খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ২৭ মে, ২০১৭: এবার ফিলিপাইনের মিন্দানাও দ্বীপে খেলাফত কায়েম করার কথা জানিয়েছে আইএস । মিন্দানাওয়ের কিছু এলাকায় সম্প্রতি সহিংসতার পর সামরিক আইন জারির পরিপ্রেক্ষিতে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় এই ইচ্ছেপোষণ করেছে আইএস।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কথিত খেলাফতের ঘাঁটিগুলো ধ্বংসপ্রায়। রাশিয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের বোমায় প্রায় ঝাঁঝরা হয়ে গেছে সিরিয়ায় অবস্থিত কথিত আইএস খেলাফতের রাজধানী রাকা।
২০১২ সাল থেকে ইরাক ও সিরিয়ার বিস্তৃত এলাকা দখল করে নিজেদের খেলাফত কায়েম করার স্বপ্নে বিভোর ছিল এই জঙ্গি সংগঠনটির সেনারা। দেশ দুটির পর মধ্যপ্রাচ্যের দিকেও নজর দিয়েছিল তারা। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে। মাঝে বিভিন্ন দেশের বাহিনীর সাঁড়াশি হামলায় প্রাণ গেছে সংগঠনের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের।
তবে মধ্যপ্রাচ্যের ঘাঁটি ধ্বংসের পর দুর্বল হলেও একেবারেই দমে যায়নি আইএসের কার্যক্রম। এশিয়া আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশে নানা নামে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল তারা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ফিলিপাইনের মিন্দানাও দ্বীপে খেলাফত কায়েম করার কথা জানিয়েছে আইএস ।
মিন্দানাওয়ের কিছু এলাকায় সম্প্রতি সহিংসতার পর সামরিক আইন জারির পরিপ্রেক্ষিতে টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় এই ইচ্ছেপোষণ করেছে আইএস। আন্তর্জাতিক জঙ্গি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েবসাইট জিহাদওয়াচের বরাত দিয়ে এ কথা জানিয়েছে দ্য ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকা।
এদিকে বিবিসি ফিলিপাইনের রাষ্ট্রীয় আইনজীবী (সলিসিটর জেনারেল) ক্যালিডা সায়েরের বরাত দিয়ে জানায়, মিন্দানাও দ্বীপের লানাও ডেল সুর প্রদেশের মারওয়াই এলাকায় দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের লড়াই চলছে। গত সপ্তাহে দেশটির শীর্ষ জঙ্গিনেতা ও আবু সায়াফ জঙ্গি গোষ্ঠীর অন্যতম কমান্ডার ইসনিহলন হাপিলনকে ধরতে সেখানে অভিযান চালালে জঙ্গিরা তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এরপর সেখানে সামরিক আইন জারি করে বিশেষ বাহিনী নিয়োগ করে সরকার।
এদিকে অভিযান শুরুর পর দলে দলে জঙ্গিরা অস্ত্রসহ এসে প্রতিরোধ শুরু করে। মুসলিম অধ্যুষিত লানাও ডেল সুর প্রদেশটির অনেক নাগরিক রাস্তায় নেমে প্রতিরোধ করে। এদের মধ্যে অনেকেই আইএসের জিহাদি পতাকা বহন করছিলেন।
আবু সায়াফ জঙ্গি গোষ্ঠীর কমান্ডার ইসনিহলন হাপিলনকে ধরার অভিযান সপ্তাহান্তে এসেও শেষ হয়নি। তবে মারওয়াইতে ফিলিপাইনের ১১ সেনা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন জঙ্গির মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে সরকারি বাহিনী। সরকার আরো জানায়, নিহত জঙ্গিদের অনেকেই বিদেশি নাগরিক।
বিবিসির খবর অনুযায়ী, স্থানীয় জঙ্গিদের সঙ্গে বিদেশিদের অংশগ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া ফিলিপাইনের জন্য একটি বিরল ঘটনা।
ক্যালিডা সায়ের জানান, মিন্দানাও দ্বীপে বেশ কয়েক বছর ধরেই স্থায়ত্ত্বশাসনের দাবিতে লড়াই করছে স্থানীয় কিছু সংগঠন। আর এই সংগঠনগুলো কট্টরপন্থী আবু সায়াফ গোষ্ঠীর ম“পুষ্ট অথবা তাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত।
তবে রড্রিগো দুতের্তের সরকার এই জঙ্গিদের কোনো ছাড় দেবে না বলেও জানিয়েছেন রাষ্ট্রীয় আইনজীবী ক্যালিডা।