Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

 

খোলাবাজার২৪ঃ শুক্রবার ২৫মে, ২০১৮ঃ  রাজধানীর ফ্যাশন বাজারে ঈদের পোশাক-আশাক এসে গেছে। এবার বাজারে গরম ও বৃষ্টি দুয়ের প্রভাব পড়েছে। সময়ে, অসময়ে বৃষ্টির কারণে এবার বাজার জমতে সময় নিচ্ছে। আবার পোশাকের কাটছাঁট, রং ও নকশায় আবহাওয়ার প্রভাবকে আমলে নিয়েছেন বিক্রেতারা। তাঁদের আশা, আজ শুক্রবার থেকে ঈদের বাজার জমে উঠবে।
বিক্রিবাট্টা একেবারে মন্দা, তা বলা যাবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার বিপণিবিতানগুলো ঘুরে দেখা গেল, যাঁরা আসছেন, খুঁজছেন বৈচিত্র্য। বিক্রেতারা তাই দেশীয় ফ্যাশনধারার নানা রঙের কাপড়ের মিশ্রণধর্মী পোশাকের সম্ভার রেখেছেন। এ ধারা শুধু মেয়েদের থ্রিপিসে বা শাড়িতে নয়, ছেলেদের পাঞ্জাবিতেও।

নগরের অভিজাত বিপণিকেন্দ্র থেকে শুরু করে শাহবাগের আজিজ মার্কেটসহ মিরপুর রোড, সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, বনানী, ওয়ারী, মিরপুর, গুলশানের বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন দেশীয় ফ্যাশন হাউস ও বুটিকগুলোতে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের উপস্থিতি দেখা গেছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় ফ্যাশন হাউসগুলোর কাটিং, নকশা, কাজে পরিশীলিত ভাবটাকেই তাঁরা বেশি পছন্দ করছেন।

অঞ্জন’স-এর প্রধান নির্বাহী ও ডিজাইনার শাহীন আহমেদ বলেন, দেশীয় তাঁতের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও ঈদের সময়টা গরমের মধ্যে পড়ায় দেশীয় বুনন ও নকশাসমৃদ্ধ পোশাকের প্রতি ক্রেতারা ঝুঁকছেন বেশি। এ চিন্তা থেকেই এবার তাঁরা মেয়েদের পোশাকের কটন, ভয়েল, জর্জেট কাপড়ের দিকে নজর দিয়েছেন। আর ছেলেদের ক্ষেত্রে এমব্রয়ডারি রেগুলার ফিট, লং পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি।

কয়েকটি ফ্যাশন হাউস ঘুরে দেখা গেছে, মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রে নীল, সবুজ, ম্যাজেন্টা রঙের সঙ্গে লাল, হলুদ, কমলা, মেরুন, গেরুয়া, বাদামি ও সাদার বিভিন্ন শেড ব্যবহার করেছেন ডিজাইনাররা। একরঙা নয়, বরং সালোয়ার ওড়না একরঙা, জামা আরেক রঙা। কাপড়ের মধ্যে অ্যান্ডি কটন ও সুতি এবং তাঁত, কাজের মাধ্যম হিসেবে এমব্রয়ডারি, চুমকি, কারচুপির কাজ, জামায় কাঠের বোতাম দেখা গেছে। শাড়ির বেলায় নকশিকাঁথার সেলাই, চুমকি, এমব্রয়ডারি, কারচুপির কাজের সঙ্গে পাড় আঁচলে একটু ভিন্ন নকশা করা শাড়ি দেখা গেছে।

ফ্যাশন হাউস রঙ বাংলাদেশ-এর প্রধান নির্বাহী সৌমিক দাসও গ্রীষ্মের বিষয়টি উল্লেখ করলেন। বললেন, গরমের কথা বিবেচনা করে কাপড় বাছাই করেছেন। বেশি নিরীক্ষায় না গিয়ে ন্যাচারাল ফ্যাব্রিক নিয়েই কাজ হয়েছে। এ ছাড়া তিনটি থিম নিয়ে এবার ঈদের পোশাক আয়োজন সাজিয়েছেন তাঁরা—ইসলামিক নকশা, জ্যামিতিক নকশা ও ফুলেল নকশা। এতেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে উৎসবের আবহ।
গৃহিণী জাকিয়া মৌসিতা এসেছিলেন ওয়ারীর নবরূপায়। তিনি বলেন, ‘দেশি সালোয়ার-কামিজের একটি আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে, তা হলো এটি গতানুগতিক হয় না। পরতেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। তাই ঈদের জন্য তেমন পোশাকই খুঁজছি।’

কে-ক্র্যাফটের উদ্যোক্তা খালিদ মাহমুদ খান ঈদের বাজারে প্রথম দিকে নারী, শিশু এবং শেষের দিকে এসে ছেলেদের পোশাকের চাহিদা বাড়ে, এমন তথ্য দিয়ে বলেন, ‘বৃষ্টি ও গরম—দুটোকেই প্রাধান্য দিয়ে আমরা ঈদের সম্ভার সাজিয়েছি। নারীর জন্য ঈদের দিনে ঘরে পরার বা আশপাশে ঘুরে বেড়ানোর পোশাক ছাড়াও পার্টিতে যাওয়ার পোশাক আছে।’
সৌমিক দাসের মতে, সারা বছর যে কষ্ট, পরিশ্রম আর মেধার চর্চা করা হয়, ঈদে তার ফল পাওয়া যায়। কেননা ঈদই দেশীয় ফ্যাশন হাউসের সবচেয়ে বড় বাজার।
নিপুণ, কে-ক্র্যাফট, অঞ্জন’স, রঙ বাংলাদেশ, বাংলার মেলা, সাদাকালো, বিবিআনা, দেশাল, নগরদোলা ও সৃষ্টি—এর সমন্বয়ে গঠিত দেশি ফ্যাশন হাউসের প্ল্যাটফর্ম দেশী দশ-এর সমন্বয়কারী ইয়ামিন পারভেজ বলেন, আবহাওয়ার কারণে রমজানের প্রথম সপ্তাহটা তেমন জমেনি। আজ শুক্রবার থেকে ঈদের মূল কেনাকাটা শুরু হবে। আজ থেকে বোঝা যাবে, এবারের বাজার কোন দিকে যাচ্ছে।