বিএসএফ-এর দিক থেকে আত্নরক্ষার্থে গুলি চালানোর কথা বলা হলেও বাংলাদেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা সেটিকে ‘অযৌক্তিক’ বলে বর্ণনা করছেন।
সর্বশেষ সোমবার (২৯ জানুয়ারি) ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সোহেল রানা বাবু (১৮) নামের এক বাংলাদেশি যুবক মারা যান। এ নিয়ে গত ১০ দিনে বিএসএফের গুলিতে ঠাকুরগাঁও সীমান্তে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ালো তিনজনে।
এর আগে ১৮ জানুয়ারি রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর গুলিতে রাণীশংকৈল উপজেলার শাহানাবাদ গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম রাজু (২১) ও ২২ জানুয়ারি হরিপুর উপজেলার মিনাপুর সীমান্তে উপজেলার ডাঙ্গীপাড়া ইউনিয়নের তালডাঙ্গী গ্রামের আব্দুল তোয়াফের ছেলে জেনারুল (১৮) নিহত হয়।
এছাড়া গত ২৪ জানুয়ারি রাজশাহীর গোদাগাড়ীর চর আষাড়িয়াদহ সীমান্তে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে জামাল নামে এক বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়েছেন।
বিজিবি’র ঠাকুরগাঁও ৫০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মোহা. মাসুদ বলেন, সম্প্রতি কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রেক্ষিতে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ বলছে, প্রতিটি ঘটনাতেই নিরস্ত্র বাংলাদেশিরা নিহত হয়েছেন। বিএসএফের গুলিতে যখনই কোনো বাংলাদেশি নিহত হয় তখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাকে গরু চোরাচালানকারী হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা দেখা যায়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার অনেক মানুষের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।
সংগঠনটির অভিযোগ- গরু চোরাচালানের সাথে ভারতীয়রা জড়িত থাকলেও গুলিতে কেবল বাংলাদেশিরাই নিহত হচ্ছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, আত্মরক্ষার জন্য বিএসএফ-র দিক থেকে যে ব্যাখ্যা দেয়া হয় সেটি যৌক্তিক নয়। সীমান্তে প্রাণঘাতি অস্ত্র ব্যবহার সম্পর্কে বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও বিএসএফ সেটিকে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছে না। বিশ্বাসযোগ্য অজুহাত ছাড়া তারা প্রায়ই বলে আত্নরক্ষার্থে তাদের গুলি করতে হয়।
বেসামরিক মানুষকে মোকাবেলার জন্য যদি গুলি করতেও হয় তাহলে এমন জায়গায় সেটি করতে হবে যাতে প্রাণহানি না হয় বলেও মন্তব্য তাদের।