খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ৯ অক্টোবর ২০১৫ সৌর পরিবারের দূরতম সদস্য প্লুটোর প্রথম রঙিন ছবি পেয়েছে নাসা, যাতে দেখা গেছে এর আকাশও অনেকটা পৃথিবীর মতোই নীলাভ। শুধু তাই নয়, নভোযান নিউ হরাইজনের পাঠানো ছবিতে বামন গ্রহটির উপরিভাগের কয়েকটি স্থানে জমাট পানি বা বরফখ- দেখতে পাওয়ার কথাও বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। গোলাপি আকাশের গ্রহ মঙ্গলে প্রবহমান পানির অস্তিত্বের ইঙ্গিত মেলার সপ্তাহ গড়াতেই প্লুটোর এই রহস্যভেদের কথা জানালেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। এর আগে প্লুটোর যত ছবি এসেছিল পৃথিবীতে, তার সবই ছিল সাদা-কালো। তাতে প্লুটোর ১৩০ কিলোমিটার উপরে হালকা স্তর ধরা পড়লেও তার রঙ বোঝার উপায় ছিল না। গত ১৪ জুলাই থেকে পাঠানো রঙিন ছবিতে ধরা পড়ে এই রঙটি নীল। ওই ছবি পাওয়ার পর তথ্য বিশ্লেষণে বসেন নাসার বিজ্ঞানীরা, বৃহস্পতিবার তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন। “কে আশা করছিল, কেইপার বেল্টে (সৌরম-লের নেপচুন গ্রহ পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল) নীল আকাশ দেখা যাবে? এটা সত্যিই অনিন্দ্য সুন্দর,” বলেন অ্যালান স্টার্ন; যিনি নিউ হরাইজনের প্রধান গবেষক। প্লুটোর নীলাভ আকাশের বিষয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওই স্তরটিকে সূর্যের আলো বিকীর্ণ হয়ে এই রঙের সৃষ্টি করেছে। প্লুটোর বায়ুম-লে পৃথিবীর মতোই নাইট্রোজেন প্রধান বায়ুম-ল রয়েছে। তবে মিথেনের উপস্থিতিতে সূর্যালোকের অতি বেগুনি রশ্মির সঙ্গে বিক্রিয়ায় এটি কনার মতো কুয়াশার চাদর তৈরি করতে পারে। “এই নীলাভ স্তর আমাদের কুয়াশার সেই চাদরের আকার এবং গঠনের কথা বলবে,” বলেন নিউ হরাইজনের ‘টিম মেম্বার’ কার্লে হোয়েট। তিনি বিবিসিকে বলেন, প্লুটো থেকে সরাসরি যদি উপরে তাকানো হয়, তবে বায়ুম-লের কারণে আকাশ কালোই দেখাবে। তবে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় তা দেখাবে নীল। প্লুটোর প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ উপরিভাগের অনেক স্থানে জমাট পানির স্তরও বেশ কৌতূহলী করে তুলেছে বিজ্ঞানীদের। গবেষকরা বলছেন, এটা জানতে হবে, কেন কিছু স্থানে বরফ রয়েছে। “আমরা প্লুটোতে বরফ প্রত্যাশা করছিলাম। অনেক দিন ধরে তার খুঁজছিলামও, কিন্তু এর আগে তার কোনো নমুনা পাইনি,” টুইট করেছেন গবেষক অ্যালেক্স পার্কার। পৃথিবী থেকে ৫০০ কোটি দূরত্ব অতিক্রম করে প্লুটোর ছবি নিচ্ছে নিউ হরাইজন। ২০১৬ সাল নাগাদ আরও স্পষ্ট তথ্য সেখান থেকে আসবে বলে আশায় আছেন বিজ্ঞানীরা।