Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ২৭ মে, ২০১৭: 8রমজান শুরুর আগেই নিত্যপণ্যের উত্তাপ বাড়ছে। ছোলা, ডাল ও চিনির দাম বেড়েই চলেছে। এ তিন পণ্যের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। অনেকে বলছেন, রমজান এলেই পণ্যমূল্য বাড়বেÑ এটাই এখন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে কমেছে ডিম ও মুরগির দাম। এ ছাড়া পিয়াজসহ অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল সকালে রাজধানীর মিরপুর ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। মিরপুর বাজারে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ছোলা প্রতি কেজি ৮০-৮২ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল হয়েছে ৯৫ টাকায়। ৬২-৬৫ টাকার চিনি বিক্রি হয়েছে ৭২-৭৫ টাকায়। এ ছাড়া মাছের বাজারেও চড়াভাব লক্ষ্য করা গেছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি রুই বিক্রি হয়েছে ২০০-৩০০ টাকায়। গতকাল ২৫০-৩৫০ টাকা। প্রতি কেজি ইলিশ ৮০০-১০০০ টাকা। গরুর মাংস প্রতি কেজি ৪৮০-৫০০ টাকা। খাসির মাংস ৭২০-৭৫০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি কেজিতে কমেছে ৫-১০ টাকা। দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৩৭০-৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিম (ফার্ম) প্রতি হালি ২৬-২৮; যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩০-৩২ টাকায়। সাধারণ মানের প্রতি কেজি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১২০-২৫০ টাকা। এদিকে নাজির/মিনিকেট (সাধারণ মানের) প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকায়, উত্তম মানেরটা বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৬ টাকা আর মাঝারি মানের প্রতি কেজি ৪৬-৫০ টাকা। পাইজাম/লতা প্রতি কেজি ৪৬-৪৮ টাকা, উত্তম মানের ৪৮-৫০। স্বর্ণা/চায়না ইরি প্রতি কেজি ৪২-৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহেও একই দরে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া সয়াবিন তেল (লুজ) প্রতি লিটার ৮২-৮৪, ৫ লিটারের বোতল ৪৯০-৫২০ এবং ১ লিটারের বোতল ১০০-১০৬ টাকা, পাম অয়েল (লুজ) প্রতি লিটার ৭০-৭২, সুপার প্রতি লিটার ৭৪-৭৫ টাকা। গত সপ্তাহেও একই দামে বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে, মসুর ডালের দাম বেড়ে প্রতি কেজি ৭৫-১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডাল (তুরস্ক/কানাডাÑ বড় দানা) গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ সপ্তাহে ৫ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮৫ টাকা। মাঝারি ধরনের ডাল (তুরস্ক/কানাডা) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। ডাল (দেশি) প্রতি কেজি ১১০-১২০ টাকা। ডাল (নেপালি) প্রতি কেজি ১৩০-১৩৫ টাকায়। অ্যাংকর ডাল প্রতি কেজি ৪৫-৬০ টাকায়। আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৮ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি পিয়াজ ২০-৩২ টাকায়। আমদানি করা পিয়াজ ২০-২২, দেশি ২৫, রসুন ১০০-২৪০, শুকনা মরিচ ১৫০-২০০, হলুদ ১৬০-২০০, আদা (আমদানি) মানভেদে ৭০-১১০, জিরা ৩৮০-৪৫০, দারুচিনি ৩২০-৩৬০, এলাচ ১২০০-১৬০০ টাকা। ধনেপাতা ১২০-১৫০ ও তেজপাতা প্রতি কেজি ১৩০ টাকা। তবে শাক-সবজিসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন বলেন, পাইকারি বাজারে প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম ৫ কেজিতে ৫-১০ টাকা করে বেড়েছে।
মিরপুর বাজারের ব্যবসায়ী শফিউল আলম জানান, ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। এ ছাড়া ডাল, চিনি ও ছোলার দাম বেড়েছে। বাকি পণ্য স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, রমজানে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রচলিত ধারণা বদলে যাচ্ছে। এখন নতুন ফর্মুলায় দাম বাড়ানোর ফন্দি আঁটছেন। কয়েক মাসের বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সরকার এবং সংশ্লিষ্টদের কার্যকর তদারকি না থাকার সুযোগ নিচ্ছেন কিছু ব্যবসায়ী। তারা সিন্ডিকেট করে আগে থেকেই আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কম মূল্যে পণ্য সংগ্রহ করেন। অসময়ে পণ্য আমদানি করেন। আমদানি পণ্য খালাসের পর বাজারজাত না করে গুদামজাত করেন। বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেন। এরপর বেশি মূল্যে পণ্য বিক্রি করে মুনাফা ঘরে তোলেন। অনেকে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থাকবে বলে সরকারকে আশ্বস্ত করেন। আগেই দাম বাড়িয়ে পরে সামান্য কমিয়ে বাহবা নেন। কারওয়ান বাজারের এক ব্যবসায়ী নেতা বলেন, রমজানের পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ছোলা, চিনি, ডাল ও খেজুর ব্যবসায়ীদের ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। দাম যাতে স্থিতিশীল থাকে সে ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং কার্যক্রমও জোরদার করা হয়েছে। টিসিবি চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সালেহ মোহাম্মদ গোলাম আম্বিয়া বলেন, ১৫ মে টিসিবির ন্যায্যমূল্যের পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ব্যবসায়ীরা মনে হচ্ছে সেই পুরনো কৌশল পাল্টাচ্ছেন। দাম বাড়াতে ও অপবাদ ঘোচাতে বেছে নিয়েছেন নতুন ফর্মুলা। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন