খােলা বাজার২৪।। সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০১৭: স্টাফ রিপোর্টার মোঃলাতিফুল সাফি ডায়মন্ড:- নীলফামারী জেলাধীন কিশোরগঞ্জ উপজেলায় উত্তর সিংগের গাড়ী বাংলা বাজার ভেলামারি গ্রামে “কাজী ফার্ম” এখন এলাকাবাসির জীবনের হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে
এ ব্যাপারে “কাজী ফার্ম” কর্তৃপক্ষের কোন সমাধানের পদক্ষেপ নাই। স্থানীয় প্রশাসনও নীরব ভুমিকায় ঘাপটি মেরে বসে আছেন।
সাংবাদিকদের উপর এলাকবাসি আর ভরষা পায় না। টাকার কাছে সবাই বিক্রি-গন্ধে নাক ঢেকে তথ্য নিয়ে যায় অথচ টাকার বিনিময়ে মানবতা হারিয়ে আমাদের এই দুর্ভোগ/দুর্যোগের কোন নিউজ করে না। এমন অনেক অভিযোগ আজ “কাজী ফার্ম” এর সাথে বসবাসরত এলাকাবাসির।
উল্লেক্ষ্য “কাজী ফার্ম” আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন একটি উন্নয়ন মূখী প্রতিষ্ঠান ঠিকই বটে। যেখান থেকে প্রতিদিন পল্ট্রি মুরগী ও ডিম দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষের খাদ্যের নিত্য প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাচ্ছে। কিন্তু বর্তমান তা উপকারের চেয়ে ক্ষতির মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। জনজীবন আজ বিচলিত ও দুর্গন্ধে অতিষ্ট। এ অভিযোগ শুধু এলাকাবাসির নয়, দুই-তিন কি.মি. দুরের এলাকা ঘিরে বয়ে যাওয়া রাস্তায় পথচলা বিভিন্ন পথিকও করেছে আপসোস যে, এই এলাকায় মানুষ থাকে কিভাবে ! দুর্গন্ধের মধ্য দিয়ে সরেজমিনে পথ পেরিয়ে উল্লেক্ষ্য বিষয়ের সত্যতা প্রমান করে একটি মানবিক ও মানবতার পক্ষে সংবাদ তৈরি করা হলো। বিষয়টি জাতীয় পরিবেশ রক্ষা অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন পূর্বক এলাকাবাসির সু-নির্দিষ্ট অভিযোগের আলোকে সচিত্র প্রতিবেদনের বিভিন্ন ছবি ও “কাজী ফার্ম” এর ব্যবস্থাপকের স্বসাক্ষাৎ স্বীকারোক্তি তুলে ধরা হলো।
বাংলা বাজারে নেমেই সাংবাদিকদের বিশেষ টিমের কথা শুনেই বিভিন্ন লোকজনের ভীর জমে। সেখানে স্থানীয় দোকানে একজন বলছেন দুর্গন্ধের খবর ছাপবেন ? পারবেন না ! দীর্ঘ দিন ধরে কেউ কিচ্ছুই করতে পারে নাই। তখন আমরা গাড়ী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে গেলাম। পল্ট্রি মুরগীর খামারের গেটে দাড়োয়ান ভিতরে ঢুকতে না দেওয়ায়, কেন ঢুকা যাবে না বললে, দাড়োয়ান বলে বসের অনুমতি নাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভিতর থেকে (৫৭) বছর বয়সি একজন সিকিউরিটি সুপারভাইজার এসে বললেন গন্ধ আমাদের এখানে নয়। পাশের গেটে যান ওখানে কথা বলেন।
পাশের গেটে কে আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার কথা বলবেন না,ম্যানেজার স্যর আছেন।
আমরা কয়েকটা বাড়ী পার হয়ে পাশের গেটে গেলাম। দুর্গন্ধে ভিতরে যাওয়া অসম্ভব ছিল, তবুও আমরা বাস্তব চিত্র ধারনের জন্য ভিতরে গেলাম।
ভিতরে নোংরা আর নর্দমার গন্ধে সেখানে মানুষ থাকার কোন রকম স্বাস্থ্যসম্মত অবস্থা নেই। আমি তো ম্যানেজারকে বলেই ফেললাম এতো দুর্গন্ধে কাজ করেন কি ভাবে?একেই বুঝি বলে টাকার প্রয়োজনীয়তা !
ম্যানেজারকে দুর্গন্ধ ও এলাকাবাসির জীবন যাপন সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,দুর্গন্ধ সত্য ঘটনা-মিথ্যে নয়।তবে আমাদের প্রাথমিক স্টেপে কিছু ভুল হওয়ায় ও বর্ষা কালিন সময়ের জন্য গন্ধটা বেশি ছড়িয়েছে এলাকায়। আমরা একবার মাছি মারা ঔষধ দিয়েছি। তবে কথাটায় তেমন জোড় পাওয়া যায়নি। প্রক্রিয়াকরন ও ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা পল্ট্রি মুরগীর বিষ্টা গুলো হাউজে ফেলে বিভিন্ন রাসয়নিক পদার্থ দ্বারা মেশিনের মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরনের ফলে জৈবসার প্রস্তুত করি এবং অল্প মুল্যে তা বিভিন্ন রাসয়নিক সারের দোকানে বিক্রি করি।
যা জমির জন্য ভালো ও বিষ মুক্ত শশ্য উৎপাদনে সহায়ক।
অথচ তাদেরই মানবতাহীনতায় সরাসরি শ্বাস-প্রশ্বাসে বিষের চেয়েও জঘন্যতম দুর্গন্ধযুক্ত দুষিত বাতাস হাজারও মানুষের জিবনকে আজ বিষিয়ে তুলেছে। এলাকার বিভিন্ন খোলা মাঠে খোলা ভাবে ও বস্তা বন্দি করে অপ্রয়োজনীয় দুর্গন্ধ যুক্ত বজ্রগুলো ফেলে কূলষিত করেছে এলাকার নির্মল বাতাস। বসবাসের অনুপোযোগী করেছে মানুষের আবাস। এ ব্যাপারে স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মুকুল হোসেন কয়েক বার এলাকাবাসিসহ “কাজী ফার্ম”এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেও তা কাজে আসেনি।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায় যে, বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র/ছাত্রী মিলেও একবার দুর্গন্ধের প্রতিবাদে মানব বন্ধন করা হয়েছিল। কিন্তু ফল হয়নি প্রতিষ্ঠান প্রধানের কারনে,তিনি প্রতি মাসে নাকি টাকা নিয়ে যায়। যেন কোন রকম মিছিল বা মানব বন্ধন করা না হয়। এলাবাসির দাবি “কাজী ফার্ম” টাকা দিয়ে প্রশাসন ও স্থানীয় কিছু দালালকে কিনে রেখেছে। তা না হলে প্রশাসন ঘটনাস্থলে আসে না কেন?
কেমন দুর্গন্ধ শুকে যায় না কেন?
লাভের কথা সবাই বোঝে ! আসলে এ লাভ কার? মানুষের নাকি পশু প্রাণীর? যদি মানুষের হয়, তাহলে আমরা কি মানুষ নই? এমন অনেক প্রশ্ন এলাকার মহিলা-পরুষ, শিশু-কিশোরের।
“কাজী ফার্ম” কর্তৃক পল্ট্রি মুরগীর বিষ্টা প্রক্রিয়া করনে উৎপাদিত জৈবসার-লাভের মুখে অপসারন হলেও প্রক্রিয়াকরনের নিসৃত জায়গায় বজ্র ও ময়লা পানি নিষ্কাশন বা সংক্ষনের কোন ব্যবস্থা নাই। তাই গাড়ীতে করে বাইরে খোলা জমিতে জোড় পুর্বক গন্ধ যুক্ত ময়লা গুলো ফেলা হয়,নইলে পুলিশি ভয় দেখায় বলেও এলাকাবাসি বলেন। এ রকম একটি ঘটনায় ফার্ম কর্তৃপক্ষ এলাকার ২৬জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলাও করেছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
উল্লেক্ষ্য “কাজী ফার্ম”এর সাথে এলাকার কিছু চামচা তথা দালাল আছে যার মধ্যে উল্লেক্ষযোগ্য একজন স্থানীয় ভাবে “কলম” নামে পরিচিত। ফার্মের পাশে তার বোনের বাড়ীতে ঘর ভর্তি মুরগীর বিষ্টা সংরক্ষন করেন দুর্ঘটনা বসত তা গ্যাসের প্রভাবে কয়েক বার বিস্ফোরিত হয়ে দেয়াল ভেঙ্গে যায়, যা ছবিতে স্পষ্ট আছে।
ফার্মের সাথে বসবাসরত উক্ত ইউ,পির আনসার ভিডিপি কমান্ডার মোফাজ্জাল হোসেন মোফা-করুন দুঃখের সাথে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলেন, এই আমাদের স্বাধীনতা?গেল রমজানে দুর্গন্ধ আর মাছির অত্যাচারে পাঁচটি রোজাও করতে পারি নাই। বাচ্চারা পড়ালেখা করতে পারছে না। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ অসুস্থ্য হচ্ছে। সুস্থ্য থাকার তাগিতে এলাকা ছেড়ে অনেকে বাইরেও চলে গেছে। এলাকাবাসির ধারনা তাদেরকে দুর্গন্ধ আর তা থেকে সৃষ্টি হওয়া বড় বড় মাছির দাপটে এলাকা ছাড়া করবে। যাতে “কাজী ফার্ম” গোটা এলাকায় তার কার্যক্রমের প্রসার ঘটাতে পারে।।
তাই এলাকাবাসি দুর্গন্ধ মুক্ত জীবন ব্যবস্থা,স্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য খাওয়া নিশ্চিত করন, জোড় পুর্বক ময়লা ফেলা বন্ধ ও পুলিশি হয়রানি থেকে মুক্তিদানে স্থানীয় প্রশাসন ও সর্বস্তরের মানবতা কামী সংগঠনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে মানবিক আবেদন ও দাবি ।।
বিঃদ্রঃ এলাকাবাসি সঠিক ব্যবস্থা না পেলে সংবাদটি আবার প্রকাশ করা হবে।