Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

58খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০১৫ : ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় দিবস হিসেবে ১৬ ডিসেম্বর একটি ঐতিহাসিক দিন। দিনটিকে আরও স্মরণীয় করতে ওই দিনই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শেষ করতে দ্রুত কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা। সব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকেও যথাসময়ে কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ইতিমধ্যে মহাকাশে অরবিটাল সøট কেনা হয়েছে। স্যাটেলাইট তৈরির টেন্ডার জমা নেওয়া হয়েছে। দরপত্র মূল্যায়নের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কানাডা ও ফ্রান্সের চারটি কোম্পানি দরপত্রে অংশ নিয়েছে। গাজীপুর ও চট্টগ্রামে দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণের কাজও এগিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, সাধারণত রকেটের মাধ্যমে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানো হয়। অনেক সময় রকেট উৎক্ষেপণের আগে ও পরে কিংবা অন্য যে কোনো কারণে এতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না বাংলাদেশ। বিকল্প হিসেবে আরও একটি অতিরিক্ত রকেট মজুদ রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। একটি ব্যর্থ হলে আরেকটি উৎক্ষেপণ করা হবে।
এদিকে এ প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের জন্য অরবিটাল সøট ইজারা নিতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে চুক্তি করেছে। চুক্তির আওতায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্থাপনে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অরবিটাল সøটের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারস্পুটনিক ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব স্পেস কমিউনিকেশনসকে দুই কোটি ৮০ লাখ টাকা দিয়েছে বিটিআরসি। দুই হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের কাজ ২০১৭ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
দরপত্রের আওতায় স্পেস সিগমেন্ট, লঞ্চ সার্ভিস, গ্রাউন্ড সিগমেন্ট ও উৎক্ষেপণের এক বছর পর্যন্ত বীমা সুবিধা রাখা হয়েছে। প্রকল্পের ৪০ শতাংশ টাকা বাংলাদেশ সরকার বহন করবে। বাকি ৬০ শতাংশ টাকা যে প্রতিষ্ঠান কাজ পাবে তাদের খরচ করতে হবে। পরবর্তী সময়ে তারা স্যাটেলাইট থেকে আয় করা টাকা থেকে কিস্তি হিসেবে তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত নেবে। বর্তমানে মহাকাশের বিভিন্ন রেখায় স্থাপন করা ৬৯টি দেশের শতাধিক স্যাটেলাইট যোগাযোগ ও সম্প্রচার এবং গোয়েন্দাগিরির কাজ করে যাচ্ছে। নিজেদের স্যাটেলাইট না থাকায় বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বিদেশি পাঁচটি স্যাটেলাইট ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিশ্বের ৪৫টি দেশের মহাকাশে নিজস্ব স্পেস রয়েছে। তাদের আকাশে অন্য কোনো দেশের স্যাটেলাইট নেই। ৫০টি দেশ অন্য দেশের সহযোগিতায় স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে। ১১টি দেশ নিজস্ব ব্যয়ে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। এসব দেশের শতাধিক স্যাটেলাইট বিষুবরেখা, মেরুবিন্দু বা ক্রান্তীয় অঞ্চল অথবা বিভিন্ন কৌণিক পথে পরিভ্রমণ করছে। যোগাযোগ মাধ্যমের স্যাটেলাইটগুলো সাধারণ বিষুবরেখার ওপর স্থাপন করা হয়। কক্ষপথের এই স্থানে স্যাটেলাইট স্থাপন করলে পরিচালন ব্যয় অনেক কম হয়।
তাই উন্নত দেশগুলো এই কক্ষে একটার পর একটা যোগাযোগ স্যাটেলাইট পাঠিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটি ওই অংশের ওপর দিয়েই উৎক্ষেপিত হবে।
জানা গেছে, মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ কাজ সবচেয়ে সহজলভ্য হয়ে যায়। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বেশির ভাগ টেলিভিশন চ্যানেল তাদের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে থাকে। এ ছাড়া ইন্টারনেট সংযোগ, টেলিফোন সংযোগ, উড়ন্ত বিমানে নেটওয়ার্ক প্রদান, দুর্গম এলাকায় নেটওয়ার্ক প্রদান, জিপিএস সংযোগসহ বিভিন্ন কাজে কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট ব্যবহৃত হয়।