুরুতর আহত হয়েছে, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও ডনের।
মঙ্গলবার আইএস সংশ্লিষ্ট আমাক নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়, “তিনজন আইএস যোদ্ধা প্রথমে মেশিনগান ও গ্রেনেড ব্যবহার করেছে এবং তারপর ভীড়ের মধ্যে নিজেদের উড়িয়ে দিয়েছে।”
যদিও এর আগে পাকিস্তানের কর্মকর্তারা হামলার পেছনে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-জাঙ্গভি থাকতে পারে বলে ধারণা করেছিলেন।
যোগাযোগে আড়ি পেতে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা বলেছিলেন, হামলাকারীরা লস্কর ই জাঙ্গভি গোষ্ঠীর উপদল আল আলিমির সদস্য। লস্কর ই জঙ্গভি, পাকিস্তান তালেবান নামে পরিচিত তেহরিক ই তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সঙ্গে সম্পর্কিত।
এ হামলা চলতি বছর পাকিস্তানে চালানো সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে জানিয়েছেন দেশটির উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা।
বেলুচিস্তান প্রাদেশিক সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মীর সরফরাজ বুগতি জানিয়েছেন, ভারী অস্ত্রে সজ্জিত তিনজন সুইসাইড বেল্টধারী সন্ত্রাসী ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একটি ডরমিটোরিতে হামলা চালায়।
তিনি বলেন, “ওয়াচ টাওয়ারের সেন্ট্রিকে তারা প্রথম গুলি করে মারে। এতে তারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির ভিতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।”
ডন জানিয়েছে, হামলার সময় সদ্য পুলিশে যোগ দেয়া প্রায় ৭০০ জন ক্যাডেট পুলিশ একাডেমিটিতে ছিলেন । ঘুমন্ত এসব তরুণ ঘটনার আকস্মিকতায় এদিক-সেদিক পালাতে শুরু করে। এ সময় দুই হামলাকারী আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিজেদের উড়িয়ে দিলে অধিকাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
তৃতীয় হামলাকারীকে পাকিস্তান ফ্রন্টিয়ার ক্রপসের (এফসি) জওয়ানরা গুলি করে হত্যা করে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক ক্যাডেট বলেন, “মুখ লুকানো ছদ্মবেশধারী তিন ব্যক্তিকে দেখতে পাই আমি। তাদের কাছে কালাশনিকোভ রাইফেল ছিল। তারা গুলি করতে করতে ডরমিটোরিতে ঢুকে পড়ে, তবে একটি দেওয়ালের ওপাশে ঝাঁপিয়ে পড়ে আমি রক্ষা পেয়েছি।”
মঙ্গলবার সকালে উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা নিহতের সংখ্যা ৫৯ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন।
বেলুচিস্তানে মোতায়েন আধাসামরিক বাহিনী এফসি-র প্রধান মেজর জেনারেল শের আফগান বলেছেন, “আমরা আসার পর প্রায় তিন ঘন্টার মধ্যে অভিযান শেষ হয়।”
অভিযানে অংশ নেওয়া সামরিক বাহিনীর সদস্যরা গুরুতর আহত হলেও পুলিশ একাডেমির কোনো ক্যাডেট গুরুতর আহত হননি বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, হামলাটি আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত হয় এবং হামলাকারী সন্ত্রাসীরা পরিচালনাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিল।