বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের মধ্যে নেই নেতৃত্ব দেয়ার মতো কোনো শিক্ষক নেতা। এই নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে আওয়ামীলীগপন্থি নীলদলের দুই গ্রুপের শিক্ষকরা । প্রার্থীরা একত্রে প্রত্যেক বিভাগে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ ।
এবার নির্বাচনে সভাপতি, সহ-সভাপতি, কোষাধ্যক্ষ, সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক পদে একজন করে এবং নির্বাহী পরিষদের সদস্য পদে ১০ জনসহ মোট ১৫টি পদে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, জবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে মোট ভোটার রয়েছেন ৬৫৪ জন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, নেতৃত্বে না থাকলেও নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন সাদা দলের শিক্ষকরা। এবার সাদা দলের ১০৯ জন সদস্য নির্বাচনে ভোটার তালিকায় আছে। মাঠে নিস্ক্রিয় থাকলেও ভেটের মাঠে সক্রিয় থাকবে বলে জানা যায়।
নির্বাচনে অংশগ্রহন নিয়ে কোন কথা বলেতে রাজি হননি সাদা দলের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ মোশারফ হোসেন। এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীলীগপন্থি শিক্ষদের নীল দলের দুই অংশ দুটি প্যানেলে নির্বাচন করেছেন। আওয়ামীপন্থি নীল দলের(একাংশ) সভাপতি ড. আইনুল ইসলামের পক্ষ থেকে জাকীর-আলীম প্যানেল । অপরদিকে নীলদলের(অপর অংশ) সভাপতি ড. জাকারিয়া মিয়ার পক্ষ থেকে দীপিকা-নূর প্যানেল ঘোষণা করেছেন।
জাকীর-আলীম প্যানেল থেকে নির্বাচন করছেন সভাপতি পদে অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবদুল আলীম , সহসভাপতি ড. রবিন্দ্রনাথ মন্ডল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের, কোষাধ্যাক্ষ ড. মো. ছিদ্দিকুর রহমান। এছাড়াও সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন ড. মো. আইনুল ইসলাম, ড. একেএম মনিরুজ্জামান, ড.মো. আব্দুল হোসেন, ড. মোহাম্মদ সৈয়দ আলম, ড.একেএম লুৎফর রহমান, ড. সিদ্ধার্থ ভৌমিক, মোঃ কামাল হোমেন, গৌতম কুমার সাহা, ও আব্দুল আউয়াল।
অন্যদিকে, দীপিকা-নূর প্যানেল থেকে নির্বাচন করছেন সভাপতি পদে অধ্যাপক ড. দীপিকা রানী সরকার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপকড. শাসছুল কবীর। সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন ড. মো গোলাম মোস্তফা, ড. মো. মনিরুজ্জামান খন্দকার . ড. মো. মনিরা জাহান, ড. আব্দুস সালাম, নিয়াজ আলমগীর , রাবিতা সাবাহ, মোকারক হোসেন, মিতু কুন্ডু, মাসুদ রানা ও মেফতাহুল হাসান নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।
এদিকে সাদা দলের শিক্ষকদের ভোট নিয়ে নীল দলের দুই গ্রুপের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘সাদা দলের শিক্ষকরা যাকে নির্বাচন করতে চাইবে তারাই নেতৃত্বে আসবে।’ তিনি বলেন, ‘এবার ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব চান শিক্ষকরা। যারা শিক্ষকদের দাবি আদায়ের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাবেন। অপরাজনীতি থেকে বেড়িয়ে এসে সঠিকভাবে যারা নেতৃত্ব দিতে পারবেন, তাদেরকেই নির্বাচন করবেন শিক্ষকরা।’
জানা যায়, কমিটিতে কিছু শিক্ষক নিজের স্বার্থ হসিলের জন্য লবিং-তদবির করে নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছেন। এদিকে আওয়ামীলীগপন্থি শিক্ষদের আদর্শ এক হলেও ভিন্ন মতের কারণে তাদের মাঝে রেষারেষি বিরাজ করছে। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের দু’গ্রুপ পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠন করে। সিনিয়র শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত নীল দলের (এক অংশের) সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম ও জুনিয়র শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত নীল দলের (অপর অংশ) নেতৃত্বে আছেন অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়া।
নীল দলের বিভাজন নিয়ে উপাচার্যের হাত আছে বলে গুঞ্জন আছে । শিক্ষক সমিতির নির্বাচনেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন কয়েকজন শিক্ষক। নীলদলেরে(একাংশ) জাকীর-আলীম প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আব্দুল আলীম বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শক্তি। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ও শিক্ষকদের উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য কাজ করে যাব।’
নির্বাচন নিয়ে নীলদলের(অপর অংশ) দীপিকা নূর প্যানেলের সম্পাদক পদ প্রাথী নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা জয়লাভ করলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি মানসম্মত আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর ও শিক্ষকদের সকল সুবিধা নিশ্চিত করব।’