Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭: 12ভূরি ভূরি পুলিশ আছে। এবং সেই পুলিশের ভুঁড়ি। তাই চোর পালালে ভুঁড়ি বাড়েই। এমন অভিযোগ গাদা গাদা। তা নিয়েই এ বার কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করলেন এক ব্যক্তি। আর হাইকোর্টও প্রশ্ন তুলল, ভুঁড়িধারী পুলিশ কী করে অপরাধীদের ধাওয়া করে ধরবে? কাজের অতিরিক্ত চাপেও পুলিশকে শারীরিকভাবে সক্ষম থাকতে হবে- মনে করছে আদালত।

হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে কমল দে নামে ওই ব্যক্তির দাবি, কলকাতা পুলিশের এক শ্রেণির কর্মী ভুঁড়ি থাকার কারণে শারীরিকভাবে সক্ষম নন। তাদের সক্ষম হওয়া দরকার বলে আদালতে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার ওই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে প্রশ্ন তুলেছেন, ভুঁড়িধারী পুলিশের পক্ষে শারীরিকভাবে সক্ষম থাকা যায় কি না। পুলিশের শারীরিক সক্ষমতা (ফিটনেস) ও সতর্কতা বজায় রাখতে কী কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে অথবা এ নিয়ে রাজ্য সরকারের কী নীতি রয়েছে- হলফনামা আকারে তা আদালতে পেশ করতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মাত্রে।
আদালতে আবেদনকারী কমলের বক্তব্য, কোথাও দেখা যাচ্ছে মোটাসোটা, ভুঁড়িধারী পুলিশকর্মী থানায় বসে মোবাইল ফোনে কথা বলছেন, কোথাও দেখা যাচ্ছে বসে বসে ঘুমোচ্ছেন। তার মতে, ভুঁড়ির জেরেই চোরের পিছনে ছুটতে হলে পুলিশের হা-ক্লান্ত দশা। আর চোর পগারপার! প্রমাণস্বরূপ এ দিন শুনানিতে বেশ কয়েকজন ভুঁড়িধারী পুলিশের ছবিও পেশ করেছেন কমলবাবু। তাদের কেউ অফিসার, কেউ বা কনস্টেবল। কলকাতার একটি থানার ওসি-র ছবি দেখিয়ে ওই ব্যক্তি দাবি করেছেন, ভুঁড়ি নিয়েই ওই অফিসার ২০১৫ সালে পুলিশ মেডেল পেয়েছেন।
কোর্টে এই মামলার আবেদনকারীর বক্তব্য, পুলিশের মতো শৃঙ্খলাপরায়ণ কর্মীদের শারীরিক সক্ষমতা কমে গেলে তাদের পক্ষে অপরাধীদের ধরা বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা অথবা নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। সেই কারণে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।
এ দিনের শুনানিতে সরকারি কৌঁসুলি তপন মুখোপাধ্যায় জানান, মোটা হয়ে যাওয়া বা ভুঁড়ি হওয়া শুধু এ রাজ্যের সমস্যা নয়, এটা এখন সারা পৃথিবীর সমস্যা। এটি এক ধরনের অসুস্থতা বলেও তপনবাবু কোর্টে জানান। তখনই বিচারপতি মাত্রে প্রশ্ন করেন, ‘‘ভুঁড়িধারী পুলিশ কী করে অপরাধীদের ধাওয়া করে ধরবে?’’
বস্তুত, ভুঁড়িধারী পুলিশ দেখলে তাকে ভুঁড়ি কমানোর পরামর্শ দিতেন রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পরলোকগত কংগ্রেস নেতা সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ও।
সাবেক এক পুলিশ কমিশনার জানান, সিদ্ধার্থবাবু মনে করতেন, পুলিশের চেহারা হবে ঋজু, চাবুকের মতো। সিদ্ধার্থবাবুকে অনেক বারই দেখা গেছে পরিচিত কোনো পুলিশ অফিসারের ভুঁড়িতে হাত বুলিয়ে হেসে তা কমাতে পরামর্শ দিচ্ছেন।