খােলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০১৭: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্রামীণ ফোনের লভ্যাংশের শতকরা ৩০ ভাগ গ্রামীণ ব্যাংককে না দিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রতারণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ ফোনের যখন অনুমতি দেয়া হয়, তখন শর্ত ছিলো লভ্যাংশের ৩০ ভাগ গ্রামীণ ব্যাংককে দেয়া হবে। কিন্তু তিনি গ্রামীণ ব্যাংকে কোন টাকাই রাখেননি। লভ্যাংশের শতকরা ৩০ ভাগ গ্রামীণ ব্যাংককে না দিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রতারণা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সদস্য এ কে এম মাঈদুল ইসলামের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ফোনের শেয়ার বিক্রি করে অধিকাংশ নিজের সম্পত্তি করে নিয়েছেন। আবার উনি নিজেও কর দেন না। তার ফিক্স ডিপোজিটে প্রচুর টাকা রয়েছে। মামলা করে দিয়েছেন তাই কর দিতে হয় না। তার এই টাকা কোথা থেকে এসেছে সেই হিসাবও তিনি দিতে পারেননি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ দিয়ে মানুষ সর্বশান্ত হয়েছেন। ব্যাংকের আইন অনুযায়ী কেউ ৬০ বছর বয়সের বেশি হলে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে থাকতে পারেন না। কিন্তু ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৭০ পেরিয়ে গেলেও এই পদ আঁকড়ে ধরে থাকেন। তাকে ওই পদ ছেড়ে অন্য কোন সম্মানজনক পদে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে তিনি আদালতে মামলা করে দেন। আইন তার পক্ষে না থাকায় তিনি মামলায় হেরে যান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মামলায় হেরে তিনি আমার বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে নানা প্রচার অপপ্রচার চালাতে থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারী ক্লিনটনকে দিয়ে পর্যন্ত আমাকে ফোন করান। শেষ পর্যন্ত হিলারী ক্লিনটনসহ অন্যান্যরা ষড়যন্ত্র করে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থ ফেরত নেয়া হয়। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। যেখানে এক পয়সাও ছাড় হয়নাই, সেখানে বলা হলো দুর্নীতির ষড়যন্ত্র হয়েছে।
তিনি বলেন, রাজনীতি মানুষের জন্য করি কোন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে টাকা সরিয়ে নিয়ে নিজের ভাগ্য গড়ার কোন ইচ্ছাই নেই। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করে বলেন, তিনি যে আমার বিরুদ্ধে লবিং করলেন, যখন তিনি আমার কাছ থেকে গ্রামীণ ফোনের অনুমোদন নিয়েছিলেন, তখন কি আমাকে এক কাপ চাও খাইয়েছেন? উল্টো চা খাইয়ে ব্যবসা দিয়েছিলাম। আমরা সেই মানসিকতার লোক।
শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন অপরিহার্য। পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক নিজে থেকে অর্থায়নের আগ্রহ দেখায়। কিন্তু সেখানে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা দিয়েসহ আমার নিজের বিরুদ্ধে, আমার ছেলে-মেয়ে, বোন, বোনের ছেলে-মেয়ের বিরুদ্ধেসহ তদন্তের নামে নাজেহাল করা হয়েছে। কিন্তু তারা দুর্নীতির কোন সূত্র বের করতে পারেনি।
তিনি বলেন, এরপর থেকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের কাজ হাতে নেই। এখন এই কাজ এগিয়ে চলছে।