Wed. May 7th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। সোমবার,৩০ অক্টোবর ২০১৭: মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শিশুদের মানসিক ট্রমা থেকে বের করতে আনতে কক্সবাজার কাজ করছে কিছু ক্লাউনরূপী মানুষ। ক্লাউনের সাদা মুখে বসে থাকা সেই লাল নাকটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এমন কিছু আওয়াজ তৈরি করছে যা অন্য কোথাও পায়নি ক্লাউন সাজা মানুষগুলো। সেখানে কষ্টের বদলে এখন আছে একদল রোহিঙ্গা শিশুর উচ্ছ্বসিত হাসি।

কুতুপালং ক্যাম্পে মা ও তিন সহোদরের সঙ্গে বসবাস করে মোহাম্মদ নূর। যেখানে খাবার ও পানির সংকট প্রতিনিয়ত স্মরণ করিয়ে দেয় বেঁচে থাকার সংগ্রামগুলোকে। গত মাসে মিয়ানমার সেনাবাহিনী তার বাবাকে নৃশংসভাবে হত্যা করার পরে ১০ বছর বয়সী এই শিশুটি পালিয়ে আসে বাংলাদেশে। ক্লাউন দেখে খুবই উচ্ছ্বসিত সে এএফপিকে বলে, খুব মজা লেগেছে, আমি আগে কখনো এমন কিছু দেখিনি। বন্ধুদের সঙ্গে আমিও শুধু হাসছিলাম।

কোনো হতাশাজনক পরিস্থিতিতে ‘ড্রামা থেরাপি’ দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করে বাংলাদেশের কিছু থিয়েটার গ্রুপ। এর আগে ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের কারণে ১ হাজার ১শ’ পোশাক শ্রমিক নিহত হবার ঘটনাতেও তারা একই কাজ করে। তারপর মীরসরাই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় অর্ধশত শিশু মারা যাওয়ার ঘটনার পরেও একইভাবে কাজ করে ওই দলটি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অনেক অসুস্থ ও পরিবার পরিজন হারিয়ে ক্ষতবিক্ষত মানুষগুলোর জন্য হাসিই সবচেয়ে বড় ওষুধ এমনটাই মনে করে এই দলটি।

ক্লাউন দলের একজন সদস্য রিনা আক্তার পুতুল বলেন, আমাদের লক্ষ্য রোহিঙ্গাদের মুখে হাসি ফোটানো। তবে মানুষের মুখে হাসি ফোটানো খুব কঠিন কাজ বিশেষ করে তাদের মুখে তারা সংঘর্ষে তাদের বাবা-মাকেও হারিয়ে ফেলেছে।

২৫ আগস্টের পরে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে ৬ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। সেবা সংস্থাগুলোর বক্তব্য, এসব শিশুদের মানসিক সমর্থন দরকার যেন তারা এই ভয়াবহ সময়ের ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।

দশকব্যাপি কাজ করা এই দলটির আরেক সদস্য ফকির আলি বলেন, আমি নিশ্চিত এই শো কিছুসময়ের জন্য তাদের স্মৃতিকে উজ্জীবিত করবে। এটা হয়তো তাদের ভয় দূর করবে না কিন্তু তাদের আরো আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।

তবে শুধু শিশুরাই নয় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ক্লাউনদের শো উপভোগ করেছেন ক্যাম্পের বড় সদস্যরাও।