খােলা বাজার২৪।। শুক্রবার, ১৩ই অক্টোবর, ২০১৭: নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে অনুষ্ঠেয় সংলাপে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা। এ ছাড়া সেনাবাহিনী মোতায়েনসহ ২০০৮ সালের আগের সংসদীয় আসনের সীমানায় ফিরে যাওয়ার সুপারিশও করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে ৩০০টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়। নবম সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এই সীমানার ভিত্তিতেই অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় নির্বাচন। ২০০৮ সালে এটিএম শামসুল হুদা কমিশন জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে নতুন করে পুনর্বিন্যাস করে সংসদীয় আসন। তবে এবার তা পরিবর্তন করে আগের সীমানায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব করবে বিএনপি।
একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগামী রোববার বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার যাদের কোনো আইনগত ভিত্তি ছিল না, তাদের সময়ে ইচ্ছা করে দলীয়ভাবে তারা এটা করেছিল যাতে করে বিএনপির ক্ষতি হয়। তাতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমরা চাইব যে আগে যেটা ছিল।’
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে সংলাপের এজেন্ডা তৈরি করা হয়েছে এমনটি জানিয়ে বিএনপি নেতারা বলছেন, সংসদ বহাল রেখে নির্বাচনই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের (সবার জন্য সমান সুযোগ) ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি থাকবে বিএনপির প্রস্তাবনায়। নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি নিয়ে নিজেদের অবস্থানও ইসির কাছে তুলে ধরবে দলটি।
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘সরকার পদ্ধতি কী হবে না হবে অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নাই। তবে নির্বাচন কমিশন অবশ্যই তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে যে দলীয় সরকার থাকলে নির্দলীয়, নিরপেক্ষভাবে কোনো নির্বাচন পরিচালনা করা তাদের পক্ষে সম্ভবপর হবে না।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার হতে হবে নিরপেক্ষ। এখানে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সরকার যদি ওই সময়ে দায়িত্বে থাকেন তাহলে তো হবে না। দুই নম্বর হচ্ছে এ পার্লামেন্ট থাকতে পারবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘একটা সংসদ বলবৎ রেখে আরেকটা সংসদ নির্বাচন। এটা খুব কনট্রাডিকটরি (সাংঘর্ষিক)। কারণ একজন চলতি পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে নির্বাচনের মাঠে যাবে। আরেকজন মাঠ থেকে আসবে। বর্তমান এমপি তো চেষ্টাই করবে প্রশাসনকে তার পক্ষে রাখতে।’
এ ছাড়া আগামী নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করার ব্যাপারে জোরালো যুক্তি তুলে ধরবে বিএনপি। নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, অর্থ, তথ্য, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ইসির পূর্ণ এখতিয়ারে থাকার নিশ্চয়তা চায় দলটি। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যাদের রাজনৈতিক আনুগত্য রয়েছে তাদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার সুপারিশও থাকবে বিএনপির প্রস্তাবে।