Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ বুধবার, ৭ অক্টোবর ২০১৫
27বর্তমানে বাংলাদেশের কাছে যে পরিমাণ ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রয়েছে তা ব্যবহার করার সুযোগ নেই। আর এ উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইথ বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা হলেও এতে বাংলাদেশই মূলত লাভবান হবে। ডাক, টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, দেশের বিশেষজ্ঞরা না জেনেই এ নিয়ে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছেন। অবস্থাদৃষ্টে কমমূল্যে ব্যান্ডউইথ বিক্রির কথা বলা হলেও অভ্যন্তরীণ বাজার মূল্যের সঙ্গে এর বিপণন খরচ ধরলে যে টাকা থাকে তার দ্বিগুণ মূল্যেই এ ব্যান্ডইউথ বিক্রি করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে অভ্যন্তরীণ বাজারে ১ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ বিক্রির সর্বো”চ মূল্য ৬২৫ টাকা হলেও এর পেছনে নেটওয়ার্কিং ও বিপণন খরচসহ প্রায় ৪৩৫ টাকা খরচ হয়। যাতে সর্বো”চ ১৯০ টাকা লাভ থাকে। সমপরিমাণ ব্যান্ডউইথ বিক্রি করা হচ্ছে প্রায় ৪শ টাকা মূল্যে। যার পেছনে সরকারের কোনো খরচ নেই। বাংলাদেশের অব্যবহƒত ব্যান্ডউইথ রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ভারত, ইতালিসহ বেশকটি দেশে। আলোচনা চলছে নেপাল ও ভুটানেও ব্যান্ডউইথ রপ্তানির। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ভারতে ব্যান্ডউইথ রপ্তানি শুরু হতে পারে। বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভারতে প্রথমে ১০ গিগাবাইট পার সেকেন্ড (জিবিপিএস) ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করা হবে। পরে তা ৪০ জিবিপিএস পর্যন্ত উন্নীত করা হবে। এ জন্য ফ্রান্স থেকে ৫ গিগা এবং সিঙ্গাপুর থেকে ৫ গিগাসহ ১০ গিগা ব্যান্ডউইথ নিয়ে প্র¯‘ত হয়ে আছে বিএসসিসিএল। তবে ভারত এখনও পুরোপুরিভাবে প্র¯‘ত না হওয়ায় ব্যান্ডউইথ রপ্তানিতে দেরি হচ্ছে। সম্প্রতি ভারত অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি দামে ব্যান্ডউইথ কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। বিটিসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যান্ডউইথ রপ্তানির বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ ভারতীয় প্রতিষ্ঠান বিএসএনএল সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের অনুমোদনও পেয়েছে। বিএসএনএল আখাউড়া সীমান্ত থেকে থেকে ২০০ ফুট দূরত্বে ল্যান্ডিং পয়েন্ট তৈরি করছে। বাংলাদেশ ওই পয়েন্টে আমরা ব্যান্ডউইথ পৌঁছে দেব। প্রসঙ্গত ৩ বছরের চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশে অব্যবহƒত ব্যান্ডউইথ রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছে। সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের বর্তমান সক্ষমতা ২০০ গিগা। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদ সবমিলিয়ে দেশে ৯০ গিগা ব্যান্ডউইথের চাহিদা তৈরি হতে পারে। সে সময়ও বাংলাদেশে ১১০ গিগা ব্যান্ডউইডথ উদ্বৃত্ত থাকবে। ২০২১ শেষে তাতে আরও প্রায় ১০০০ জিবিপিএস যুক্ত হবে। সে সময়ে বাংলাদেশের চাহিদা হয়ত সর্বো”চ ৬০০ জিবিপিএস-এ উত্তীর্ণ হতে পারে। অর্থাৎ অর্ধেকই অব্যবহƒত থাকবে। এ পরিস্থিতিতে ব্যান্ডউইথ বিক্রি না করে উপায় নেই। এদিকে, ভারতে প্রতি মেগা ব্যান্ডউইথের রপ্তানি মূল্য ধরা হয়েছে ১০ ডলার। এতে বছরে বাংলাদেশের ৯ কোটি টাকারও বেশি আয় হবে। তবে এরও কমদামে ইতালিতে ব্যান্ডউইথ বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর এ নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাত্র একটি পেপারওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ রপ্তানি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এরজন্য কোনো অর্থ ব্যয় হবে না। প্রসঙ্গত ইতালির স্পার্কেলস (টিআইএস) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৯.৭৭ কোটি টাকার চুক্তি করতে যাচ্ছে বিএসসিসিএল। কম দামে ইতালিতে ব্যান্ডউইথ রপ্তানির বিষয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, এখানে বোঝার ভুল রয়েছে। অনেকে ভারতের দামের সঙ্গে ইতালির দামের মধ্যে পার্থক্য করছেন। যদিও এটা একেবারেই অনুচিত। কারণ, ভারতে ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করতে গেলে আমাকে বিদেশের ব্যাকহল চার্জ, আইপি ট্রানজিট, পোর্ট চার্জ, ওয়েট সেগমেন্ট চার্জ, ইন্টারকানেকশন কানেক্টিভিটি চার্জ ও দেশি ব্যাকহলসহ ৬টি কম্পোনেন্ট ব্যবহার করতে হয়। সেসবের ভাড়াও দিতে হয়। ফলে ভারতে ব্যান্ডউইথ রপ্তানির ক্ষেত্রে এসব ব্যয় হয় বলে ভারতের কাছ থেকে আমরা যে টাকা পাব, তা ইতালির কাছ থেকে পাব না। তিনি বলেন, ইতালি ব্যান্ডউইথ নেবে সমুদ্র থেকে। কেবল একটা পেপার ওয়ার্ক করতে হবে। ওরা সি-মি-উই-৪ কনসোর্টিয়াম থেকে ইতালি ব্যান্ডউইথ নিয়ে নেবে। তিনি জানান, আমরা ইতালির কাছ থেকে ব্যান্ডউইথ রপ্তানির অপারেশন অ্যান্ড মেনটেন্স বাবদ বছরে পাব ৩০ লাখ টাকা। ১৫ বছরে পাব সাড়ে ৪ কোটি টাকা। ফলে এ খাত থেকে আমাদের সব মিলিয়ে আয় হবে প্রায় ১৪ কোটি টাকার মতো।