Tue. Sep 16th, 2025
Advertisements

খোলা বাজার২৪ বুধবার, ৭ অক্টোবর ২০১৫
91পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের খাসের হাওলা গ্রামের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে তিন মাস ধরে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে তাঁর পরিবার। পরিবারের দাবি, জিনের আসর হওয়ায় ইউনিয়নের একটি মাদ্রাসার ফাজিল প্রথম বর্ষের এই শিক্ষার্থীকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। আজ বুধবার ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁকে ঘরের সামনের পুকুর পাড়ের একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। পাশেই তাঁর মা ও দূরে বড় বোন দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এভাবে তিন মাস ধরে তাঁকে কখনো বাড়ির আঙিনায় গাছের সঙ্গে, কখনো ঘরের খুঁটির সঙ্গে আবার কখনো শোয়ার খাটের সঙ্গে বেঁধে রাখা হচ্ছে। এ সময় ওই শিক্ষার্থীর মা বলেন, একই মাদ্রাসার এক ছাত্রের সঙ্গে তিন বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক হয় ওই শিক্ষার্থীর। ২০১৪ সালে ফাজিল প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পর ওই ছেলের কাছে পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। তখন ছেলেটি তাঁদের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে যা ওই দেওয়ার সামর্থ্য তাঁদের ছিল না। এ কারণে বিয়ে আর হয়নি। এতে ওই শিক্ষার্থী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। একপর্যায়ে তাঁর ওপর জিনের আছর হয় এবং তিনি এদিক-সেদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। এ কারণেই তাঁকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। মা বলেন, ‘বাপহারা মাইয়া আমার। তিগিতসা (চিকিৎসা) করানোর টাহা নাই। হেইয়ার পরও ধার-দেনা ও কিছু জমি বেইচা ডাক্তার দেহাইছি। ভালোই ছিল। এক মাস আগে কবিরাজ দেহানোর পর অর (শিক্ষার্থীর) অবস্থা আরও খারাপ হইছে।’ কিন্তু এ সময় ওই শিক্ষার্থী শুদ্ধ বাংলায় বলেন, ‘আমি সুস্থ। এরপরও আমাকে আটকে রাখা হয়েছে।’ ওই শিক্ষার্থীর এক সহপাঠী বলেন, ‘অভাবের কারণে ওর চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না। জিনের আছরের অজুহাতে শিকলে বাঁধা পড়েছে ওর জীবন। মূলত গ্রাম্য কবিরাজের ভুল চিকিৎসার কারণেই ওর এই অবস্থা।’ বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা এ এস এম সায়েম বলেন, ‘মানসিক আঘাতের কারণে এমনটা হতে পারে। আটকে না রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও সেবা দেওয়া হলে এই ধরনের রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব।