খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ১৮ মার্চ ২০১৭: চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের লালপুর বালুধূম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৮মার্চ শনিবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বৃষ্টিতে ভিজে বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন খান শামীমের বিরুদ্ধে এ মানববন্ধন করে। পরে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
জানা যায়, ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার এসোসিয়েশন ফর ল’ রিচার্জ এন্ড হিউম্যান রাইট্স (এলার্ট) চাঁদপুর জেলা শাখার আয়োজনে ‘স্বাধীনতা সুরক্ষা ও জাতীয় উন্নয়নে করণীয়’ বিষয়ক আলোচনা সভায় লালপুর বালুধূম উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর আলম খানের আমন্ত্রণে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাওছার আহমেদ শিক্ষার্থীদের নিয়ে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। উদ্বোধকের বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রান ও সমাজ কল্যান সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষক উপস্থিথ ছিলেন। সভা শেষে বেলা পৌনে ৩টায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন খান শামীম বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করে আপনি এসোসিয়েশন ফর ল’ রিচার্জ এন্ড হিউম্যান রাইট্স (এলার্ট) চাঁদপুর জেলা শাখার আয়োজনে ‘স্বাধীনতা সুরক্ষা ও জাতীয় উন্নয়নে করণীয়’ বিষয়ক আলোচনা সভায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে যোগ দিলেন কেন। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন খান শামীম প্রধান শিক্ষকের সাথে অশোভন আচরণ করে টেবিলের উপর থাকা কাচের গ্লাস ভেঙ্গে প্রধান শিক্ষককে তেড়ে যান। এই ঘটনায় গতকাল বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন খান শামীমের বিচার ও পদত্যাগের দাবীতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে মানববন্ধন করে। পরে ঘটনাস্থলে সিনিয়র এএসপি সার্কেল রাজন কুমার দাস, মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শবক (তদন্ত) মহিউদ্দিন মিয়া, পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) হারুনুর রশীদ, এসআই কামরুল ইসলাম, ত্রিনাথ সাহা সহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রধান শিক্ষক কাওছার আহমেদ বলেন, ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হয়। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর আলম খানের বাসার সামনে এসোসিয়েশন ফর ল’ রিচার্জ এন্ড হিউম্যান রাইট্স (এলার্ট) চাঁদপুর জেলা শাখার আয়োজনে ‘স্বাধীনতা সুরক্ষা ও জাতীয় উন্নয়নে করণীয়’ বিষয়ক আলোচনা সভায় আমাকে দাওয়াত দিলে ক্লাস শেষে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ও কিছু শিক্ষার্থী নিয়ে ঐ অনুষ্ঠানে যোগ দেই। অনুষ্ঠান শেষে আমি ও শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে আসি। পরে দুপুর আড়াইটায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন খান শামীম আমাকে মোবাইলে বিদ্যালয়ে আছি কি না তা জানতে চায়। কিছু সময় পরেই বেলা পৌনে ৩টায় চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন খান শামীম বিদ্যালয়ে এসে আমার সাথে বিভিন্ন বিষয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করে, আমিও তার প্রশ্নের জবাব দেই। তিনি পরে আমাকে জিজ্ঞাসা করেন এসোসিয়েশন ফর ল’ রিচার্জ এন্ড হিউম্যান রাইট্স (এলার্ট) চাঁদপুর জেলা শাখার আয়োজনে ‘স্বাধীনতা সুরক্ষা ও জাতীয় উন্নয়নে করণীয়’ বিষয়ক আলোচনা সভায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে যোগ দিলেন কেন। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন খান শামীম আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেন। কেন তাকে ম্যানেজিং কমিটিতে রাখা হয়নি। চেয়ারম্যান আরো বলেন আমার অনুমুতি ছাড়া বিদ্যালয়ে আপনারা কিছু করতে পারবেন না। যদি করে তাহলে আমি আপনার বিপক্ষে অবস্থান করবো। পরে টেবিলের উপর থাকা কাচের গ্লাস ভেঙ্গে আমার উপর আঘাত করার জন্য তেড়ে আসেন। এই ঘটনায় গতকাল বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন খান শামীমের বিচার ও পদত্যাগের দাবীতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে মানববন্ধন করে।
এবিষয়ে বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন খান শামীমের সাথে যোগাযোগের জন্য তার ব্যাক্তিগত মোবাইল নাম্বারে ফোন করলে তিনি ফোন সিভিব করেন নি।