খােলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্রের পানি সরিয়ে নেয়ার ভারতীয় উদ্যোগ, আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে উজানে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যহার ও জাতীয় স্বার্থে দেশবাশীকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আজ বিকালে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল আনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, জাহেদুল হক মিলু ও রাজেকুজ্জামান রতন।
সমাবেশে কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে এবং ভারতীয় পানি আগ্রসন নীতির প্রতিবাদে আমাদের পার্টি বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের উদ্যোগে গত ১৫-১৬ ফেব্রুয়ারি ’১৭ বগুড়া থেকে তিস্তাব্যারেজ পর্যন্ত দুই দিনব্যাপি রোডমার্চ কর্মসূচি পালিত হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি ’১৭ রোডমার্চের সমাপনী সমাবেশ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি ’১৭ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
তিনি বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জয়শংকর বাবু আজ ঢাকা সফরে এসেছেন প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী এপ্রিলে সম্ভাব্য ভারত সফরের দিনক্ষণ ও আলোচ্যসূচি ঠিক করার জন্য।
তিনি বলেন, আমরা যতটুকু জেনেছি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে আলোচ্যসূচিতে তিস্তা চুক্তি ও গঙ্গা ব্যারেজের বিষয়টি নির্দিষ্ট করা হয়নি। তাই আমাদের দাবি, আলোচ্যসূচিতে উপরোক্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ততো করা বটেই এমনকি তিস্তাসহ ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। তিনি বলেন, শোনা যাচ্ছে ভারত বাংলাদেশের সাথে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি করতে বিশেষভাবে আগ্রহী। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন পানির ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, সীমান্তে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা করে, কাঁটাতারে বেড়া দিয়ে, বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি দূর না করে, এন্টিডাম্পিং ট্যাক্স বসিয়ে রেখে কিভাবে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা সম্ভব?
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ পানির ন্যায্য হিস্যাসহ বাংলাদেশের সাথে অমিমাংসিত সকল বিষয়ে ন্যায্য ও সমতার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করার জন্য ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
সমাবেশ থেকে আগামীকাল ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ মার্চ ২০১৭ পর্যন্ত তিস্তা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার জেলাসমূহে সভা-সমাবেশ-জনসংযোগ এবং ৩০ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিল ও স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি পুনরায় ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল ঢাকার রাজপথ প্রদক্ষিণ করে পল্টন, বিজয়নগর ঘুরে তোপখানা রোডে এসে শেষ হয়।