Wed. Apr 23rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


খোলা বাজার ২৪, শনিবার  ২৭ অক্টোবর ২০১৮ঃ  বাংলাদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে ভারতের একটি আদালত অবৈধভাবে সে দেশে প্রবেশের দায় থেকে মুক্তি দিয়েছে। তাকে নিজের দেশ, বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে পুলিশকে। তবে কতদিনের মধ্যে সেই রায় কার্যকর করতে হবে, তা নির্দিষ্ট করে কিছু জানায় নি আদালত।

বাংলাদেশে অপহৃত হওয়ার বেশ ক’মাস পর হঠাৎ করেই ২০১৫ সালের ১১ই মে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ের গল্ফ লিঙ্ক এলাকায় ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ মি. আহমেদকে দেখতে পাওয়া যায়।

শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) রায়ের পরে মি. সালাহ উদ্দিন আহমেদ শিলং থেকে টেলিফোনে জানিয়েছেন, ‘আমি মনে করছি যে ন্যায়বিচার পেয়েছি আদালতের কাছ থেকে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। তারা আমার চিকিৎসা থেকে শুরু করে সব বিষয়ে সহযোগিতা করেছেন। এখন যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ হলেই আমার পক্ষে ভাল। আমি দ্রুত দেশের মানুষের কাছে ফিরতে চাই।’

শিলংয়ের যে এলাকায় তাকে প্রথম দেখা গিয়েছিল, সেখানে প্রাত:ভ্রমণকারী ক’জনকে জিজ্ঞাসা করে তিনি জানতে পারেন যে তিনি শিলংয়ে। পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন ওই প্রাত:ভ্রমণকারীরাই।

কিন্তু যখন তিনি পুলিশের কাছে দাবি করেছিলেন যে তিনি বাংলাদেশের প্রাক্তন মন্ত্রী, এবং তাকে কয়েকজন চোখ বাঁধা অবস্থায় সেখানে ফেলে রেখে গেছে।

পুলিশ অফিসারেরা এই কথা শুনে ভেবেছিলেন তিনি মানসিক রোগী। তাই প্রথমে তাকে একটা সরকারি মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গ্রেফতারও করা হয় সেদিনই – ভারতে প্রবেশের বৈধ কাগজপত্র না থাকায়। প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে বিবিসি বাংলা।

ওই প্রতিবেদনে আরও তুলে ধরা হয় বেশ কিছুদিন তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন শিলংয়ের সরকারি হাসপাতাল। কয়েকমাস পরে তিনি জামিন পান, কিন্তু তাকে শিলং ছাড়তে নিষেধ করা হয়েছিল।

জামিন পাওয়ার পর থেকেই শিলংয়েই থাকছেন মি. আহমেদ। তবে চিকিৎসার প্রয়োজনে আদালতের অনুমতি নিয়ে দিল্লিতেও গিয়েছেন মি. আহমেদ।

মি. আহমেদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, দেশে ফিরে কী আবার রাজনীতিতেই যোগ দেবেন?

তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনীতির মানুষ, তাই রাজনীতিতেই সব সময়েই আছি – সে আমি পৃথিবীর যে দেশেই থাকি না কেন। বর্তমানে দেশে যে গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলন চলছে, তার সাথেই সবসময়ে আছি।’

আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করারও পরিকল্পনা রয়েছে তার, কিন্তু সেটা নির্ভর করবে কত দ্রুত তাকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, তার ওপরে।

পুলিশ বলছে, নিয়ম অনুযায়ী কোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পরে তারা সবথেকে কাছের বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করবে মি. আহমেদের ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য।

তারপরে পুলিশ ডাউকি সীমান্তে নিয়ে গিয়ে হস্তান্তর করবে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কাছে। তারা মি. আহমেদকে তুলে দেবে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডসের হাতে।

তবে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক আর. পি. আগরওয়াল জানিয়েছেন, তারা এখনও আদালতের নির্দেশ হাতে পান নি। সেটা দেখার পরেই তাঁরা বুঝতে পারবেন যে আদালত ঠিক কী নির্দেশ দিয়েছে সালাহ উদ্দিন আহমেদের ব্যাপারে।

যদিও আজ ভারতে অনুপ্রবেশের দায় থেকে মুক্ত হলেন মি. আহমেদ, তবে এটা এখনও অস্পষ্টই থেকে গেল যে বাংলাদেশে অপহৃত হওয়ার পরে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর নজর এড়িয়ে কারা তাকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মেঘালয়ের রাজধানীতে নিয়ে এসে ফেলে রেখে গিয়েছিল।