খােলা বাজার২৪।মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৭: ২০১৭: মোঃ রাসেল মিয়া,নরসিংদী প্রতিনিধি : আকাশ মেঘলা, দু’টি হাত নেই , থেমে থাকেনি মেঘলার পথচলা। হাত নয় দু’টি পা দিয়ে ইচ্ছে শক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাট চুকাতে যাচ্ছে মেঘলা। ঘোড়াশাল ইউরিয়া সার কারখানা স্কুল এন্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী জান্নাত মেঘলা। ঘোড়াশাল সার কারখানার হিসাব বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিনের তিন মেয়ের মধ্যে মেঘলা সবার ছোট।
নরসিংদীর পলাশের আদর্শ শিশু নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সমাপনির মডেল পরীক্ষা দিচ্ছে মেঘলা। ১৫ অক্টোবর রবিবার সকালে সরেজমিনে পরীক্ষার কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, দু’পায়ে পরীক্ষার খাতা ভাঁজ করে তার পর ডান পায়ে কলম ধরে সাবলীল ভাবে লিখে যাচ্ছে। মেঘলা জানায়, প্রশ্ন ভাল হওয়ায় পরীক্ষাও ভাল হচ্ছে।
মেঘলার মা কেয়া আক্তার জানান, জন্ম থেকেই মেঘলার দুটি হাত নেই, তাই পা দিয়ে সে সব ধরনের কাজ সাবলীল ভাবে করতে পারে। ছোট বেলা থেকেই লেখাপড়ার প্রতি তার প্রবল আগ্রহ। সে কারো করুণা ও সহযোগিতা নয় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে অনার্সে পড়ুয়া বড় দুই বোনের অনুপ্রেরণা সে তার লেখাপড়া এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
ঘোড়াশাল ইউরিয়া সার কারখানা স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার জানান, মেঘলা শিশু শ্রেণি থেকে তার স্কুলে লেখাপড়া করছে। সে অত্যন্ত মেধাবী, বরাবরই সে প্রতিটি শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে আসছে। এছাড়া স্কুলের সাংস্কৃতিক ও রচনা প্রতিযোগীতায়ও সে প্রথম স্থান অধিকার করে। সে প্রতিষ্ঠানের মুখ উজ্জল করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন।
পলাশ উপজেলা শিক্ষা অফিসার সোহরাব হোসেন ভূইয়া জানান, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকার কর্তৃক পরীক্ষা কেন্দ্র অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় নির্ধারিত থাকলেও মেঘলার সেই সময় প্রয়োজন হয় না। সে নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট আগেই পরীক্ষা শেষ করতে পারে। তার মেধা ও সক্ষমতার কারণে একদিন সে তার লক্ষ্যে পৌছাবে।
মেঘলা জানায়, শারীরিক অক্ষমতার কারণে তার কোন সমস্যা হচ্ছে না। পরীক্ষা ভাল হচ্ছে, অন্যবিষয়ের পরীক্ষাও ভাল হবে বলে সে আশাবাদী। উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে ভবিষ্যতে মেঘলা ম্যাজিস্ট্রেট হতে চায়।