নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলাধীন মিরওয়ারীশপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত রইছ উদ্দিন এর ছোট ছেলে মোঃ ফয়েজ উদ্দিন টঙ্গীর আশরাফ সেতু মার্কেটে তেরীকৃত পোষাকের ব্যবসা শুরু করেন ২০১৬ সালে। সেখানে থেকে ব্যবসা চলাকালীন সময়ে সৌদি আরব এবং ফিলিপাইনে পোশাক রপ্তানি শুরু করেন। যেহেতু তার কোনো রপ্তানি লাইসেন্স ছিলোনা সে সুবাদে নাজমুল হয়দার ভূইয়া বুলবুল NHB Corporation, 28/G/1 Toynbee circular road, Motijheel, Dhaka এর সাথে আলোচনার মাধ্যমে রপ্তানি শুরু করেন। এক পর্যায়ে ক্রতার সাথে সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে লোকসানের মুখে পড়ে ব্যবসা। এতে কারখানা এবং রপ্তানি ব্যয় বাবদ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে দীর্ঘ চার মাস দাওয়াতে তাবলীগের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। দীর্ঘ চার মাস পরে বাড়িতে আসলে নাজমুল হায়দার ভূইয়া বুলবুল ফয়েজ উদ্দিন এর পরিবারের উপর চাপ প্রয়োগ করে তার বিমান ভাড়া বাবদ ১,৮০,০০০ টাকার জন্য। ধর্মে পুরোপুরি প্রবেশ করা ফয়েজ উদ্দিন এর পক্ষে টাকা পরিশোধ করার মতো কোনো সক্ষমতা ছিলোনা। এক সময়ে ফয়েজ উদ্দিন কে প্রস্তাব দেওয়া হয় পৈতৃক সম্পত্তি তাদের লিখে দিতে। পরে যখন টাকা হবে তখন আবার ফেরত নিতে পারবে। ধর্মে মনোনিবেশ করা ফয়েজ উদ্দিন তখন সহজ সরল মনে তার বোনকে বিশ্বাস করে বোনের নামে হেবা দলিল করে। তখন সে ছিলো অবিবাহিত। বর্তমানে ফয়েজ উদ্দিন এর একটা মেয়ে। মেয়ে সহ স্ত্রীকে নিয়ে এখানে সেখানে থাকতে হয়। স্ত্রী আর সন্তানকে নিয়ে যখন বাড়িতে যায় তখনই তাকে বলে দেওয়া হয় তোমার কিছু অবশিষ্ট এখানে নাই। তার স্ত্রী সন্তানকে তার পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে। খোজ নিয়ে জানা যায়, কিছু দিন পূর্বে তার বোন তার স্বামী নাজমুল হায়দার ভূইয়া বুলবুল এর নামে দলিল করে দেয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তার বোন জানায় তার স্বামী নাজমুল হায়দার ভূইয়া বুলবুল এবং তার পরিবার তাকে চাপ দিয়ে নতুন দলিল বানিয়েছে। ফয়েজ উদ্দিন তার জমি ফেরত চাইলে তারা তাকে এবং তার সন্তানকে মারার হুমকি প্রদান করে। ফয়েজ উদ্দিন জানান এই বিষয়ে আমি সমাজ এবং আইনি দুই ভাবে পদক্ষেপ নিবো।
নাজমুল হায়দার ভূইয়া বুলবুল এর বিষয়ে খোজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৬ সালে তার বিরুদ্ধে হিরোইন পাচারের মামলা ছিলো এবং সেই মামলায় ৫ বছর জেল খানায় থেকে বর্তমান সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্তীর স্ত্রীর সৌজন্যে জামিনে বের হয়ে আসে। উক্ত মামলাটি ছিলো তৎকালীন সময়ের “বিডি ফুডের হিরোইন পাচার” শিরোনামের চাঞ্চল্যকর মামলা। এই মামলায় বিডি ফুডকে নাজমুল হায়দার ভূইয়া বুলবুল নানাভাবে পাশানোর চেষ্টা করেছিলো। বর্তমানে খোঁজ নিয়ে জানা যায় সে NHB Corporation, RB Food এবং Bhuyian Corporation এই তিন প্রতিষ্ঠানের নামে আলাদা আলাদা রপ্তানি করে। তার নিজস্ব কোনো কৃষি খামার না থাকা স্বত্তেও বিদেশি বায়ারদের কৃষকের খামার দেখিয়ে অর্ডার কালেকশন করে পরবর্তী সময়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এবং কারওয়ান বাজার থেকে সবজি কিনে শ্যমপুর কৃষি রপ্তানি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সবজি রপ্তানি করে আসছে। যেখানে সোনালী ব্যাংক বৈদেশিক বানিজ্য শাখার দুজন অসাধু কর্মকর্তাও জড়িত। নাম না প্রকাশ করা শর্তে তার একজন সাপ্লায়ার দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আগে মাল দিয়ে আটকে গেছি ভাই অনেক টাকা আটকে গেছে। এখন যদি মাল সাপ্লাই না দেই তাহলে আগের টাকা দিবেনা বলে হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে মাল ধার দেনা করে মাল সাপ্লাই দেই। মাল দেওয়ার পরে নানান অজুহাত দিয়ে সেই টাকাও ঠিক মতো দেয়না। মাল দেই ৫০-৬০ হাজার টাকার। কিন্তু আমাকে দেয় ৮-১০ হাজার টাকা করে। যা দিয়ে আড়তদারের গালিগালাজ ছাড়া কিছু পাইনা। প্রতিটা বিলের শেষে আরো টাকা কর্তন করে।
এভাবেই নিঃস্ব করে দিচ্ছে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। প্রতারকের প্রতারণা যেন থামছেইনা। সর্বশেষ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের শেষ সম্বল কেড়ে নেওয়ার নীল নকশা কষে রেখেছে। শেষ করনীয় সম্পর্কে ফয়েজ উদ্দিন এর কাছে জানতে চাইলে ফয়েজ উদ্দিন জানান, আমার এখন অর্থ সংকট তাই পদক্ষেপ নিতে একটু সময় লাগবে। দেশের প্রচলিত প্রতারণা মামলায় প্রতারণার যে যে পদক্ষেপ আদালত নিতে বলবে আমি সেই সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। প্রয়োজনে প্রধান মন্তীর দপ্তরের সরাসরি হস্তক্ষেপ এর মাধ্যমে আমি আমার উত্তরাধিকার সম্পত্তি ফেরত নিবো। প্রচারকদের প্রতারণার শাস্তি ভোগ করতেই হবে।