খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার , ১৬ মে, ২০১৭: সিংড়ায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে নাটোরের বাস মালিক ও শ্রমিকরা। সোমবার রাতে জেলা বাস মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের এক যৌথ বৈঠক শেষে এই ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়। ওই ঘোষনার পর মঙ্গলবার সকাল থেকে নাটোরের সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া রাজধানী ঢাকা সহ অন্যান্য জেলা থেকেও কোন বাস নাটোরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এতে করে চরম দূভোগে পড়েছে ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা। বাস না পেয়ে অতিরিক্ত ভাড়ায় তাদের বিকল্প যানবাহনে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। তবে দুরপাল্লার যাত্রীরা পড়েছেন অসহনীয় দূর্ভোগে। তবে বেলা সাড়ে ১২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সাথে মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বৈঠক চলছিল।
নাটোর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বাস মালিক সমিতি গঠন করে সিংড়ার ওপর দিয়ে চলাচলকারী সকল যানবাহন থেকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করায় তারা নাটোর বাস মালিক সমিতির নিয়ন্ত্রনাধীন বাসের স্টাফদের মারপিট করে ও বাস ফিরিয়ে দেয়। এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করার পরও চাঁদা তোলা বন্ধ হয়নি। চাঁদা আদায়ের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোন কাজ হয়নি। বরং তারা প্রতিদিন বাস থেকে চাঁদা আদায় অব্যাহত রাখে। সোমবার আবার এ নিয়ে প্রতিবাদ জানালে তারা রংপুর, দিনাজপুর ও বগুড়াগামী নাটোর সমিতির সকল বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে নাটোরে ফেরত পাঠায়। এই ঘটনার পর নাটোরের বাস মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ যৌথ বৈঠকে বসেন। বৈঠকে সিংড়ায় চাঁদাবাজি বন্ধের দাবীতে মঙ্গলবার থেকে সকল জেলা ও আন্তজেলা রুটে অনিদিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয়।
বাস মিনিবাস মালিক সমিতি কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি প্রশান্ত কুমার পোদ্দারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে সাধারন সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সাগর, বাস মালিক আব্দুর রশীদ প্রামানিক, বাবুল আক্তার, জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আকরাম হোসেন, জেলা ট্রাক ,ট্র্যাক্টর ও ট্যাংক লরি মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তারুল ইসলাম আলম প্রমুখ বাস মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নাটোর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম জানান, সিংড়ায় প্রতিটি গাড়ি থেকে জোরপূর্বক ১৭০ টাকা করে চাঁদা নেয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে হেলপার ও চালককে পিটিয়ে গাড়ি নাটোরে ফেরত পাঠানো হয়। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্ত কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় বাধ্যহয়ে আন্দোলনের পথ বেছে নিতে হয়েছে।
নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন জানান, সোমবার রাত ৯ টার দিকে বাস মালিক সমিতির প্রতিনিধি চাঁদা উত্তোলনের বিষয়টি সম্পর্কে একটি লিখিত পত্র প্রদান করে। এ সময় ওই প্রতিনিধির কাছে চাঁদাবাজির সাথে কারা জড়িত তা জানতে চাওয়া হলেও জানানো হয়নি। কিন্তু ব্যবস্থা গ্রহণের আগেই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। একটি দিনও সময় না দেওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন নেতৃবৃন্দের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।