Mon. Sep 15th, 2025
Advertisements

খোলা বাজার২৪, রবিবার , ১৮ অক্টোবর ২০১৫ : অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে কয়েকটি বাসের 62চালককে জরিমানা ও সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে সকাল থেকে শুরু করা অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে শ্রমিকরা। তবে গণপরিবহন সংকটের কারণে রাস্তায় অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে যাত্রীদের। তবে গণপরিবহন সংকটের কারণে রাস্তায় অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে যাত্রীদের। রোববার বিকাল ৫টার পর অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। তিনি বলেন, “সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ও বি আরটিএর চেয়ারম্যানের আশ্বাসে চালক ও শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহর করে নিয়েছে। আমাদের দাবি ছিল, যখন-তখন জেল না দিয়ে অন্য কোন ব্যবস্থা যাতে চালকদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়।” এর আগে সকালে মিরপুরের তালতলায় বি আরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত এক চালককে এক মাসের জেল দেয়। সেটাকে কেন্দ্র করে চালকরা রাজধানীতে বাস বন্ধ করে দেয় এবং বেশ কিছু শ্রমিক মিরপুর-১০ নম্বর, পূরবীতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। হঠাৎ গণপরিবহন বন্ধ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় মিরপুর-আজিমপুর-গুলিস্তান-মতিঝিল, গাবতলী-উত্তরা-আজিমপুর, গাবতলী-গুলশান-বাড্ডা রুটসহ মিরপুর ১১ নম্বর হয়ে চলাচলরত বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, সকাল সাড়ে ১০টায় তালতলার কাছে বি আরটিএ এর একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত এক গাড়ি চালককে এক মাসের সাজা দেন। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন রুটের চালকরা ডিপোতে তাদের বাস ফিরিয়ে নিয়ে যায়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমের প্রতিবাদে গণপরিবহনের এ ধরনের ধর্মঘটকে মালিক-শ্রমিকদের দৌরাত্ম্যের প্রমাণ বলে আখ্যায়িত করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধরী। নৈরাজ্য থামাতে নিয়মিত এ ধরনের কার্যক্রম চালান প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। “আইন সব সময় চালু রাখা গেলে আজকের এই অবস্থার সৃষ্টি হত না। ভ্রাম্যমাণ আদালত সব সময় চালু রাখতে হবে। আইন কখনো শিথিল, কখনও প্রয়োগ করা হলে এ রকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হয়।” বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “অতীতেও দেখা গেছে সরকার ও মালিকপক্ষ মিলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে যাত্রীরা ভুক্তভোগী হয়েছে। এবারও তাই হয়েছে। এমনিতে যে ভাড়া ছিল তাও বেশি ছিল। এর মধ্যে নতুন করে ভাড়া বৃদ্ধি জনজীবনে দুর্ভোগ নিয়ে এসেছে।” বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারেরও দাবি জানান মোজাম্মেল হক। মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর এলাকায় স্বল্প পরিসরে দুয়েকটি বাস ও লেগুনা চলাচল করতে দেখা গেছে। বাসের অভাবে সেখানে ফুট ওভারব্রিজের উপর এবং আশেপাশে অন্তত কয়েক হাজার মানুষকে অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়। অবরোধের কারণে স্টেডিয়াম ও এশিয়া সিনেমা হলের সামনে রাস্তার পাশে আলিফ পরিবহন, আকিক পরিবহন ও রবরব পরিবহনের শতাধিক বাস থামিয়ে রাখা হয়েছে। একই চিত্র দেখা গেছে গুলিস্তান, শাহবাগ, বাংলামটর, ফার্মগেইট এলাকায়ও। বাসের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পথের যাত্রীদের। গুলিস্তানে বাসের জন্য অপেক্ষারত নারায়ণগঞ্জের খলিকুর রহমান জানান, তিনি দুই ঘণ্টা ধরে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। তবে কোনো বাস না থাকায় কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। মুন্সিগঞ্জে যাওয়ার বাস না পেয়ে দুই মেয়ে আর এক ছেলেকে নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন সখিনা বেগম। তিনি বলেন, “বেশ কয়েক ঘণ্টা বসে আছি, গাড়ি পাচ্ছি না। আদৌ পাব কীনা বুঝতে পারছি না।” গুলিস্তানে বাস বন্ধ থাকার কারণ জানতে চাওয়া হলে সিটি বন্ধন পরিবহনের টিকেট বিক্রেতা হেমায়েতুল্লাহ বলেন, “মালিকের নির্দেশে বাস বন্ধ আছে। ছাড়তে না বলা পর্যন্ত বাস চলবে না।” সকাল ১১টার পর থেকে গুলিস্তান থেকে ঢাকার ভেতরে এবং আশপাশের জেলাগুলোতে কোনো বাস চলেনি বলেও জানান তিনি। গুলিস্তানে রাস্তার দুই পাশে কয়েক হাজার যাত্রীকে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখেছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক শহীদুল ইসলাম।