Mon. Apr 21st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

॥ কামরুল হাসান ॥
42খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ৬ নভেম্বর ২০১৫: সামপ্রতিকালের কিছু ঘটনায় বিদেশিদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ, রেডএলার্ট, ভবনে সতর্কতা ইত্যাদি বেড়েছে। সরকারের কাছে অসহায়ের মতো নিরাপত্তা চেয়ে দৌড়ঝাপ করছে দূতেরা। বিদেশি হত্যা দুঃখজনক কিন্তু পশ্চিমাদের স্বার্থপরাতাও দুঃসহ। তারা দেখছে এই দেশের মানুষ রাজনীতিবিদদের হাতে কিভাবে জিম্মি হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে পথেঘাটে কিন্তু সেসব বিবেচ্য নয়। বরং তাদের চাই নিজেদের নিরাপত্তা যেন শুধু বিদেশিদের জীবনটাই মূল্যবান। ১/১১ তো তারাই এনেছিলো। তারা চাইলে ১/১১র পর রাজনীতির পোশাক পরিবর্তন হতো কিন্তু হয়নি। পরবর্তী অবস্থা আগেরচে’ ভয়ানক। বিদেশিদের কাছে অর্থনৈতিক হিসাব নিকাশই আসল। সংসদে প্রয়োজনীয় বিরোধীদল আর বৈধ বিরোধীদলের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নয়। পশ্চিমাদের নাকের ডগায় ৫ জানুয়ারি ঘটলো এবং সর্ববৃহৎ বিরোধীদলটি বিলীন হলো। রাষ্ট্রদূতদের হস্তক্ষেপেই অবরোধ কার্যক্রমে যবনিকা টেনে খালেদার ঘরে ফিরে যাওয়া। রাষ্ট্রদূতদের তোষামোদির কারণেই লীগ সমপ্রদায়ের উন্নতির প্রপাগান্ডা। সংসদে দায়বদ্ধতা ছাড়া কিভাবে সংসদীয় গণতন্ত্র হয়, প্রশ্ন- সংসদীয় গণতন্ত্রের স্তাবকদের কাছে। মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টগুলো তাদের দেশ থেকেই আসে কিন্তু নিজেদের নিরাপত্তার জন্য যারা অসহায় শিশুর মতো কান্নাকাটি করে, ধিক্কার তাদেরকে। সামপ্রতিক অবস্থায়, বাংলাদেশে বিদেশি গুপ্তচরদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো যথেষ্ট কারণ সৃষ্টি হয়েছে।
গুলশান এলাকাটি রীতিমত পুলিশী রাষ্ট্র। এর বাইরে যা কিছু, একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান বাদে সর্বত্রই অনিরাপত্তা। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রবন্ধটি অনিরাপত্তার সচিত্র প্রতিবেদন। নেদারল্যান্ডের রাণী আসছেন সঙ্গে অস্ত্র এবং গোলাবারুদ নিয়ে। বিদেশিদের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে সরকার। দুর্ভাগা রাষ্ট্রের মানুষদের জন্য এটাই খুশির খবর, নয় কী? আর এই সুযোগে বড়ভাই, মেঝভাই, ছোটভাই খোঁজাখুঁজি চলছে, চলবে। সামপ্রতিক ঘটনায় বিদেশিদের উদ্বেগ, ক্ষোভ এবং দুঃখ প্রকাশ- লজ্জাজনক। প্রফেসর পিতার হতাশার উত্তর, ২ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে দলনেত্রীর ভাষণে।
সারমর্ম:- টুপি-দাড়ি দেখলে এই কারণেই ভয় পাই না, যারাই দুর্বত্ত ধরনের, সকলেই কারো না কারো রাডারের তলে। আমি ভয় পাই তাদেরকে, যারা ক্লিনসেভ এবং দামি স্যুট-টাই ও স্বর্ণখচিত জুতা পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যারা ৫ হাজার ডলারের অমৃত-সুগন্ধি সাবান দিয়ে গোসল করে এবং সুইস ব্যাংকে টাকা রাখে। এরা এতো বেশি ক্ষমতাশালী যে, রাজনীতিবিদদেরকে পকেটে কিনে রেখে দিনের আলোয় ড্রাগ এবং অস্ত্র ব্যবসা করে। আবার এরাই যখন আইন প্রণেতা হয়ে সংসদে বসে, তখন আরো বেশি নিরাপত্তায় একই সঙ্গে গুপ্তহত্যা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য দুটোই চালায়। ঠিক ধরেছেন, আমার ভয় এদেরকেই।
লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও কলামিস্ট