Wed. Jun 18th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

75খোলা বাজার২৪, বুধবার, ৯ নভেম্বর ২০১৬ : দীর্ঘদিনের আলাপ-আলোচনা, দরকষাকষির পর ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো একটি বৈশ্বিক জলবায়ু চুক্তিতে সই করার ব্যাপারে একমত হয়েছিলেন বিশ্বনেতারা। গত ৪ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে আইনি রূপ পেয়েছে সেই প্যারিস জলবায়ু চুক্তি। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধ করে পৃথিবীকে রক্ষা করার একটা দিশা পেয়েছে পুরো বিশ্ব। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় শঙ্কার মুখে পড়ে গেছে এই জলবায়ু চুক্তির ভবিষ্যৎ!
তেল, গ্যাস, কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে যে মাত্রাতিরিক্ত গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হচ্ছে, তার ফলে প্রতিমুহূর্তে বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা। গত তিন-চার বছরে দেখা গেছে রেকর্ড গড়া তাপমাত্রা। আর এটা যে মনুষ্য কর্মকাণ্ডের ফলেই হচ্ছে, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই বিজ্ঞানীদের। কিন্তু যিনি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর মানুষ হতে যাচ্ছেন, সেই ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিনিয়ত অস্বীকার করেছেন বিজ্ঞানীদের মতামত। যুক্তরাষ্ট্রের হবু প্রেসিডেন্টের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন একটা ‘ধাপ্পাবাজি’। যেটা চীনারা তৈরি করছে অর্থনৈতিক ফায়দা ওঠানোর জন্য।
জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে বিবেচিত হলেও ট্রাম্প এ ব্যাপারে নিয়েছেন পুরোপুরি বিপরীতধর্মী অবস্থান। বৈশ্বিকভাবে যেখানে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যাওয়ার চেষ্টা চলছে, সেখানে ট্রাম্প চাইছেন আরো বেশি করে কয়লা, তেল-গ্যাস ব্যবহার করতে। জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক গবেষণা, নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সব ধরনের বিনিয়োগ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছিলেন, সেগুলোও বাতিল করার হুমকি শোনা গেছে ট্রাম্পের মুখে। এমনকি প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর মতে, এই চুক্তি ‘একতরফা’ ও ‘যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর’।
প্রাক-শিল্পায়ন সময়ের তুলনায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার অঙ্গীকার করা হয়েছে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তার জন্য প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা উন্নত দেশগুলোর। চীনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী দেশ, যুক্তরাষ্ট্র যদি এই চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয় তাহলে কোনোমতেই পৌঁছানো যাবে না কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে। ১৯৯৭ সালের কিয়োটো প্রোটোকলের মতো অকার্যকর হয়ে যাবে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি।