॥ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ॥
খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর ২০১৫
অস্থিরতার ঘটনা ঘটছে এবং বাড়ছে। ঘটনাগুলো ঘটছে বিভিন্ন জায়গায়। আপাত বিচ্ছিন্ন মনে হলেও ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্ন নয়। একটির সঙ্গে আরেকটির যোগসূত্র রয়েছে। মূল যোগসূত্রটি নিরাপত্তাহীনতা, অস্থিরতা, বিশৃঙ্খলা। দেখতে হবে, এসব ঘটলে কার লাভ, কাদের লাভ, কারা সুবিধা পাবে এখান থেকে। বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসাবে চিহ্নিত করার, প্রমাণ করার চেষ্টা আজকে নতুন নয়, অনেকদিন ধরেই। আমেরিকা অনেক দিন ধরেই চায় বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বিস্তার যত প্রমাণ করা যাবে, ততই সুবিধা হবে তাদের। ততই সহজ হবে তাদের অনুপ্রবেশ ও আধিপত্য বিস্তার অন্য দেশে। আমেরিকার এই চাওয়া শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, সাম্রাজ্য বিস্তার করতে চাওয়া সকল দেশের জন্যই প্রযোজ্য। ভারতও চায় বাংলাদেশে জঙ্গি আছে, বাংলাদেশ জঙ্গি রাষ্ট্রের পথে এমনটা প্রমাণ করতে। ভারতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নেই। উদার, অসম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক বলা হলেও সেখানে হিন্দুত্ববাদের প্রচার, অস্বীকার করার উপায় নেই। তাদের এই হিন্দুত্ববাদ জঙ্গিবাদকে উসকে দিচ্ছে। ধর্মীয় উš§াদনা যদি ভারতে হয়, তবে এখানেও তার প্রভাব পড়া স্বাভাবিক।সমাজে নানান ধরনের অপ্রাপ্তি রয়েছে, হতাশা রয়েছে, না পাওয়া রয়েছে। দারিদ্র্য, বঞ্চিত মানুষদের ধর্মের কথা বলে উগ্রবাদী পথে নিয়ে যাওয়া সহজ। এই উগ্রতাকে তারা তখন তাদের একধরনের প্রকাশ ভঙ্গি হিসাবে মনে করে। অন্যেরা তাতে সুবিধা নেয়। এই উগ্রবাদীদের বিক্ষোভ মানুষের বিরুদ্ধে নয়, মূলত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। তাদের নানা ধরনের অপ্রাপ্তি, ক্ষোভ প্রকাশের কোনো গণতান্ত্রিক পরিসর নেই। তারা তখন নানা ধরনের নাশকতার উপলক্ষ্য খোঁজে। তাদেরকে ব্যবহার করে অন্যেরা, সুবিধাভোগীরা। এক দিকে দারিদ্র্য, মাদ্রাসা শিক্ষা অন্যদিকে বাইরের উসকানি ও প্ররোচনা, জঙ্গি বানানোর চেষ্টা সব মিলিয়ে বেড়ে যায় অস্থিরতা। দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে সাধারণ মানুষ। ব্যবস্থার পরিবর্তন যতদিন না হবে, অবস্থার পরিবর্তন হবে না কোনোদিন।