খােলা বাজার২৪, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ : সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি)বাবুল আক্তারের সঙ্গে পুলিশের বিশেষ শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) আকরাম হোসেন লিটনের স্ত্রী বনানী বিনতে বশির ওরফে বন্নির পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে এই রকম সংবাদ প্রকাশকে আজগুবি ও ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই দেখছে ঝিনাইদহের সচেতন মানুষ এবং বনানীর পরিবার ও নিকট আত্মীয় স্বজনেরা। আকরামের রেখে যাওয়া কয়েক কোটি টাকার সম্পদ আত্মসাতের জন্য তার বোনেরা এ সমস্ত মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন, কুৎসা রটনা করছে। যা বনানীর জন্য এখন পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বনানীর বাবা বশির উদ্দিনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আকরাম সড়ক দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে তার রেখে যাওয়া নগদ অর্থ ও সম্পদের লোভে প্রথমে আমার বোনের ছেলে সাদিমুল হক মুনের সাথে পরকীয়ার কথা বলে ঝিনাইদহের সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৩য় আদালতে জান্নাত আরা পারভিন ওরফে রিনি বাদী হয়ে ৪জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।মামলা নাম্বার শৈল পিটিশনঃ-০৮/১৫,তারিখ ১৯/০১/২০১৫।মামলার আসামীরা হচ্ছেন,বনানীর নিকট আতœীয় ১।মোঃ সাদিকুল হক মুন,২।নিহত আকরামের স্ত্রী বনানী বিনতে বছির,৩।আকরামের শশুর মোঃ বশির উদ্দিন ও ৪।আকরামের শাশুড়ি সেলিনা খাতুনকে আসামী করে তাঁর বোনেরা মামলা করেন।দুই বছর পর এখন আবার নতুন করে বাবুল আক্তারের সাথে পরকীয়ার গল্প তৈরি করে আমার মেয়ের মানহানি করছে নিহত আকরামের ৫বোন ও স্বজনরা।এর পরে হয়তো অন্য কোন পুরুষকে আবার পরকীয়া প্রেমিক বানাবে।রেখে যাওয়া নগদ অর্থ ও সম্পদের লোভে বোনেরা বেসামাল হয়ে নতুন নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে তারা।
স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় বাবুল আক্তারের পরকীয়া ও এসআই হত্যা নিয়ে বনানীর পরিবার ও নিকট আত্মীয়দের সাথে কথা হলে তারা জানালেন, বাবুল আক্তার পুলিম বিভাগে যতদিন চাকরি করেছেন তার মেধা ও যোগ্যতা দিয়েই করেছে। কারও উপকার করতে না পারলেও কোনদিন ক্ষতির চিন্তা ভাবনা করেনি কখনও। তার স্ত্রী মিতু নিহত হওয়ার পর সন্তানদের কথা চিন্তা করে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চাকুরি করছেন। এখন একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে তার বাকী সম্মানটুকুও কেড়ে নিতে।
সূত্রে জানা গেছে, বাবুল আক্তার যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছিলেন তখন বনানী নামের মেয়েটির বয়স ৩ থেকে ৪ বছর হবে। খুলনায় বাবুল আক্তারের বাবা পুলিশে ও বনানীর বাবা বিআরডিবিতে চাকরি করতেন।বাবুলের বাবা থাকতেন বটিয়াঘাটা থানার পুলিশ কোয়াটারে আর বনানীর বাবা থাকতেন খুলনায় । কখনও তারা পাসাপাশি বসবাস করতেন না। এ রকম একটি ছোট বাচ্চাকে জড়িয়ে অসম প্রেমের গল্প বানাচ্ছে সম্পদ লোভী নিহত আকরামের পাঁচবোন ও স্বজনরা। মিডিয়ার সামনে অসম মিথ্যা প্রেমের গল্প বানিয়ে একেক বার একক ধরণের কথা বলছে। এখন তারা আকরাম হত্যার সাথে বাবুলকে জড়িয়ে নতুন আজগুবি গল্প তৈরিতে ব্যস্ত যা সত্যিই দুঃখজনক,এমন মিথ্যাচার মানুষের কাম্য নয়।
বাবুল আক্তার ও বনানীকে নিয়ে এই ধরনের সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে তারপরও আপনারা কোন প্রতিবাদ কিংবা মন্তব্য করছেন না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বাবুল আক্তারের ছোট ভাই এ্যাড. হাবিবুর রহমান লাবু বলেন, এগুলো যারা করছে তারা বাবুল আক্তার সম্পর্কে না জেনে শোনে এক তরফা ভাবেই অসৎ উদ্দেশ্যে মিথ্যাচার করছেন। তিনি মিডিয়া ও আকরামের স্বজনদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনারা অনুসন্ধান করে সঠিক তথ্য তুলে ধরুন। এক তরফা কথা শোনলে আসল তথ্য গোপনেই থেকে যাবে। ছোট বেলা থেকে বাবুলের বনানীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক এবং বিয়ের পরও মিশনে থেকেও পরকীয়া সম্পর্ক্য ছিল বলে যে দাবি তোলা হচ্ছে তা সত্যি দুঃখজনক ও ডাহা মিথ্যা। ১৯৯০ সালের দিকে আমার ভাই বাবুল আক্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থেকে পড়াশোনা করতো।তাহলে পাশাপাশি থেকে প্রেম করলেন কিভাবে।
নিহত এসআই আকরামের স্ত্রী বনানীর বাবা বশির উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার চাকুরি জীবনে বাবুল বা বাবুলের পরিবারের সাথে কখনও দেখা বা সাক্ষাত হয়নি। তাছাড়া আমি শুনতে পাচ্ছি বাবুলের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ খুলনা জেলায় কর্মরত ছিলেন। ইতি পূর্বে একটি পত্রিকায় উল্লেখ করা হয় তখন আমরা সাতক্ষীরায় ছিলাম। এখন আবার বলছে খুলনার কথা। এরপর আবার না জানি অন্য কোন জেলার কথা বলে।
তার মেয়ের সঙ্গে বাবুলের কখনও প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিনা? এ বিষয়ে বশির উদ্দিন জানান, আমি যখন ১৯৮৫ সালে খুলনায় চাকুরি করি তখন আমার মেয়ে বনানীর জন্ম হয়। এখন আপনারাই বলেন, সদ্য জন্ম নেয়া একটি মেয়ে কিভাবে বাবুল আক্তারের সাথে প্রেম করে তা দেশবাসির নিকট ও আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন?
বনানীর বাবা আরো বলেন, আমার মেয়েটি স্বামী হারিয়ে এমনিতেই বিপদ গ্রহস্ত তার ওপর স্বামীর সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে পড়ে লেগেছে তার বোন ও স্বজনেরা। জানাজা শেষ করেই নিহত আকরামের বোন জামাইয়েরা ও তার সহযোগীরা আমার ওপর আক্রমণ করে মারপিট করার চেষ্টা করে। ওই সময় তাদের হামলা ঠেকাতে গিয়ে আমার শ্যালক নাজমুল, শরিফুল ও আমার চাচাত ভাই কলেজ প্রভাষক ওহিদুর রহমান রক্তাক্ত ও জখম হয়েছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ২০১৫ সালে মাগুরা প্রেস ক্লাবে নিরাপত্তা চেয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করি।
বাবুল আক্তারকে জড়িয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় পরকীয়ার সম্পর্ক আছে এমন সংবাদ প্রকাশিত হলে, আমার মেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছিল যে বাবুল নামে কাউকে সে চিনে না বা তার সাথে কোনদিন কোন ধরণের সম্পর্ক নেই,ছিলনা।নিহতর বোনেরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন,বাবুল আক্তার বিদেশে মিশনে থাকাকালিন আমার সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইলে কথা বলেছে। এমন কি তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে মোবাইল নম্বার ট্রেকিং করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্যেও চ্যালেঞ্জ করে বনানী। তারপরও নিহত আকরামের বোনেরা আমার মেয়ের নামে বিভিন্ন অপপ্রচার করছে। তবে তাদের উদ্দেশ্য একটি কথা বলতে চাই আকরাম নিহতের পর নানান অভিযোগ করার পরও ফরেনসিক রিপোর্টেও সত্য উদঘাটন হয়েছিল। এখন আবার ওই চক্রটি হয়তো কারো ইন্ধনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
আকরাম মারা যাওয়ার পর অনেক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে আমার মেয়েকে। এ নিয়ে বনানীকে হত্যা করার হুমকিও দিয়েছিল তারা। আমাদেরকেও নানান সময়ে হুমকি দিত। কেন হুমকি দিত এ ব্যাপারে তিনি বলেন, সম্পদের লোভেই ওইসব কর্মকান্ড করেছিল আকরামের বোনেরা। তাই তাদের নামে ঝিনাইদহ সদর থানায় জিডি করি যার নাম্বার ৮৫৮/১৫, এছাড়া ঢাকা শাহবাগ থানায় ও একটি জিডি করা হয়। আর আকরাম মারা যাওয়ার আগে ঢাকাতে একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করে রেখে ছিল যা তার একমাত্র মেয়ের নামে আছে। আকরাম তার স্ত্রীর নামে কিছু রেখে যায়নি। কিন্তু আকরামের পরিবার ফ্লাটটিও আকরামের মিশন থেকে আনা টাকা আত্মসাৎ করার জন্য নতুন করে ফন্দি ফিকির করছে।
বিভিন্ন মিডিয়াতে, পত্র-পত্রিকায় আকরামের জান্নাত আরা পারভিন রিনির দেয়া বক্তব্য প্রকাশের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, আকরাম মারা যাওয়ার পর থেকেই আমি ও আমার মেয়ে বনানী আকরামের দাফন হওয়ার আগ পর্যন্ত এক সঙ্গেই ছিলাম। যারা বলছে আমি ও আমার মেয়ে লাশের সাথে ছিলাম না তাদের জ্ঞাতার্থে বলতে চাই, লাশ দাফনের পরপরই পারভীন রিনির বড় বোনের ছেলে আমাদের বেশ কয়েকজনকে মেরে রক্তাক্ত করেছিল। কলেজ প্রভাষক ওহিদুর রহমানকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আমি চিকিৎসা করিয়েছিলাম। আকরামের মেয়ের নামে ফ্ল্যাটটি নেয়া এবং তার জমানো কিছু টাকা পয়সার লোভেই আজ তারা (আকরামের বোনেরা) নানান ধরণের কুৎসা রটনা,মিথ্যাচার করে যাচ্ছে যা সত্যি বেদনাদায়ক। আকরাম কিভাবে মারা গিয়েছে সব ডকুমেন্ট নিয়ে কারো কোন সন্দেহ নেই। সবাই সবকিছুই জানে।তবে দুইবছর পর বাবুল আক্তারকে জড়িয়ে কেন গল্প তৈরি করা হচ্ছে সেটা চিন্তার কোনো বিষয় নয়। কারণ একটাই অর্থ সম্পদের লোভেই তারা এটা করছে। বাবুলের সাথে যদি আমার মেয়ের পরকীয়া থেকে থাকেই তাহলে বনানীর যে মোবাইলে কথা বলত সেটা ট্র্যাকিং করে বের করুক। তবে আমার মেয়ের সাথে বাবুল নামের কারো পরিচয় ছিলনা এবং নেই। হত্যা কিংবা পরকীয়ার প্রশ্নই আসেনা। জান্নাত আরা রিমিসহ পাঁচবোনেরা এখন বাবুল আক্তারকে জড়িয়ে একই ধরনের অভিযোগ আনছেন এবং এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক বলে দাবি করেন তিনি।