Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

17kখােলা বাজার২৪।। রবিবার, ৭ মে, ২০১৭: মুখভর্তি ব্রণ নিয়ে অনেকেরই মন খারাপ থাকে। একটা সেরে ওঠে, তো পাশে আরেকটা দেখা যায়। কোনোটা পেকে এমন হয় যেন এক্ষুনি ফেটে পুঁজ বেরোবে। আবার ব্রণ খোঁটাও মানা, এতে নাকি দাগ স্থায়ীভাবে বসে যাবে। কিন্তু আয়না দেখে খোঁটার জন্য যেন হাত নিশপিশ করে। এ জীবনে এ সমস্যা আর যাবে না, এমন ভেবে কেউ কেউ হয়তো হালই ছেড়ে দিয়েছেন।

ব্রণ: কেন, কীভাবে

বয়ঃসন্ধির সময়ই সাধারণত ব্রণের সমস্যাটি বেশি দেখা দেয়। ২০-২২ বছর বয়স পর্যন্ত এ সমস্যায় অনেকে ভোগে। মুখেই ব্রণ হয় বেশি। তবে পিঠ, বুক ও হাতের উপরিভাগে হওয়াও বিচিত্র নয়। ত্বকের তেলগ্রন্থি বা সেবাসিয়াস গ্রন্থির অতিকার্যকারিতার কারণে যদি অতিমাত্রায় তৈলাক্ত সেবাম তৈরি হতে থাকে, তবে তা একসময় গ্রন্থের মুখ বন্ধ করে দেয়। কখনো গ্রন্থি ফেটে গিয়ে প্রদাহ হয় ও গোটা হয়ে ফুলে ওঠে। হরমোনজনিত তারতম্যও ব্রণের জন্য দায়ী।

ব্ল্যাকহেড, হোয়াইট হেড

ব্রণ বিভিন্ন চেহারার হতে পারে। যেগুলোর মুখ কালো সেগুলো ব্ল্যাকহেড। আবার সাদা মুখ বা লাল (প্রদাহজনিত) মুখের ব্রণও হতে পারে। ব্রণে কখনো কখনো ব্যথা হতে পারে, পুঁজ হতে পারে এমনকি মাঝেমধ্যে গোটা থেকে সাদা ময়লার মতো বেরোতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরে কালো দাগ ও ক্ষত হয়ে যায়।

ব্রণ নিয়ে নানা মিথ

খাবারের সঙ্গে ব্রণের কোনো সম্পর্ক নেই। তৈলাক্ত খাবার খেলেই যে ব্রণ হবে, এমন কোনো কথা নেই। তবে মোটা হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আছে। কেননা সেটা হরমোনজনিত হতে পারে।

ব্রণ হলে বারবার মুখ ফেসওয়াশ বা স্ক্রাবার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, এ ধারণাও ভুল। বরং বেশি বেশি এভাবে ধুলে ত্বকের স্বাভাবিক তেল হারিয়ে প্রদাহ বেশি হতে পারে। মুখ মোছার তোয়ালে বা কাপড় সব সময় পরিচ্ছন্ন হতে হবে।

এটা ঠিক যে ব্রণ খোঁটা উচিত নয়। এতে জীবাণু আরও ছড়াবে ও প্রদাহ বাড়বে।

ব্রণের চিকিৎসা আছে

ব্রণের চিকিৎসা প্রতিনিয়ত আধুনিকতর হচ্ছে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্রণের প্রকার, আনুষঙ্গিক জটিলতা, রোগীর বয়স এবং সময়কাল বিবেচনা করা হয়। প্রথমত চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের ক্রিম, যেমন: ইরাইথ্রোমাইসিন, ক্লিনডামাইসিন, এজিলিক অ্যাসিড, টেন্টনয়েন, বেনজাইল পারঅক্সাইড ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। কাজ না হলে বা রোগ তীব্র হলে এর পাশাপাশি মুখে খাবার ওষুধও, যেমন: এজিথ্রোমাইসিন, ডক্সিসাইক্লিন, ক্লিনডামাইসিন ইত্যাদি দেওয়া হয়। কখনো এরপরও ব্রণ হতে থাকে বা কখনো বড় গোটা বা ফোড়ার মতো দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর হলো আইসো টেট্রিনয়েন ক্যাপসুল। তবে এটি ব্যবহারে কিছু সতর্কতা জরুরি এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনোই ব্যবহারযোগ্য নয়। হরমোনজনিত সমস্যায় অ্যান্টিএন্ড্রোজেন দিয়েও চিকিৎসা করা হয়।

এ ছাড়া ব্রণ চিকিৎসায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারও বেড়েছে। বিশেষ করে ব্রণ-পরবর্তী দাগ বা ক্ষত সারাই করতে এগুলো কার্যকর। যেমন: মাইক্রোনিডলিং, মেসোথেরাপি, রেডিওফ্রিকোয়েন্সি, পিআরপি, মাইকোডার্মাব্রেশন, লেজার ইত্যাদি।

মনে রাখবেন ব্রণের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি ও এতে ধৈর্য প্রয়োজন। আধাআধি চিকিৎসা করে ছেড়ে দেবেন না।