খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৫: আপনার পছন্দের যদি কোন মোটর বাইক থেকে থাকে তাহলে তার দাম কত ? অথবা আপনার জানা মতে দেশের সবচেয়ে ভারি কোন ট্রাকের দাম কত ? বিশ্বে অনেক দামি দামি জিনিসের নাম আমরা শুনেছি। কিন্তু কোন সাইকেলের দাম ৪ কোটি টাকা এমন কথা কি শুনেছেন?
বর্তমান প্রযুক্তির যুগ। কত কিছুই না আবিষ্কার হচ্ছে। তবে ছোট ছোট এমন কিছু আবিষ্কার হচ্ছে যা শুনে চোখ কপালে উঠার মত। প্যাডেল ঘুরালেই আপনাকে গুনতে হবে ৪ কোটি টাকা। ভাবছেন হয়তোবা এই সাইকেলে কোনো ইঞ্জিন আছে অথবা প্যাডেল না ঘুরিয়েই চলতে থাকবে এটা। না এমন কোন কিছুই না। অবিশ্বাস্য হলেও বিশ্বাস না করার কোন উপায় নেই।
শুনন তাহলে এই গল্পটি – এটা সাইকেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের দেয়া দাম নয়। সাইকেলটি বিক্রেতার কাছে চার কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে।
১৯৭৫ সালে উত্তর আমেরিকার ওয়াটার লও, ওয়িসকনসিন শহরে সাইকেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ট্রেক যাত্রা শুরু করে। প্রথম দিকে ৯০০টি সাইকেল তারা বানায় যার সর্বোচ্চ দাম ছিলো পনের হাজার টাকা। পরের বছরের শেষের দিকে এসে প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধিত হয়। পেন সাইকেল সর্বপ্রথম ট্রেকের ডিলার হয়। ১৯৭৭ সালে গিয়ে ট্রেকের বছরে বিক্রি হয় ১ কোটি ছাপ্পান্ন লাখ টাকার সাইকেল।
এরপর অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে আজ পৃথিবীর সবচেয়ে দামী সাইকেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ট্রেক। ১০ থেকে ১২ বর্গফুটের বিক্রয় কেন্দ্র এখন বিশাল কারখানায় রূপ নিয়েছে। হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ঠিকানা এখন ট্রেক।
২০০৯ সালে সাইকেল ডিজাইনার ডেমিয়েন হ্রাস্ট ‘ট্রেকে’র ‘বাটারফ্লাই ট্রেক মেডোন’ সাইকেলটি তৈরি করেন। যা বিশ্বে বর্তমানে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে দামি সাইকেল। লেন্স আর্মস্ট্রং নামের একজন বিখ্যাত সাইক্লিস্ট এই সাইকেল দিয়ে ‘ট্যুর দ্য ফ্রাঞ্চ’ সম্পন্ন করেছিলেন।
সাইকেলটি বর্তমানে টেক্সাসের কেটি শহরে রয়েছে। চাইলেই আপনি এই সাইকেলের দেখে আসতে পারবেন না। এজন্য আগে থেকে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।
১ নভেম্বর ২০০৯ সালে সাইকেলটিকে নিলামে তোলা হয়। উদ্দেশ্য ছিল, আর্মস্ট্রংয়ের ক্যান্সার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রচারণা এবং প্রসারের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হয়। এই নিলামেই সাইকেলটি বিক্রি করা হয় ৫ লক্ষ ডলারে।
সত্যিকার প্রজাপতির পাখা ব্যবহার করা হয়েছে এই সাইকেলটি নির্মাণে। সাইকেলটি এক কথায় অতুলনীয়। ডিজাইন, পাওয়ার, রাইডিং কোয়ালিটি এবং নির্মাণ উপাদানে ব্যবহার করা হয়েছে উন্নত প্রযুক্তি। সাইকেলটা দেখলে আপনার মনে হবে যেন কোন প্রজাপতির বাগান। সাইকেলটি মূলত রেসিংয়ের জন্যই বানানো হয়েছে। রেসিংয়েও সাইকেলটির রয়েছে দারুণ দক্ষতা। এক কথায় সাইকেলটি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সাইকেল হয়েছে নিজের যোগ্যতাতে।