Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৬:74
কর্মরত অবস্থায় কোনো শ্রমিক মারা গেলে তার পরিবার ৫ লাখ টাকা পাবে। এটি জানুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক।

বুধবার ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে নারী শ্রমিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
‘২০২০ সালের মধ্যে সব কর্মস্থল ও ট্রেড ইউনিয়নে এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত কর, নারী শ্রমিকের কণ্ঠের অঙ্গীকার, চাই সমতা ও মর্যাদার অধিকার’ এসব প্রতিপাদ্য নিয়ে এ সম্মেলনের আয়োজন করে নারী শ্রমিক কণ্ঠ।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আমরা একটি ফান্ডের ব্যবস্থা করেছি। গার্মেন্টসসহ সব রপ্তানি পণ্যের মূল্যের ০.৩ শতাংশ ব্যাংক থেকে কেটে রাখা হচ্ছে; যা শ্রমিকদের কল্যাণে শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটি অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে। ২০১৬ সালে ১ জুলাই থেকে এই ফান্ড কেটে রাখা হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত ১৭ কোটি টাকা এই ফান্ডে জমা হয়েছে। কোনো শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় মারা গেলে তার পরিবার এই ফান্ড থেকে তিন লাখ টাকা এবং ইনসুরেন্স থেকে আরো দুই লাখ টাকা পাবে; যা আগামী জানুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হবে।
তিনি আরো বলেন, কেউ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে তিনি চিকিৎসার জন্য পাবেন এক লাখ টাকা। মাতৃত্বকালীন সময়ে নারী শ্রমিক পাবেন ২৫ হাজার টাকা। কোনো শ্রমিকের সন্তান যদি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ও প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তাহলে তাকে নগদ তিন লাখ টাকা, কেউ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লে তাকে ৫০ হাজার টাকা সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া আরো বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার আশ্বাস দেন প্রতিমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে নারী ক্ষমতায়নের বিষয়ে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, এ সরকার আরো দু-এক টার্ম যদি ক্ষমতায় থাকে, তাহলে নারীর ক্ষমতায়নে আপনাদের খুব বেশি পরিশ্রম করতে হবে না। আমার মনে হয় আপনাদের আন্দোলন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই করছেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘নারীরা পুরুষের চেয়ে বেশি কাজ করলেও তাদের মূল্যায়ন নেই। কিন্তু এখন মূল্যায়ন না দিয়ে উপায় নেই। কারণ আপনারা জেগে উঠেছেন।’
বিভিন্ন গার্মেন্ট সেক্টরে যারা নারীনেত্রী তারা তাদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন না বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আপনারা যদি এগিয়ে আসেন তাহলে ট্রেড ইউনিয়নের বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা হবে।
নারী শ্রমিক কণ্ঠের আহ্বায়ক সংসদ সদস্য শিরিন আখতারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, এফইএস’র আবাসিক প্রতিনিধি ফ্রানজিসকা কর্ন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিভাস বি রেড্ডি, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, নারী শ্রমিক কণ্ঠের উপদেষ্টা ড. প্রতিমা পাল মজুমদার, সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ।
নারী শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি জাহানারা বেগম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সহ-মহিলাবিষয়ক সম্পাদক হামিদা খাতুন, জাতীয় নারী শ্রমিক জোটের সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমল, গার্মেন্টস কর্মচারী লীগের সভাপতি লিমা ফেরদৌস, জাতীয় গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদা আক্তার ও রংপুরের কৃষি শ্রমিক নেতা ভারতী কুজুর।
সম্মেলনে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন নারী শ্রমিক কণ্ঠের সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার। এ সময় তিনি ১০টি কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সম্মেলনে অংশ নেন সারাদেশ থেকে আসা শ্রমজীবী নারী, শ্রমিক আন্দোলনের সংগঠক, অধিকার কর্মী, শ্রমিক সংগঠন, বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।