খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৬:
বে আইনি যৌনাচার আর ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দণ্ডিত ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বার্লুসকোনি বলেছেন, তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তুলনা ‘অবশ্যম্ভাবী’।
ইতালির একটি পত্রিকাকে তিনি বলেছেন, আমেরিকানরা ট্রাম্পকে বেছে নিয়েছে; এখন তাকেও ‘কাজে ফিরতে দেওয়া’ উচিত।
এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে বিবিসি লিখেছে, তাদের দুজনেই রাজনীতিতে এসেছেন ব্যবসার জগৎ থেকে। বার্লুসকোনি একজন মিডিয়া ম্যাগনেট, আর ট্রাম্প আবাসন ব্যবসার টাইকুন।
আইনি ঝক্কি ট্রাম্পকেও পোহাতে হয়েছে, তবে বার্লুসকোনির মত তাকে অপরাধী সাব্যস্ত হতে হয়নি।
গত সপ্তাহের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ৭০ বছর বয়সী ট্রাম্প। রাজনীতিতে আসার বহু আগে থেকেই আমেরিকার সবচেয়ে রঙদার বিলিয়নেয়ার হিসেবে পরিচিত তিনি।
ফোর্বসের হিসাবে, ট্রাম্পের সম্পদের পরিমাণ ৩.৭ বিলিয়ন ডলার।
আর ৮০ বছর বয়সী বার্লুসকোনি ২০১৩ সালে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগে চার মেয়াদে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ফোর্বস বলছে, ৫.৯ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে বার্লুসকোনি পরিবারের হাতে।
ইতালির দৈনিক কুরিয়ার দেলা সেরা বার্লুসকোনির কাছে জানতে চেয়েছিল, ট্রাম্পের সঙ্গে কী কী মিল রয়েছে তার।
জবাবে বার্লুসকোনি বলেন, “তার সঙ্গে আমার কখনও দেখা হয়নি। উদ্েযাক্তা হিসেবে আমাদের দুজনের কাহিনীও অনেক আলাদা। কিন্তু আমাদের মধ্েয অবশ্যই কিছু মিল আছে।”
ইতালির সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী সেই ‘মিলগুলো’ বিশদ করেননি। তবে কোন কোন বিষয় তিনি বুঝিয়ে থাকতে পারেন, তার একটি তালিকা তৈরি করেছে বিবিসি।
কেশ থেকে ত্বক: কায়দা করে আঁচড়ে রাখা ট্রাম্পের মাথাঢাকা চুল বহু বছর ধরে সংবাদমাধ্যমে আলোচনার বিষয় হয়ে আছে। আর বর্লুসকোনি ২০০৪ সালে মাথায় ব্যান্ডানা বেঁধে প্রকাশ্েয এসে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন। পরে জানা গিয়েছিল তার হেয়ার ইমপ্ল্যান্টের কথা। দুজনের ক্ষেত্রেই শ্বেতাঙ্গ ত্বকের কমলা আভা যে কারও নজরে পড়বে।
যৌন জীবন: বার্লুসকোনির ‘সেক্স পার্টির’ অনেক গল্পই চালু আছে ইতালিতে। আদালতে তাকে দোষী সাব্যস্ত হতে হয়েছে অপরিণত বয়সী একজনের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে যৌনকর্মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায়। আর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণের অভিযোগ ভোটের প্রচারের সময় বেড়েছে কয়েকগুণ।
ভুলগুলো: প্রকাশ্েয এবং আড়ালে নারীদের নিয়ে করা বিভিন্ন মন্তব্য বার বার ট্রাম্পকে বেকায়দায় ফেলেছে। আর ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে নিয়ে এক মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছিলেন বার্লুসকোনি। তিনি ওবামাকে বলেছিলেন “ইয়াং, হ্যান্ডসাম অ্যান্ড ট্যানড।”
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের আগে ট্রাম্প আর বার্লুসকোনির মিলগুলো সোশাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছেন ইতালীয় রসিকজনরা। তারা এর নাম দিয়েছেন ‘ট্রম্পুসকোনি’।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য একভাবে ট্রাম্পকে অভিনন্দনই জানিয়েছেন বার্লুসকোনি। সেই সঙ্গে হিলারির পরাজয়ের কারণ সম্পর্কে নিজের ধারণার কথা তিনি সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছেন।
তার ভাষায়, পুরনো রাজনৈতিক ধারার ওপর বিরক্ত আমেরিকানদের ভোটে জয় পেয়েছেন ট্রাম্প।