Sun. May 18th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

২৭জুলাই খোলাবাজার অনলাইন ডেস্ক : এক দিন পিছিয়ে ফের আগামীকাল শুক্রবার একই দিনে রাজধানীতে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন ও বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার উভয় দলের এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে বুধবার দিনভর নাটকীয়তার পর রাতে প্রায় একই সময় উভয় দল এক দিন পিছিয়ে একই দিনে সমাবেশের নতুন তারিখ ঘোষণা করে।

যে সংঘাত এড়াতে দুটি দলের আজকের সমাবেশস্থলের ভেন্যু বদলানোর পরামর্শ দিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ- অবশেষে সেই সংঘাতের দিকেই গড়ালো রাজনৈতিক পরিস্থিতি।

এদিকে একই দিনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ ডাকা নিয়ে রাজধানীজুড়ে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ায় সংঘাত এড়াতে উভয় দলকে ভেন্যু বদলানোর পরমর্শ দেয় পুলিশ। বিএনপিকে বলা হয় ঢাকার গোলাপবাগে মহাসমাবেশ করতে। আর আওয়ামী লীগকে পরামর্শ দেওয়া হয়- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে সমাবেশ করতে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনুমতি না দেওয়ায় আওয়ামী লীগ বেছে নেয় আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠ। ওই মাঠ পরিদর্শনও করে একটি প্রতিনিধি দল।

অন্যদিকে বুধবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সমাবেশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানায় বিএনপি। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ওই বৈঠক শেষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে শুক্রবার নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করবে বিএনপি।

এর পরপরই সমাবেশের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানায় আওয়ামী লীগও। দলটির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের বলা হয়, শুক্রবার আগারগাঁও পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে ‘শান্তি সমাবেশ’ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ওই সমাবেশের আয়োজক আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী সংগঠন- যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ।

ফের একই দিনে রাজধানীতে দল দুটি সমাবেশের ডাক দেওয়ায় রাজধানীজুড়ে থাকা চাপা আতঙ্ক সংঘাতের শঙ্কায় রূপ নেয়। ফের ছড়িয়ে পড়ে উৎকন্ঠা।

এর আগে আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠনের সমাবেশের স্থান নিয়ে গতকাল দিনভর টানাপোড়েন চলেছে। যদিও কর্মসূচি ঘোষণার শুরুতেই সমাবেশের স্থান হিসেবে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিম গেট নির্ধারণ করা হয়েছিল। সে অনুযায়ী প্রশাসন থেকে মৌখিক অনুমোদনও নেওয়া হয়েছিল। পরে সমাবেশে আগত কয়েক লাখ নেতাকর্মীর স্থান সংকুলানের প্রয়োজনে বায়তুল মোকাররমের পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিলেন আয়োজক সংগঠনের নেতারা। গত মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি লিখিত আবেদনপত্র ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে দেওয়া হয়। একইদিন বিএনপির পক্ষ থেকেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল।

এই অবস্থায় বুধবার দুপুরে ডিএমপি থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কোনো পক্ষেরই সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এ বিষয়ে হাইকোর্টের বিশেষ নির্দেশনার কথাও জানানো হয়। এরপর বায়তুল মোকারমের দক্ষিণ-পশ্চিম গেটে সমাবেশের জন্য মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করে তিন সংগঠন। কিন্তু বিকালেই কর্মব্যস্ত দিনে রাস্তায় জমায়েত করা যাবে না- এমন কারণ দেখিয়ে সেখানেও সমাবেশ করতে নিষেধ করা হয়। ফলে এ নিয়ে আরেক দফা জটিলতা দেখা দেয়।

বুধবার রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে দলের তিন সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ। কিন্তু এই মাঠে সমাবেশ করতে হলে মঞ্চ তৈরিসহ প্রাসঙ্গিক প্রস্তুতির জন্য দুদিন সময়ের প্রয়োজন। এজন্য সমাবেশটি পিছিয়ে শুক্রবার নির্ধারণ করা হয়েছে। বেলা আড়াইটায় এই সমাবেশ হবে।’

এই সমাবেশে অংশ নেওয়ার জন্য সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

অন্যদিকে গতকাল রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমাবেশ এক দিন পিছিয়ে শুক্রবার দুপুর ২টায় করার ঘোষণা দেন। রাজধানীর নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবেন বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে শুক্রবার বেলা ২টায় নয়াপল্টনে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশের ঘোষণা দিচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বরলেন, ‘আশা করি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলমান গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে কোনো প্রতিষ্ঠান বাধার সৃষ্টি করবে না। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে যে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা দেশবাসী মেনে নেবে না। এমন অপচেষ্টার সঙ্গে নিয়োজিতরা গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা সৃষ্টিকারী হিসেবেই বিবেচিত হবেন। সংশ্লিষ্ট সকলকে বিশেষ করে পুলিশসহ ডিএমপিকে শুক্রবার এই শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ সফল করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাই। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যরকম