Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

57খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০১৭: কাঁসা, বেগুন, গুড় এই মিলে ইসলামপুর। আর এই বেগুন চাষে স্বাবলম্বী হয়ে সচ্ছল জীবনযাপন করছেন জামালপুরে ইসলামপুর উপজেলার ২০ হাজার কৃষক। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্বতীরের উর্বর বেলে দোঁআশ মাটি বেগুন চাষের জন্য উপযোগী। তাই ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী ইসলামপুর উপজেলার চরগোয়ালিনী, চরপুঁটিমারী, গাইবান্ধা ও গোয়ালেরচর ইউনিয়নের কৃষকরা বেগুন চাষের ওপরই অধিকতর নির্ভরশীল। এছাড়াও ইসলামপুরের যমুনা তীরবর্তী উর্বর বেলে দোঁআশ মাটিও বেগুন চাষের জন্য উপযোগী। ইসলামপুরের প্রায় ২০ হাজার কৃষক ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার তীরবর্তী এলাকায় প্রতি বছরের মতো এ বছরও তাদের ফসলি জমিতে বেগুনের চাষ করেছেন। এ বছর ইসলামপুরের প্রায় ১৭ হেক্টর জমিতে ৪৩ হাজার ৭৫০ টন বেগুন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ উপজেলার চরগোয়ালিনী ইউনিয়নের কান্দারচর গ্রামের কৃষক ইউসুফ আলী জানান, প্রতি বছরের মতো এ বছরও তিনি চার বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করে কমপক্ষে ৫শ মণ বেগুন পাওয়ার আশা করছেন। বেগুন সবচেয়ে বড় অর্থকরী ফসল দাবি করে তিনি বলেন, বেগুন চাষে হয় তার পরিবারের ভাত-কাপড় এবং বেগুন চাষেই চলে তার সারা বছরের খরচ। একই সময় চরপুঁটিমারী ইউনয়নের চিনারচর গ্রামের কৃষক আলী হোসেন জানান, এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করতে সর্বোচ্চ খরচ হয় ১০ হাজার টাকা। ওই খরচের টাকা বেগুন চারা রোপণের দুই মাসের মাথায় উঠে আসে। আর বাকি সময় বেগুন ক্ষেত থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে তার পরিবারের সারা বছরের খরচ চলে।
একই ইউনিয়নের কান্দারচর গ্রামের কৃষক আলাল উদ্দিন জানান, বর্তমানে তার জমিতে রোপণকৃত বেগুন গাছের বয়স প্রায় শেষ। এ বছর মৌসুমের শুরুতেই ইসলামপুর ও জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে বেগুনের দাম আকাশ ছোঁয়া। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বিগত শীত মৌসুমে কৃষক আলাল উদ্দিন এক বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় করেছিলেন। তাই তিনি এ বছর এক বিঘা জমি থেকে কমপক্ষে ১ লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন। একইভাবে বেগুন চাষে স্বাবলম্বী হয়েছে কান্দারচর গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন, মুছা সর্দার, ফজলুল হক, মজনু মিয়া, দানেছ আলী, ইন্তাজ আলী ও লিচু মন্ডলসহ শত শত কৃষক।
ইসলামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাতিউর রহমান জানান, শীতকালীন বেগুন চাষের জন্য শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি উঁচু জমিতে বীজতলা বানিয়ে বীজ বপন করতে হয়। ওই বীজতলায় চারা গাছের বয়স দেড় মাস হলে চারাগুলো তুলে মূল জমিতে দেড় ফুট অন্তর অন্তর রোপণ করতে হয়। জমিতে প্রয়োজনীয় জৈবসার, কীটনাশক ও ঠিকমতো সেচ দিতে পারলে প্রতি হেক্টর জমিতে ৩৩ টন বেগুন উৎপাদন করা সম্ভব। আর বেগুন চাষের এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ইসলামপুুরের অধিকাংশ বেগুন চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
ইসলামপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নবী নেওয়াজ খান লোহানী বিপুল জানান, শীত মৌসুমে উৎপাদিত বেগুন বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের সবজি চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব জেলার বাজারেই পৌঁছে।