Tue. Jun 17th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

b j

খােলা বাজার২৪।। শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০১৭: বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে জাহাজ নির্মাণ শিল্প। এজন্য বেশ কয়েকটি শিপইয়ার্ডে জাহাজ নির্মাণের কাজ বন্ধ রয়েছে। নগর সংলগ্ন বেলতলা এলাকায় একাধিক শিপইয়ার্ডে বিশ্বমানের জাহাজ নির্মাণ হলেও নদীর অব্যাহত ভাঙনে এসব শিপইয়ার্ড বিলীন হওয়ার হুমকিতে রয়েছে। এই শিল্পকে ঘিরে জীবিকা নির্বাহ করছেন সহ্রাধিক শ্রমিক। শিপইয়ার্ড মালিকরা বলছেন, অব্যাহত নদীভাঙন রোধ করা না গেলে বিলীন হয়ে যেতে পারে এখানকার শিপইয়ার্ডগুলো। যাতে বেশ প্রভাব পড়বে বরিশালের জাহাজ নির্মাণ শিল্পের উপর।

বেলতলায় সুরভী, সুন্দরবন, কীর্তনখোলা ও কে-কাদের শিপ ইয়ার্ডে একাধিক জাহাজ নির্মিত হলেও বর্তমানে সুরভী, সুন্দরবন ও কে-কাদের শিপইয়ার্ড অব্যাহত ভাঙনে বন্ধ রয়েছে। ভাঙনের তীব্রতা থেকে শিপইয়ার্ড রক্ষায় ইতোপূর্বে কে-কাদের শিপ ইয়ার্ডের স্বত্ত্বাধিকারী হাওলাদার মাসুদের উদ্যোগে নদীতে ব্লক ফেলা হচ্ছে।

শিল্প উদ্যোক্তারা জানান, ভাঙন দূর করা গেলে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বরিশালের জাহাজ নির্মাণ শিল্প আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিন্তু যেভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে তাতে এই শিল্প হুমকির মুখে রয়েছে। কে-কাদের শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপক দুলাল মিয়া জানান, চলতি বছর শিপ ইয়ার্ড রক্ষায় তারা আট লাখ টাকার ব্লক ফেলেছেন। তারপরও ভঅঙন প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। বর্তমানে তাদের এই শিপ ইয়ার্ড জাহাজ নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছে। এতে তাদের প্রায় তিনশ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বিশ্বমানের জাহাজ তৈরির এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছিলো নৌযান মালিকদের নিজস্ব উদ্যোগে তা এখন থমকে রয়েছে।

সুরভী নেভিগেশন কোম্পানির পরিচালক রিয়াজুল কবির জানান, স্ব-স্ব উদ্যোগে একাধিকবার ভাঙন প্রতিরোধে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। প্রচুর টাকা ব্যয় করে তারা ভাঙন প্রতিরোধে প্রচেষ্টা চালালেও কোনো সুফল হয়নি। শিল্পসংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর উদাসীনতা ও কালক্ষেপণের কারণেই তারা এই তীব্র ভাঙনের শিকার হয়েছে। যথাসময়ে যদি বাঁধ নির্মাণ করা হতো তাহলে আজ তাদের শিপ ইয়ার্ডগুলো বিলীন হতো না। কীর্তনখোলা শিপইয়ার্ডের স্বত্ত্বাধিকারী মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌস জানান, বরিশালেও এখন অনেক দক্ষ কারিগর তৈরি হয়েছে। তাদের হাতে বিশ্বমানের জাহাজ তৈরি সম্ভব। সরকারের পক্ষ থেকে নদী ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা হলে এ শিল্পে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কীর্তনখোলা শিপইয়ার্ড ভূমির স্বত্ত্বাধিকারী মো. শাজাহান জানান, জমি রক্ষায় চলতি বছর তিনি ১৫ লাখ টাকার ব্লক ও জিও ব্যাগ ব্যক্তিগতভাবে নদীতে ফেলেছেন। কিন্তু তাতে কোনো ফল আসছে না। অব্যাহত ভাঙনে সব কিছু বিলীন হচ্ছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, চারটি শিপইয়ার্ডের মাত্র একটিতে জাহাজ নির্মাণ কাজ চলছে। এসব শিপইয়ার্ডের মধ্যে কেবলমাত্র কীর্তনখোলা শিপইয়ার্ডের একটি জাহাজ নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সাইদ জানান, কীর্তনখেলার ভাঙন রক্ষায় ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে বেলাতলার সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকা ভাঙন রোধ প্রকল্প প্লানিং কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে। প্লানিং কমিশন অনুমোদন করলে প্রকল্পটি একনেকে যাবে। একনেকে ওই প্রকল্পটি অনুমোদন হলেই ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান হবে। এ প্রকল্পে ওই এলাকার নদী শাসন ও ড্রেজিংয়ের বিষয়টি রাখা হয়েছে।