খোলা বাজার ২৪, শুক্রবার ১২ অক্টোবর ২০১৮ঃ আওয়াল হোসেন,বানারীপাড়া প্রতিনিধি: বানারীপাড়া উপজেলা ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেকের পার্শ্ববর্তী আলোচিত সেবা সদন ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় ৪ দিনের এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্লিনিকের সৃষ্টিলগ্ন থেকেই এর বিরুদ্ধে একের পর এক দূর্ঘটনা ঘটেই চলছে এরকম অভিযোগ পাওয়া গেছে শতশত। এবার ওই ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মুত্যুর অভিযোগ করলেন তার পিতা জয়দেব রায়।
১১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই নবজাতকের লাশ নিয়ে তার স্বজনরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ কাছে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এসময় নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের থানায় অভিযোগ করতে বলেন।
এসময় নবজাতকের পিতা জানান থানায় অভিযোগ করতে গেলে তারা শিশুর ময়নাতদন্ত ছারা অভিযোগ নিতে অসীকৃতি জানান। যদিও নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করে ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
পরে নবজাতকের স্বজনরা ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসী সেবা সদন ক্লিনিকের সামনে বিক্ষোভ করেন। বানারীপাড়া বন্দর বাজারের জনতা ডেকোরেটরের মালিক জয়দেব রায় জানান তার স্ত্রী সরস্বতীর প্রসব বেদনা উঠলে গত রবিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.কবির হাসান’র সাথে মুঠোফোনে কথা বলেন।
ডা. কবির হাসান তার স্ত্রীকে সেবা সদন ক্লিনিকে ভর্তি করার পরামর্শ দেন বলে জানান জয়দেব। ভর্তি হবার কিছু সময় পরেই সেবা সদন ক্লিনিকে ডা. কবির হাসান সরস্বতীর সিজারিয়ান অপারেশন করেন।
এখানেই সর্ষের মধ্যে ভূত তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হওয়া সত্যেও কেন ওই প্রসূতি মাকে পাশ্ববর্তী ক্লিনিকে নিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করালেন। অভিযোগ রয়েছে ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনে তারা ৪০% পেয়ে থাকে।
এদিকে জয়দেবের স্ত্রী সরস্বতীর একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন গত ৭ তারিখ সকাল আটটায় । জানা গেছে চিকিৎসকের পরামর্শে সোমবার ক্লিনিকের হাতুড়ে নার্স রুমা আক্তার ওই নবজাতকের ডান পায়ে গোপনাঙ্গের কাছে মেক্সাম-২৫০ নামের একটি এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন পুশ করেন।
অদক্ষ ওই নার্স নির্ধারিত স্থানের পরিবর্তে নিচের দিকে ইনজেকশনটি পুশ করলে সেখানে শক্ত গোটার মতো হয়ে লালচে আকার ধারণ করে ও ইনফেকশন হয় । তারপর থেকেই ওই নবজাতক শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে।গত মঙ্গলবার ক্লিনিকের সামনের একটি ফার্মেসীতে ডা. গিয়াস উদ্দিন খানের শরণাপন্ন হলে তিনি ওই নবজাতকের চিকিৎসা করেন। কিন্তু তাতেও শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হয়ে অবনতি ঘটলে নবজাতক শিশুটিকে বুধবার রাত সাড়ে ৩টায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নবজাতকের পিতাকে বলেন ইনজেকশন ভূল যায়গায় পুশ করা হয়েছে এই শিশু তাদের পক্ষে বাচানো সম্ভব নয় পরে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় নবজাতকের মৃত্যু হয়।
এদিকে নবজাতকের পিতা জয়দেব রায় ও তার স্বজনদের অভিযোগ সঠিক স্থানে ইনজেকশন পুশ না করায় ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে এলাকার প্রভাবশালী মহলের নেতৃত্বে ভুক্তভোগী নবজাতকের পিতা জয়দেব'কে নিয়ে গতকাল সকাল ১১ টায় সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে ব্যপারটি ঢামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
বৈঠকে নবজাতকের পিতাকে খরচ বাবদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে চেপে যেতে বলেন বলে নবজাতকের পিতা জানান কিন্তু নবজাতকের পিতা খরচ নিতে অসীকৃতি জানান ও বলেন তার শিশুর রক্তের দাম সে নিতে পারবেনা তবে হাতুড়ে নার্স রুমা আক্তার সহ সংশ্লিষ্ট সবার কঠোর শাস্তি চায় ও ওই মুহুর্তে ঐ নার্সকে বহিস্কারের দাবী জানান ।
তখন প্রভাবশালী মহল পাচঁ দিনের মধ্যে ঐ নার্সকে বহিস্কার করবেন বলে আশস্ত করেন বলে নবজাতকের পিতা জানান। এদিকে অভিযোগ রয়েছে সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে কিভাবে সরকারি হাসপাতালের সংলগ্নে ক্লিনিক চলছে যাহা নিয়ম বহির্ভূত।
এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে সরকারি হাসপাতালের রোগীদের পার্সেন্টটিসের বিনিময়ে ক্লিনিকে রোগীদের রেফার করা হয় যাহার ফলস্রুতিতে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কম্পেলেক্স ও সেবা সদন ক্লিনিকের রাস্তায় মাঝে মাঝে বাচ্চা ডেলিভারি হয়ে যায়।
ক্লিনিকের মালিক সুলতান হোসেন মোল্লাকে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ক্লিনিকের সামনের সাইনবোর্ডে ইউনাইটেড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের সাইনবোর্ড যেখানে সেবা সদন নার্সিং হোমের কোন সাইনবোর্ড নেই তবে পিছনের দিকে গিয়ে দেখা বিল্ডিংয়ের দেয়ালে লেখা সেবা সদন নার্সিং হোম তবে এই রহস্যের উন্মোচন এখনো করা যায়নি। তবে পিছনের দিকে দেখা যায় ডাষ্টবিনের ময়লার স্তুপ ও অপরিচ্ছন্ন ও দূর্গন্ধযুক্ত পরিবেশ।