বরেণ্য এই লেখক ‘আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপ রে’, ‘একদিন তোর হইব রে মরণ রে হাছন রাজা’, ‘মাটির পিঞ্জিরার মাঝে বন্দি হইয়ারে কান্দে হাছন রাজা মন মনিয়া রে’, ‘প্রেমের বান্ধন বান্ধরে দিলের জিঞ্জির দিয়া’, ‘রঙের বাড়ই রঙের বাড়ই রে’, ‘আমি না লইলাম আল্লাজির নাম রে’, ‘লোকে বলে বলেরে, ঘরবাড়ি ভালানা আমার’, ‘গুড্ডি উড়াইল মোরে, মৌলার হাতের ডুরি’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় ও কালজয়ী গান লিখে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন।
হাছন রাজার বাবা দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরীও ছিলেন প্রতাপশালী জমিদার। হাছন রাজা তার তৃতীয় ছেলে। মার নাম ছিল হুরমত বিবি। হাছনের পূর্বপুরুষের অধিবাস ছিল ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায়। বংশ পরম্পরায় তারা হিন্দু ছিলেন। হাছন রাজার গানের মাঝে অন্তর্নিহিত রয়েছে নশ্বর জীবন, স্রষ্টা এবং নিজের কৃতকর্মের প্রতি অপরাধবোধের কথা।
১৯০৭ সালে তার রচিত ২০৬টি গান নিয়ে একটি সংকলন প্রকাশিত হয়। এ সংকলনটির নাম ছিল ‘হাছন উদাস’। এর বাইরে আরও কিছু গান ‘হাছন রাজার তিনপুরুষ’ এবং ‘আল ইসলাহ্’সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
১৯২২ সালের ৬ ডিসেম্বর মরমি এই সাধক মৃত্যুবরণ করেন। সুনামগঞ্জের লক্ষণশ্রীতে মায়ের কবরের পাশে কবর দেওয়া হয় তাকে। তার কবরটি তিনি মৃত্যুর আগেই নিজে প্রস্তুত করেছিলেন।
মরমি এই সাধকের জন্মদিনে তেমন কোনো আয়োজন নেই সুনামগঞ্জে। তবে হাছন রাজা ট্রাস্টের আয়োজনে ৩ জানুয়ারি হাছন রাজার গান, গানের সঙ্গে নৃত্য ও হাছন রাজার ছবি বা সৃষ্টিকর্ম নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।