সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া বৈঠকে দেশের আর্থিক ঘাটতি দুর্নীতি, প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি কমে আসার মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা নুতন নয়। পূর্ব অভিজ্ঞতার কারণেই দেশের মানুষের মনে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছে ঐ বৈঠককে কেন্দ্র করে। কূটনীতিকদের মধ্যেও এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে বারবার।
পাকিস্তানের ইতিহাসে সরকারের চেয়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা অনেক বেশি। কাশ্মীরের পক্ষ নিয়ে ইমরান খান নিজের দেশেই বিরোধের মুখোমুখি। এ অবস্থায় বেহাল অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠেছে সামরিক বাহিনী।
করাচি ও রাওয়ালপিন্ডির সামরিক দফতরে চলতি বছর এমন তিনটি বৈঠক ইতোমধ্যেই হয়ে গেছে বলে একটি সূত্র দাবি করেছে।
সূত্রটি জানিয়েছে, বৈঠকে বাজওয়া শিল্প মহলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে প্রশ্ন করেছেন, কীভাবে বিনিয়োগ বাড়ানো যায় এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা যায়। বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত কার্যকর করার নির্দেশও পৌঁছে গেছে সরকারি শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে।
ওই বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্তব্য করতে চাননি সেনা মুখপাত্র আসিফ গফুর। যদিও পাক সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বুধবার বাজওয়া শীর্ষস্থানীয় বেশ কিছু শিল্পপতি ও আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছেন। বিবৃতিতে বাজওয়া বলেছেন, অর্থনীতির সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
বেহাল অর্থনীতির প্রভাব পড়েছে পাক সেনাবাহিনীতে। এক দশকের মধ্যে এই প্রথম ২০২০’র আর্থিক বর্ষে প্রতিরক্ষা খাতে কোনো বৃদ্ধিই হয়নি। সামরিক প্রধানের ভূমিকাকে পাকিস্তানের শিল্পপতি এবং আর্থিক উপদেষ্টারা স্বাগত জানিয়েছেন বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
তাদের অনেকেই বলছেন, ব্যবসায়ীরা ইমরান খানের দলকে ততটা যোগ্য মনে করছেন না। তবে অনেকের মতে, সেনাবাহিনীর গুরুত্ব বেড়ে গেলে পাকিস্তানে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে।
বাজওয়ার ওই বৈঠককে অবশ্য ততটা গুরুত্ব দিতে চাইছে না পাক অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওমর হামিদ খান বলেছেন, অর্থনীতি নিয়ে সেনা প্রধানের ধারণা থাকতেই পারে।
তবে আমাদের মনে হচ্ছে না, এ ক্ষেত্রে কোনও ধরনের সামরিক হস্তক্ষেপ ঘটেছে। তারা তাদের মতো কাজ করছে, সরকার সরকারের মতো।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও এর আগে বলেছেন, সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার সরকারের কাজ করতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। তিনিই ৫৮ বছর বয়সী বাজওয়াকে গত আগস্টেই আরও তিন বছরের জন্য পদে বহাল রেখেছেন।
যদিও বাজওয়া প্রাথমিকভাবে দায়িত্বের মেয়াদবৃদ্ধিতে আগ্রহী ছিলেন না।