খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ৯ অক্টোবর ২০১৫ : মহাকাশের গভীরের অজানা জ্ঞান লাভ ও মহাকাশ শিক্ষায় সমগ্র বিশ্বের শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টিকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ ২০১৫। প্রতিবছর ৪ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সারাবিশ্বে বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ পালিত হয়। মানবকল্যাণের লক্ষ্যে মহাকাশ গবেষণা ও প্রযুক্তির প্রয়োগকে মাথায় রেখে ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ উদযাপনের ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে আজ অবধি বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে প্রতিবছর ১৪০০টি বিভিন্ন ইভেন্টে মহাকাশ সপ্তাহ উদযাপিত হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে র্যালি, মহাকাশ বিষয় প্রতিযোগিতা, আলোচনা, কর্মশালা, পানিরকেট উৎক্ষেপণ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। সারাবিশ্বের বিভিন্ন দেশের মহাকাশ সপ্তাহ উদযাপন সম্পর্কিত আয়োজনের সমন্বয় করে ‘ওয়ার্ল্ড স্পেস উইক’ প্রতিষ্ঠানটি। যাত্রার শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রকাশ করে যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে মহাকাশ গবেষণায় উৎসাহ সৃষ্টির লক্ষ্যে এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ ও ২০০৭ সালে সারাবিশ্বের মেধাবী কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে মহাশূণ্যে প্রেরণ করে। ২০০৬ সালে নাইজেরিয়ার এক শিক্ষার্থীকে মহাশূন্যে পাঠানোর পর সারাবিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড স্পেস উইক মহাশূন্য ভ্রমণের জন্য সমগ্র বিশ্বের অতি মেধাবীদের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের আবেদন করে। মোট আট লাখ প্রতিযোগীর মধ্যে থেকে চূড়ান্তভাবে ৪ জন মহাশূন্যে ভ্রমণের জন্য নির্বাচিত হয়। চেক রিপাবলিক, কলম্বিয়া ও থাইল্যান্ডের তিন শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার পান্টি ডিগ্রি কলেজের এক কলেজশিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়। এটিই হল কোনো প্রথম বাঙালীর মহাশূন্য ভ্রমণে সুযোগ পাওয়া। অবশ্য ভিসা জটিলতার কারণে বাংলাদেশের প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করতে পারেনি। পরবর্তী সময়ে তিনজন বিজয়ীর সাথে কর্তৃপক্ষের বিশেষ বিবেচনায় আরও ছয়জনকে মহাশূন্যে ওজনহীনতা অনুভবের জন্য বিশেষ বিমানে প্রেরণ করা হয়। বিশ্বব্যাপী মহাকাশ গবেষণা ও মহাকাশ সম্পর্কিত জ্ঞানসমৃদ্ধ করতে প্রতিষ্ঠানটির কয়েকটি উল্লেখযোগ্য লক্ষ্য হল :
১) মহাকাশ সম্পর্কিত দূরশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণের তথ্যাদি সরবরাহ করা।
২) মহাকাশ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মানবসভ্যতার জন্য কতটা উপকারী তা মানুষকে জানানো।
৩) টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে মহাকাশের ব্যাপক ব্যবহারে উৎসাহিত করা।
৪) মহাকাশ গবেষণায় মানুষের সামর্থ্য প্রদর্শন করা।
৫) তরুণ প্রজন্মকে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশলবিদ্যা ও গণিতের প্রতি উৎসাহ বৃদ্ধি করা।
৬) মহাকাশ গবেষণা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
এক কথায় মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলাই এর প্রধান লক্ষ্য। এ বছর সারাবিশ্বেই বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ উদযাপিত হচ্ছে। প্রতিবারের ন্যায় বাংলাদেশে বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ উদযাপন করছে বাংলাদেশ এ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এফ আর সরকারের সমন্বয়ে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে আগামী ৭ অক্টোবর র্যালি, অলোচনাসভা, মহাকাশ সম্পর্কিত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উদযাপিত হবে বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ ২০১৫। উল্লেখ্য, ২০০৩ সাল থেকে প্রতিবছর সংগঠনটি নতুন প্রজন্মের মাঝে মহাকাশ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ উদযাপন করে আসছে।
এছাড়া সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম-সাস্ট এর আয়োজনে পুরো সপ্তাহ ব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ ২০১৫।