খােলা বাজার২৪, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ : অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে দুই বছর হাই কোর্টে দ্বায়িত্ব পালনের পর স্থায়ী হিসেবে নিয়োগ না পাওয়ায় রিট আবেদন করেছেন বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলী।
তার পক্ষে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ রোববার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন জমা দেন।
নিয়োগ স্থায়ী না করার সিদ্ধান্ত ‘সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ ও মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থি’ হওয়ায় কেন তা বাতিল ও বে আইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে রুল চাওয়া হয়েছে এই রিট আবেদনে।
এছাড়া বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলীকে স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং তাকে স্থায়ী করার আগ পর্যন্ত হাই কোর্টে নতুন নিয়োগ বন্ধের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- তা জানতেও রুল চাওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, আই্ন সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে এই রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
মনজিল মোরসেদ জানান, দুপুরের পর বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
ফরিদ আহমদ শিবলীসহ ১০ জনকে ২০১৫ সালের ১২ ফেব্র“য়ারি দুই বছরের জন্য হাই কোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরদিন শপথ নেন তারা।
ওই দুই বছর মেয়াদ শেষে রাষ্ট্রপতি গত ৭ ফেব্র“য়ারি আটজনকে হাই কোর্টের বিচারক হিসেবে স্থায়ী নিয়োগ দেন। ওই দশজনের মধ্েয বিচারপতি জ্যোতির্ময় নারায়ণ দেব চৌধুরী গত ডিসেম্বরে মারা যান। আর মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী বাদ পড়েন।
মনজিল মোরসেদ বলেন, গত ৯ ফেব্র“য়ারি ‘স্থায়ী হল ৮ বিচারপতির নিয়োগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক যুগান্তর। সেখানে বলা হয়েছে, “সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন থেকে জানা গেছে, প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা নয়জনকেই স্থায়ী বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশ করেছিলেন। প্র্রধান বিচারপতির সুপারিশের পরও একজনকে স্থায়ী নিয়োগ থেকে বঞ্চিত করায় সুপ্রিমকোর্টের ‘১০ বিচারপতির মামলা’-সংক্রান্ত রায়ের লঙ্ঘন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।”
দশ বিচারপতির নিয়োগসংক্রান্ত মামলার বাদী অ্যাডভোকেট ইদ্রিসুর রহমানকে উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, “২০০৩ সালে ১০ জন বিচারপতিকে স্থায়ী নিয়োগ না দেওয়ায় মামলা করা হয়। ওই মামলায় সিদ্ধান্ত হয় বিচারপতি নিয়োগে প্রধান বিচারপতির মতামতের প্রাধান্য থাকতে হবে। এটাই এখন আইন।
“এখন যে একজনকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাকে স্থায়ী নিয়োগে প্রধান বিচারপতির সুপারিশ থাকার পরও বাদ দেওয়াটা আইনের লংঘন, সংবিধানের লংঘন এবং এর আগে ১০ বিচারপতির মামলায় সুপ্রিম কোর্ট যে নীতিমালা করে দিয়েছেন, সেটারও লংঘন।”
এক প্রশ্নের জবাবে মনজিল মোরসেদ জানান, বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলী দুই বছর আগে নিয়োগ পেয়েছিলেন অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে। সেই মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় এবং স্থায়ী নিয়োগ না পাওয়ায় তিনি এখন ‘সাধারণ নাগরিক’।
১৯৫৬ সালে জন্ম নেওয়া ফরিদ আহমদ শিবলী আইনের ডিগ্রি নেওয়ার পর ১৯৮৩ সালে সহকারী জজ হিসেবে বিচার বিভাগে যোগ দেন। ২০০৪ সালে তিনি পদোন্নতি পেয়ে দায়রা জজ হন।
২০১৫ সালের শুরুতে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা দায়িত্ব নেওয়ার পর ফরিদ আহমেদ শিবলীকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর এক বছরের মাথায় তিনি অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে হাই কোর্টে নিয়োগ পান।