Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০১৫:horin..........................বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বৈধ বা অবৈধ হোক ; প্রধানমন্ত্রী আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বৈধ বা অবৈধতার প্রশ্ন এসেছে কারন, ২০১৪ সালের ০৫ জানুয়ারী নির্বাচনের কথা মিডিয়ার কল্যানে সবারই জানা। এই নির্বাচনে ১৫৩ প্রার্থী বিনা প্রতিযোগিতায় বিনা ভোটে নির্বাচিত। যাদের ভোটের জন্য জনগনের কাছে যেতে হয় নি। বাকী ১৪৭ আসনে নামকাওয়াস্তে নিজেরা-নিজেরা প্রার্থী হয়ে , এমনকি না বালকদের দ্বারাও একাধিকবার ভোট দিয়ে নিয়ে (অনেক কেন্দ্রে ভোটই পরে নি কুকুর বসে থাকতে দেখা গিয়েছে) নির্বাচিত হয়েছে সংসদ সদস্য-যেখানে ০৫% ভোট পরেছে। এই নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হয় নি বলে, এক জরিপে প্রকাশিত ৯০% জনসমর্থিত দল বিএনপি-অংশগ্রহন করেন নি। জাতীয় পার্টি’র চেয়ারম্যান এরশাদও অসুস্ত্যতার দোহায়ে অনেকটা গুম অবস্থায় ছিলেন। পুরো দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল বিচ্ছিন্ন। কোনো বিদেশী পর্যবেক্ষনকারী বা পর্যবেক্ষন সংস্থাও আসেনি ঐ নির্বাচন পর্যবেক্ষন করতে। এমনি অবরুদ্ধ, শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশের মাধ্যমে…………………………………….এমনি অসংখ্য অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে কলঙ্কময় হয়ে আজ তারা (অওয়ামী জোট) ক্ষমতায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যাই হোক, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃস্ট ঝুকি হ্রাস এবং পরিবেশ সুরক্ষার জন্য জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ে পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দি র্আথ’ প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বছর (২০১৫-তে) পান। পরিবেশ বিষয়ে এ পুরস্কার জাতিসংঘ চালু করে ২০০৫ সাল থেকে এবং প্রতি বছর ০৫ (পাঁচ) জনকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।এ বারেও এ পুরস্কার আরো চার জন পান। উদ্যোক্তা দুরদৃস্টির জন্য নাটুরা বারসিল ও পল পলম্যান, বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনের জন্য দি ন্যাশনাল জিওগ্রাফি সোসাইটি, উৎসাহ ও উদ্যোগের জন্য ব্লাক মাসবা আপু। এ পুরস্কার প্রবর্তন হওয়ার পর বাংলাদেশে প্রথম পান ২০০৮ সালে পরিবেশবিদ ড. আতিক রহমান, পরে আরো বাংলাদেশী পান। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কার পাওয়ার পর সংবর্ধনা, পেপার-পত্রিকায় এ্যাডসহ যেনো চারদিকে তেলেসমাতি কান্ড হয়ে যায়। যেনো এবারই প্রথম বাংলাদেশে কেউ এ পুরস্কার পেল। অথচ বাংলাদেশে প্রথম এ গৌরব আনে পরিবেশবিদ ড. আতিক রহমান। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার নাম কেউ নিল না বা তাকে দাওয়াতই করা হয় নি, এমনকি পত্রিকাতেও তার নাম সেই ভাবে আসে নি।
যাই-হোক, পরিবেশ রক্ষায় জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রীকে যেহেতু এই পুরস্কার ুিদয়েছেন সেহেতু পরিবেশ বির্পযয়ে প্রধানমন্ত্রী কি অবদান রেখেছেন তা জানতে পারলে জাতি হিসেবে আমরা গর্ববোধ করতাম। তবে, বর্তমানে যে পরিবেশ বিদ্যামান সে সর্ম্পকে জাতি হিসেবে আমরা জানি। যেমন-একটুখানি বৃষ্টি হলেই ঢাকা শহরের রাস্তা পানিতে থৈ থৈ করে, রাস্তায় কোমর পর্যন্ত পানি, ম্যানহোলগুলো সর্বদাই খোলা থাকে ফলে পানির চেহারা যা হয় -না দেখলে তা বোঝানো যাবে না। সে পাানি আবার সহজে নেমে যায় না, ফলে অনেক সময় মেশিন দিয়ে রাস্তা থেকে পানি তুলে নিয়ে যেতে দেখা যায়। আবার ঢাকাকে ঘিরে যে খালগুলো ছিল-তা আজ ক্ষমতাসীনদের দখলের ফলে নেই বললেই চলে। কোনো কোনো জায়গায় খালগুলো আবার ড্রেনের মতো সরু হয়ে বেঁচে আছে তাও আবার ময়লা-আর্বজনার স্তুপে ভরা , ফলে পানি ঠিকমতো প্রবাহিত হতে পারে না। এদিকে ঢাকার হাজারীবাগে যে ট্যানারীগুলো আছে- সে গুলোর সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে চারদিকে র্দুগন্ধ ছড়াচ্ছে, ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। হাজারীবাগের রাস্তাগুলোয় র্দুগন্ধে চলাফেরা করাই কষ্টকর। নাক-মুখ চেপে ধরে রাস্তা চলতে হয়। তাছাড়াও ঢাকা শহরের যে ডাস্টবিন গুলো আছে,সেগুলোতে অনেকে ময়লা না ফেলে যেখানে-সেখানে ফেলে দেয় বা সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে সেখান থেকে সৃস্ট র্দুগন্ধ পরিবেশ দূষিত করছে। ঢাকা শহরে এখনও অনেক কারখানা আছে সঠিক পয়:নিস্কাশন ব্যবস্থা নেই, ফলে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের ক্রিয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ঢাকাকে ঘিরে যে নদীগুলো আছে-বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু, তুরাগ-এইসব নদীগুলোর পানি কালো কুচকুচে, একেবারে দূষিত-যা প্রতিনিয়ত পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাচ্ছে।শহরগুলোও অপরিকল্পিত নগরায়িত হচ্ছে প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার কারনে। ফলে বস্তিরও সৃস্টি হচ্ছে। আর ঢাকা শহরের বস্তিগুলোর অবস্থা আরো মারাতœক, অপরিকল্পিতভাবে বস্তিগুলো গড়ে ওঠার ফলে ঘিঞ্চি পরিবেশ বিরাজ করছে। নেই আলো-বাতাস প্রবেশের ভালো কোনো ব্যবস্থা, নেই কোনো সঠিক পয়:নিস্কাশনপ্রনালী ব্যবস্থা, নেই কোনো র্বজ্য্র অপসারনের সঠিক ব্যবস্থাপনা প্রনালী। ফলে প্রতিনিয়ত মারাতœকভাবে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এছাড়াও শহরের রাস্তাগুলো অপরিকল্পিতভাবে করা এবং সেসব রাস্তায় ফিটনেসবিহীন অসংখ্য গাড়ি-সেগুলোর কালো ধোঁয়া প্রতিটি ক্ষনে ক্ষনে পরিবেশ দূষিত করছে যা আমাদের স্বাস্থ্যবিধির অপূরনীয় ক্ষতি সাধিত করছে এবং জলবায়ুরও মারাতœক বিপর্যয় ডেকে আনছে। আজকাল পরিবেশগত কারনে সন্ধ্যার পরপরই দেখা যায় শহরের ফুটপাতগুলোতে মানুষের শুয়ে ঘুমানো-তাদের যেখানে- সেখানে মলমুত্র ত্যাগ করার ফলে র্দূগন্ধ ছড়াচ্ছে, যা পরিবেশের ক্ষতি করছে। মাইগ্রেশন পলিসি উন্নয়নকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা বুদাপেস্ট প্রসেস এর জরিপে-ঢাকা এখন সর্বোচ্চ মাত্রার ঝুকিপূর্ণ বা হাইরিস্ক সিটি।

বিশ্ববাসীদের কাছে বাংলাদেশের অন্যতম আর্কষণ সুন্দরবনেরও আজ পরিবেশ হুমকির মুখে। সুন্দরবন পরিবেশ সুরক্ষায় গুরত্বপূর্ন ভুমিকা রাখে। বর্তমান সরকারের সময়েই সুন্দরবনের অদূরে স্থাপন করা হচ্ছে ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র’। যা সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্রের জন্য মারাতœক হুমকি স্বরুপ। বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন , বাজনৈতিক দল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করলে সরকার পুলিশ-প্রশাসন দিয়ে লাঠিপেটা করছে। পরিবেশের ক্ষতি হবেই এমনটি জেনে-শুনেও সরকার না-জানি কোন অজানা কারনে বা বাহিরের কারো দ্বারা বা কোনো দেশে দ্বারা হেতু হয়ে জোর করেই বিদ্যৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে। ফলে আগামীতে বিশ্ব হেরিটেজে স্থান পাওয়া সুন্দরবনের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে প্রায়। কিন্তু সরকার সুন্দরবন রক্ষায় কোনো ভ’মিকাই নিচ্ছে না। পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে এ রকম আরো ……………………অসংখ্য উদাহরণ বর্তমানে আমাদের দেশে এই সরকারের সময়ে ঘটছে বা আছে। এই হচ্ছে অওয়ামী সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে বাংলাদেশের পরিবেশগত অবস্থা। জাতি হিসেবে আমাদের সামনে আজ এসব পরিবেশ নিত্য প্রত্যক্ষ হচ্ছে। এই যখন পরিবেশগত অবস্থা আর তখনই প্রধানমন্ত্রী প্রাপ্ত হচ্ছে পরিবেশগত পুরস্কার, যা এই পরিবেশের পেক্ষিতে …………..। জাতিসংঘ না জানি বাংলাদেশের কোন পরিবেশ দেখছে আর অমরা জনগণই বা কোন পরিবেশে নিত্য বসবাস করছি। কি বিচিত্র এই দেশ, যেনো আজব এক কারখানা। অদ্ভুত উটের পিঠে অনিয়ন্ত্রিতভাবে অমানিশার অন্ধকারে চলছে সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলা সম্ভাবনাময় এই বাংলাদেশ।