Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

14খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৫ : সাইবেরিয়ার একটি গুহায় বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেলেন প্রাচীন আমলের একটি দাঁত। অনেকটা মানুষের দাঁতের মতোই। পরে পরীক্ষায় জানা গেলো, হোমিনিনায়ি প্রাণী গোত্রের শ্রেণিভুক্ত হোমিনিনের একটি দাঁত। একই গোত্রের আরেকটি প্রাণী গরিলা। এরা প্রায় একইরকম দেখতে। ধারণা করা হয়, প্রাচীন যুগে মানুষের পাশাপাশি হোমিনিন বাস করতো। ‘প্রোসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে ২০০৮ সালে একই গুহায় ছোট একটি আঙ্গুলের হাড় পাওয়া যাবে। ২০১০ সালের দিকে রাশিয়ান বিজ্ঞানীদের একটি দল আঙ্গুলের হাড়টিকেও হোমিনিনের বলে জানান।
ডেনিসোভা নামের গুহায় দাঁতটি পাওয়া গেছে বলে প্রাণীটিকে বিজ্ঞানীরা ডেনিসোভা নামেই ডাকছেন।
খুঁজে পাওয়া দাঁতটিকে নিয়ে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা জানান, ধারণা করা হতো, এই প্রাণীদের আদি পুরুষদের আগমন ঘটেছিল ৪০-৭০ লাখ বছর আগে। তবে এ ধারণা ভুল বলেই মনে হচ্ছে। এ সময়ের আরো ৬০ হাজার বছর আগেই বিচরণ করতো তারা। হোমো সেপিয়ানদের মতোই এই প্রাণীগুলো ছিল আদি পুরুষ। এরা মানুষের মতোই। এরা ডেনিসোভান কিংবা নিয়ানডারথালদের কাছাকাছি।
দাঁতটির নাম দেওয়া হয়েছে ডেনিসোভা ৮। হোমিনিনের দাঁত হিসেবে বেশ বড় আকারের এটি। এ দাঁতের শেকড় বিস্ময়করভাবে দীর্ঘ। দেখে মনে হচ্ছে, এই দাঁতটি যে প্রাণীর তার চোয়াল অনেক বড় আকৃতির ছিল।
তবে একটিমাত্র দাঁত বা হাতের আঙ্গুল দিয়ে একটি প্রাণী সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা করা কঠিন বিষয়। তাই এই ডেনিসোভান আসলে দেখতে কেমন তা সহজে পরিষ্কার নয়। এ দাঁতটি ১ লাখ ১০ হাজার বছর আগের বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এরা সম্ভবত সাইবেরিয়া অঞ্চলে বাস করতো।
ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টোর পেলিয়ানথ্রোপোলজিস্ট বেন্স ভায়োলা দাঁতটি নিয়ে গবেষণা করছেন। তার ধারণা, এই প্রাণীগুলোর দারুণ কঠিন পরিবেশে বেঁচে থাকার সামর্থ্য ছিল।
নিয়ানডারথালদের ডিএনএর বৈচিত্র্য বেশ দেখা যায় আধুনিক ইউরোপিয়ানদের ডিএনএ-তে। ভায়োলার মতে, ডেনিসোভানের ডিএনএ ইউরোপিয়ানদের অনেক বেশি কাছাকাছি। ফিজি বা পাপুয়া নিউ গিনির কাছাকাছি মেলানেসিয়ানদের ডিএনএ ডেনিসোভানের ৫ শতাংশ জিন ধারণ করছে বলে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
পুরোপুরি ধারণা পেতে এই প্রাণীর ফসিল খুঁজে পাওয়া জরুরি বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তাহলে বিলুপ্ত একটি প্রাণীর বিস্ময়কর ইতিহাস বেরিয়ে আসবে আমাদের সামনে।