রবিবার, ১ অক্টোবর ২০১৭: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংকট নিরসনে কূটনৈতিক তৎপরতায় সরকারের অবস্থা এতিমের মতো। এই সরকার জনগণের হলে মিয়ানমার বাধ্য হতো রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় মোশাররফ এই মন্তব্য করেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, বাংলাদেশ যদি সঠিকভাবে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাত, তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষে এত বড় গণহত্যা চালানো সম্ভব হতো না। বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণেই এত বড় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী গণহত্যার শিকার হয়েছে এবং ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত ২৫ আগস্ট সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে এই জনগোষ্ঠীর অসংখ্য মানুষ। এমন বাস্তবতায় রাখাইনে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ‘সেইফ জোন’ বা নিরাপদ অঞ্চল গড়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ বিষয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘সিকিউরিটি কাউন্সিলের (নিরাপত্তা পরিষদ) যে রেজ্যুলেশন (প্রস্তাব), জাতিসংঘকে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে, যাতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
জাতিসংঘকে কীভাবে করতে হবে ? সেটা হলো মিয়ানমারকে বয়কটের রেজ্যুলেশন, সহযোগিতা বন্ধ করে দিতে হবে, তাদের সাথে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে দিতে হবে। সেইফ জোনে বিশ্বাস করি না, পুর্নবাসন করতে হবে। তবেই রোহিঙ্গাদের নিতে তারা বাধ্য হবে।’
আগামী নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মোশাররফ বলেন, ‘নির্বাচন যদি সঠিকভাবে হতো, অবাধ এবং সকলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আমাদের করতে হবে, এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আজকে যদি হান্নান শাহ থাকতেন। তাঁর বড় অভাব এবং তিনি থাকলে একটা তৎপরতা চালাতেন এবং বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতেন।’
‘জনগণের সরকারই পারবে কূটনৈতিক তৎপরতা ভালোভাবে চালাতে। জনগণের সরকার নাই বলে আজকে এই কূটনৈতিক তৎপরতার ব্যর্থতা আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
বিচার বিভাগ ও সংসদকে মুখোমুখি অবস্থানে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, ‘রাষ্ট্রের তিনটি যে স্তম্ভ, তা আজ মুখোমুখি অবস্থানে, জনগণের সরকার থাকলে আজ এ অবস্থা হতো না। এ জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
স্মরণ সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।